সংগৃহীত
বাংলাদেশের রাজনীতির চিত্র দ্রুত বদলে যাচ্ছে, আর সেই পরিবর্তনের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে আওয়ামী লীগ। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার ভারত পালিয়ে যাওয়ার পর দলটি অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক সংকটের মুখে পড়ে। সরকারের পতনের পরপরই গুম, খুন এবং জুলাই হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে শেখ হাসিনাসহ দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। অনেকে আত্মগোপনে চলে গেছেন, কেউ কেউ গোপনে দেশ ছেড়েছেন, আর যাঁরা রয়ে গেছেন, তাঁদের অনেকেই কারাবন্দি।
অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা গ্রেপ্তার হলেও দলটি রাজনীতি থেকে পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি। বরং, নিজেদের পুনর্গঠনের চেষ্টায় এখন ব্যস্ত দলটির শীর্ষ নেতারা। তবে এই পুনর্গঠনের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে নেতৃত্ব সংকট।
বিতর্কিত নন, বরং সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য এমন কাউকে দলের মুখপাত্র হিসেবে আনার বিষয়ে আলোচনা চলছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্ব ধরে রাখার চেষ্টা চলছে, তবে নতুন মুখ আসার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
দলের শীর্ষ নেতাদের অধিকাংশই এখন দেশান্তরী, বাকিরা প্রকাশ্যে আসতে চাইছেন না। রাজনৈতিক মাঠের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়লেও অনলাইনের মাধ্যমে কিছু কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।
মাঝে মাঝে শেখ হাসিনার অডিও বার্তা শোনা গেলেও, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে দলের অবস্থান দৃঢ় করতে একজন মুখপাত্রের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। দলের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমন একজনকে মুখপাত্র করা হবে যিনি বিতর্কের ঊর্ধ্বে এবং দলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে ভালোভাবে সম্পৃক্ত।
গত বৃহস্পতিবার লন্ডন থেকে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে আলাপকালে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা জানান, নতুন মুখপাত্র হিসেবে এমন কাউকে খোঁজা হচ্ছে যাঁর সঙ্গে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার পারিবারিক যোগাযোগ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এই নতুন মুখই হতে পারেন আওয়ামী লীগের সামনের কণ্ঠস্বর, যিনি শেখ হাসিনার বার্তা দলের নেতাকর্মীদের কাছে পৌঁছে দেবেন।
তবে প্রশ্ন থেকেই যায়-শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি কতটা কার্যকর থাকবে? বর্তমান বাস্তবতায় দলটি নেতা-কর্মীদের মাঠে নামানোর জন্য গত জানুয়ারিতে হরতাল ও অবরোধের মতো কর্মসূচি ঘোষণা করলেও, বাস্তবে সেই কর্মসূচিগুলোতে তেমন কোনো সাড়া দেখা যায়নি। নেতাকর্মীরা শেখ হাসিনার বাইরে কাউকে নেতৃত্বে মানতে প্রস্তুত নন, তাই আপাতত তাঁর বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য একজন মুখপাত্রের সন্ধান চলছে।
এবার আওয়ামী লীগ কি নতুন নেতৃত্বের পথে হাঁটবে, নাকি পুরনো নেতৃত্বকেই আঁকড়ে ধরে থাকবে? রাজনীতির এই অনিশ্চিত সময়ে দলটির ভবিষ্যৎ কোন পথে যাবে, সেটির উত্তর মিলবে খুব শিগগিরই।
সূত্র:https://tinyurl.com/y8ufd7c4
আফরোজা