সংগৃহীত
এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার ফুয়াদ এক টকশোতে রাষ্ট্র পরিচালনা ও রাজনৈতিক বাস্তবতা নিয়ে তীব্র ভাষায় বক্তব্য রেখেছেন। তিনি বলেন, "রাষ্ট্র তো মামাবাড়ির আবদার নয়। সংসার চালানোর মতো সম্পর্ক নেগোশিয়েট করার জায়গা রাষ্ট্র নয়। রাষ্ট্র পরিচালনায় কঠোর হতে হবে, যেখানে ভালো পারফরম্যান্স না করলে শুধু একটাই সমাধান-গুড বাই।"
ব্যারিস্টার ফুয়াদ আরও বলেন, "পাঁচই আগস্ট ধরে রাখতে চাইলে চলবে না। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা চলে গেছেন, বাংলাদেশে কার্যত কোনও সরকার ছিল না। সেদিন পুলিশ বাহিনী ছিল না, রাষ্ট্রীয় প্রতিটি বাহিনী পলাতক কিংবা ডিমোরালাইজড ছিল। দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে আসলেও, সারা বিশ্বে যেভাবে গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়, বাংলাদেশে তেমন কিছু হয়নি।"
তিনি আরও বলেন, "এই বাস্তবতা ৫, ৬, ৭ ও ৮ আগস্ট পর্যন্ত চলেছে। তখন কোনও সরকারি কাঠামো কার্যকর ছিল না। পুলিশের অস্তিত্ব প্রায় শূন্যের কোটায় চলে গিয়েছিল। শেষের দিকে এসে থানা পর্যায়ে দু-তিনজন করে ফিরতে শুরু করেছিল।"
রাষ্ট্র পরিচালনায় নেগোসিয়েশনের বাস্তবতা তুলে ধরে তিনি বলেন, "একমাত্র প্রতিষ্ঠান যা সামষ্টিকভাবে ভূমিকা রাখতে পারে, সেটি হলো আর্মড ফোর্সেস। কারণ, তখন সংবিধান কার্যত অকার্যকর ছিল। পশ্চিমা দেশগুলোতে পলিটিক্যাল ক্রাইসিসে ক্যাবিনেট অফিস সক্রিয় থাকে, কিন্তু বাংলাদেশে কোনও ক্রাইসিস ম্যানেজমেন্ট ব্যবস্থা কার্যকর ছিল না। এরপর প্রধান উপদেষ্টার বিষয়টি আসে, যেখানে আর্মি ও রাজনৈতিক দলের স্টেকহোল্ডারদের পরামর্শ গ্রহণ করা হয়।"
উপদেষ্টা পরিষদের গঠন নিয়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যম থেকে ডিসাইড করেছে যে কাকে উপদেষ্টা করা যায়? অথবা আন্দোলনে কারা কারা একটু প্রেস ইন্টারভিউ দিয়েছে ,কথা বলেছে?কেউ মাইনরিটি কোটায় আসছে। কেউ নারী কোটায় আসছে। এর ফলে অনেকে যারা অভ্যুত্থানে ন্যূনতম ভূমিকা রাখেননি, তারা উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা পেয়েছেন।
তিনি কঠোর সমালোচনা করে বলেন, "এই উপদেষ্টারা নিজেদের পারফরম্যান্স প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। অযোগ্য ব্যক্তিরা রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে এসে সিদ্ধান্তহীনতা, অদক্ষতার মাধ্যমে দেশকে অচলাবস্থার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। ভালো মানুষ হওয়া আলাদা বিষয়, কিন্তু ভালো পারফর্ম করতে না পারলে রাষ্ট্র চলতে পারে না।"
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন,আমি যদি কাউকে দায়িত্ব দিয়ে দেখি তিনি কার্যকর নন, তাহলে তাকে সরিয়ে দিতে হবে। রাষ্ট্র পরিচালনা কোনও অনুভূতির বিষয় নয়, অযোগ্য ব্যক্তিকে ছয় মাস ধরে রাখার কোনও যৌক্তিকতা নেই।
তিনি বলেন, "অর্থ মন্ত্রণালয়ে নিয়োগের ক্ষেত্রে আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব, এমনকি শাশুড়ির আত্মীয়দেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে স্টক এক্সচেঞ্জ ও শেয়ারবাজার বিপর্যস্ত হয়েছে। এই জায়গাগুলোতে মনোযোগ দিতে হবে। যারা ভালো কাজ করতে পারছে না, তাদের সরে যেতে হবে। এই পরিবর্তনটাই আমরা দেখতে চাই।"
তিনি আরও বলেন, "অমুক থাকলে ভালো হতো কি না, সেটা আলোচনার বিষয় নয়। আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব নয়, কার্যকর নীতির প্রয়োজন। যারা দায়িত্বে থাকবেন, তাদের অবশ্যই যোগ্য ও দক্ষ হতে হবে, নতুবা রাষ্ট্রীয় কাঠামো ভেঙে পড়বে।"
সূত্র:https://tinyurl.com/3tauce36
আফরোজা