ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২২ মাঘ ১৪৩১

৭৫’র হত্যাকান্ডের পর মুজিবের ডান-বাম হস্তরাই দেশ পরিচালনা করেছিল - এসএম জিলানী

আবিদুর রহমান নিপু, ফরিদপুর

প্রকাশিত: ২১:০২, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২১:১১, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

৭৫’র হত্যাকান্ডের পর মুজিবের ডান-বাম হস্তরাই দেশ পরিচালনা করেছিল - এসএম জিলানী

ছবিঃ সংগৃহীত

জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী বলেছেন, ৭১ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে গুম, খুন, রাহাজানি, ছিনতাই সহ নানা অন্যায় অপরাধ কর্মকাণ্ডে সকলের না়ভিশ্বাস উঠে গিয়েছিল। এরপর একটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছিল যেটি আমরাও কামনা করি নাই। কিন্তু ওই হত্যাকাণ্ডের পর ৭৫ সাল থেকে ৭৮ সাল পর্যন্ত কারা ক্ষমতায় ছিলো? তখন যারা বাংলাদেশ পরিচালনা করেছিল তারা ছিল শেখ মুজিবেরই ডান হস্ত-বাম হস্ত এবং শেখ মুজিবের মন্ত্রী এমপিরাই তখন বাংলাদেশ পরিচালনা করেছিল। আর তাদের শপথ করিয়েছিলেন ওই শেখ হাসিনারই উপদেষ্টা এইচটি ইমাম। 

মঙ্গলবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় শহরের অম্বিকা হলে অনুষ্ঠিত ফরিদপুর মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসএম জিলানী একথা বলেন। ফরিদপুর মহানগরের ২৭টি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে এ কর্মী সভার আয়োজন করা হয়। 
তিনি বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান আমাদের আদর্শের জনক। তিনি একজন জাতীয়তাবাদী এবং গভীর দেশপ্রেমিক মানুষ ছিলেন। যখন ২৫ মার্চ পাকিস্তানের সেনাবাহিনী রাতের আঁধারে গণহত্যা চালিয়েছিল, তখন তিনি চট্টগ্রাম থেকে বিদ্রোহ করে বলেছিলেন ‘উই রিভোল্ট’। নিজের জীবনের মায়া না করে, পরিবারের কথা না ভেবে তিনি সেদিন বিদ্রোহ করেছিলেন। এটিই হচ্ছেন জিয়াউর রহমান। আমাদের আদর্শের জনক।

এসএম জিলানী বলেন, কেনো সেদিন একজন সেনাবাহিনীর লোক হয়েও জিয়াউর রহমান সেদিন বিদ্রোহ করেছিলেন? কারণ সেদিন শেখ মুজিবুর রহমান জীবনের ভয়ে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর কাছে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পণ করেছিলেন। তখন দেশের জন্য এগিয়ে এসেছিলেন জিয়াউর রহমান। তিনি সেদিন  শুধু স্বাধীনতার ঘোষণাই দেননি। নিজে যুদ্ধ করে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি বলেন, দীর্ঘ সতেরটি বছর শেখ হাসিনা ভোটের এবং ভাতের অধিকার হরণ করেছিল। আমরা লড়াই সংগ্রাম করেছিলাম মানুষের বাক স্বাধীনতা ফিরিয়ে দেয়ার জন্য। মানুষের হারানো গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য। ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। আমরা ত্যাগ স্বীকার করেছিলাম ভোগ করার জন্য না। কিন্তু গত ১৭টি বছর সবচেয়ে বেশি ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করে়ছিলেন জিয়া পরিবার। 

বাংলাদেশের মানুষের কথা বিবেচনা করে, লাখ লাখ কর্মীর কথা চিন্তা করে তিনি সেদিন মইনদ্দিন-ফখরুদ্দিন সরকারের সাথে আপোষ করেননি।
এখন ৫ আগস্টের পরে দলে অনেক নতুনদের আগমন ঘটেছে। নতুনদের স্বাগত জানাই। কিন্তু  আন্দোলন সংগ্রাম মিছিলে ২০-২৫ জনের বেশি পাই নাই। এখন কিন্তু ৫০০ জনের বেশি এসেছেন। এই ৪৭০ জনের ভিড়ে যেন পরীক্ষিত ৩০ জন হারিয়ে না যায়। যারা আমাদের মিছিল মিটিং করতে দেয় নাই, যারা আমাদের সভা-সমাবেশে হামলা চালিয়েছিল, তারা যেন কোনভাবেই স্থান না পায় এই দলে। 

মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক সৈকত হাসানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব মাহফুজুর রহমান সবুজের সঞ্চালনায় কর্মীসভায় অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য দেন স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি ও কর্মীসভার প্রধান বক্তা ইয়াসিন আলী, যুগ্ম সস্পাদক গালিব ইমতিয়াজ নাহিদ, সহ সাধারণ সম্পাদক মোরতজা বশির আপেল, সহ সমাজকল্যাণ সম্পাদক, সহ সংস্কৃতি সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ পলাশ, এস এম আল আমীন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মোজাম্মেল হোসেন মিঠু, সদস্য সচিব শাহরিয়ার শিথীল, মহানগরের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক শিবলী সাদিক, স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা আরিফ হোসেন, নিজামুল মল্লিক, খসরু মাহমুদ, ইঞ্জিনিয়ার রিয়াজ প্রমুখ।

বক্তাগণ বলেন, তারেক রহমানের ঘোষিত ৩১ দফা নিয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকর্মীদেরকে মানুষের ঘরে ঘরে যেতে হবে। ৩১ দফা বাস্তবায়ন করতে পারলেই জনগণ আপনাদের গ্রহণ করবে। আগামী নির্বাচন অত্যন্ত কঠিন নির্বাচন হবে। আমরা পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে চাইনা। আমরা দীর্ঘ মেয়াদি সুখ চাই। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি করলে জনগণ আমাদেরও গ্রহণ করবেনা। 

ধানের শীষে ভোট দিতে হবেনা। জনগণের হৃদয় জয় করলে জনগণই আপনাদের ভোট দিবে। আমরা আওয়ামী লীগ হতে চাইনা। আমরা সাম্য এবং মানবিক সমাজের বাংলাদেশ গড়তে চাই।

আসিফ

×