বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন
বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেছেন, রাষ্ট্র সংস্কার বা মেরামত এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্র স্থায়ী, কিন্তু সরকার পরিবর্তনযোগ্য। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রদত্ত ৩১ দফার মাধ্যমে রাষ্ট্রের অস্তিত্ব ও কাঠামো স্থায়ীত্ব দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে, যা স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে জনগণের কল্যাণে যেকোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণে সক্ষম করবে। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য দেশের স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়েছে।
মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে যাত্রাবাড়ী থানা বিএনপির আয়োজনে এক কর্মশালায় তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু।
ইশরাক হোসেন বলেন, দেশে প্রথম সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করেছিলেন শেখ হাসিনা। ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছে। এরপর থেকে ভুয়া ও প্রহসনের নির্বাচন পরিচালনা করে দেড় দশক ধরে জনগণকে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে।
৩১ দফার আওতায় জাতীয় নির্বাচনে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া, একজন ব্যক্তি দুইবারের বেশি রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকতে পারবেন না, কারণ দীর্ঘসময় ক্ষমতায় থাকলে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারী মনোভাব জন্ম নেয়।
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের বিষয়েও ৩১ দফায় গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ইশরাক বলেন, সরকার দলীয় সংসদ সদস্যদের জাতীয় স্বার্থে স্বাধীনভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকতে হবে। বর্তমানে তারা ক্ষমতাসীন দলের বাইরে ভোট দিতে পারেন না, যা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।
তিনি আরও বলেন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট প্রতিষ্ঠা, নির্বাচন কমিশনের সংস্কার এবং ইভিএম (ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন) বাতিলের বিষয়েও ৩১ দফায় সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। ইভিএম সম্পর্কে তিনি বলেন, এটি মূলত ভোট চুরির মেশিন, যেখানে ভোট একজায়গায় দিলে অন্য জায়গায় চলে যায়।
ইশরাক হোসেন বলেন, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ দেশকে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ২০০ টাকার বালিশ ৩,০০০ টাকায়, ৫০০ টাকার পর্দা ৩০,০০০ টাকায় কেনা হয়েছে। ১০,০০০ কোটি টাকার প্রকল্প ৩০,০০০ কোটি টাকায় বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এই দুর্নীতির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছে এবং বিদেশে অর্থ পাচার করা হয়েছে।
তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, বিএনপি জনগণের ভোটে ক্ষমতায় এলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করবে। দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা হবে এবং পাচার হওয়া অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা হবে।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিনের সঞ্চালনায় কর্মশালায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক সালাহ উদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবী, যুগ্ম আহ্বায়ক হারুন উর রশীদ হারুন, আ.ন.ম সাইফুল ইসলাম, লিটন মাহমুদ, হাজী মনির হোসেন চেয়ারম্যান, মকবুল ইসলাম খান টিপু, ফরহাদ হোসেন, শ্রমিক দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক সুমন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক বদরুল আলম সবুজ, মহিলা দলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক রুমা আক্তার, ছাত্রদল নেতা শামীম মাহমুদ, আবদুর রহিম ভূঁইয়া প্রমুখ।
সায়মা ইসলাম