ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১ মাঘ ১৪৩১

আর মাত্র কয়েকদিনেই বদলে যেতে পারে বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ০৮:৪৬, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

আর মাত্র কয়েকদিনেই বদলে যেতে পারে বাংলাদেশ!

সংগৃহীত

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন এক নতুন মোড় নিতে চলেছে, আর সেটা হতে পারে কয়েকদিনের মধ্যেই! ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই সব রাজনৈতিক দল মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে, যেখানে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের দাবি জোরালো হচ্ছে। তবে পরিস্থিতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের গুঞ্জন, যা বিদ্যমান শক্তির ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আনতে পারে। ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলগুলোর পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির ফলে উত্তপ্ত হতে পারে রাজপথ। সব মিলিয়ে, ফেব্রুয়ারি হতে পারে বাংলাদেশের রাজনীতির মোড় ঘোরানোর মাস!

বড় রাজনৈতিক দলগুলোর চলমান কর্মসূচি এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন দল গঠনের প্রক্রিয়া রাজনীতির ময়দানে উত্তাপ বাড়িয়ে তুলতে পারে।রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, যদি নতুন দল আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশ করে, তাহলে রাজনৈতিক অঙ্গনে এক নতুন মেরুকরণ হবে।

বিএনপি আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না দিলেও দলটির শীর্ষ নেতারা মধ্য ফেব্রুয়ারিতে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে।তবে বিএনপি এখনো আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তাদের মতে, আওয়ামী লীগ এখন রাজনীতিতে অনেকটাই গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে, এবং তাদের প্রতিহত করার জন্য আলাদা কর্মসূচি দেওয়ার প্রয়োজন নেই।

অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ বেশ আগেভাগেই তাদের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। দলটির ফেসবুক পেজে জানানো হয়েছে, নির্যাতন ও নিপীড়নের প্রতিবাদ এবং জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ১ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি লিফলেট ও প্রচারপত্র বিলি, ৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ মিছিল, ১০ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভ, ১৬ ফেব্রুয়ারি অবরোধ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি দেশব্যাপী সর্বাত্মক হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।

জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো কর্মসূচির ঘোষণা না দিলেও, তারা ইতোমধ্যে গণহত্যার বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। পাশাপাশি, তারা আওয়ামী লীগের কর্মসূচি ঠেকাতে মাঠে সক্রিয় থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

প্রধান তিন রাজনৈতিক শক্তির পাশাপাশি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক দল হবার কথা রয়েছে এই মাসে ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামাটাই বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ,বিএনপি জামায়াতের পাশাপাশি বৈষম্য বিরোধীরাও রাজপথে তাদের মোকাবেলা করবে। 

বৈষম্য বিরোধী রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে এরই মধ্যে এক ধরনের উত্তেজনা বিরাজ করছে।নয় বিএনপি অবশ্য আওয়ামী লীগের কর্মসূচিতে অতটা গুরুত্ব দিচ্ছে না। নতুন দল গঠনের বিষয়েও তাঁরা তেমন চিন্তিত নয়৷ তবে এই দল গঠনে সরকারের সংশ্লিষ্টতা আছে এমন ধারণা থেকে আপত্তি জানাচ্ছে দলটি।

 জামায়াত আনুষ্ঠানিক কোনো কর্মসূচি না দিলেও তারা শুক্রবারও জুলাই গণহত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। এর বাইরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী কর্মসূচি নিয়ে মাঠে খুবই সক্রিয় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা কর্মীরা।

তবে মধ্য ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে ঢাকাসহ সারাদেশে কর্মসূচি দেবে। ফলে বিএনপির নেতাকর্মীরা রাজপথে সক্রিয় থেকে পাড়া মহল্লায় এক ধরনের পাহারায় থাকবে। এর প্রভাব পড়বে আগামী নেতাকর্মীদের মধ্যে। তাঁরা কেউ কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামতে সাহস পাবে না বলে মনে করেন দলের নেতা কর্মীরা।

রাজনীতিতে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় এখন নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি একজোট হয়ে নতুন একটি রাজনৈতিক শক্তি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি, অর্থাৎ ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যেই নতুন দলের নাম ও আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। দলটির নেতৃত্ব কারা দেবে, সেটিই এখন সবচেয়ে আলোচিত বিষয়।

দল গঠনের সঙ্গে যুক্ত একজন সমন্বয়ক জানিয়েছেন, দলের নাম চূড়ান্তকরণ, গঠনতন্ত্র প্রণয়নসহ বিভিন্ন কাজ এখনো চলমান রয়েছে। অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের মতামত নিয়েই সবকিছু চূড়ান্ত করা হচ্ছে। প্রথমে আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হবে, পরে কাউন্সিলের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে।

গুঞ্জন রয়েছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করে নতুন দলে যোগ দিতে পারেন এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতে পারেন। যদিও এ বিষয়ে তিনি এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত জানাননি।

গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাগরিক কমিটি গঠন করা হয়, যেখানে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম নেতা নাসির উদ্দিন পাটোয়ারিকে আহ্বায়ক এবং আখতার হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়েছিল। তখন থেকেই ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আলোচনা চলছিল। এখন সেই আলোচনা বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে।

নতুন দল গঠিত হলে, তা বর্তমান রাজনীতির গতিপথ বদলে দিতে পারে। সরকারবিরোধী আন্দোলনগুলো একত্রিত হয়ে নতুন শক্তি হয়ে উঠতে পারে, যা আওয়ামী লীগের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। বিএনপি যদিও নতুন দল গঠনে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে না, তবে ধারণা করা হচ্ছে, সরকারের সংশ্লিষ্টতা থাকতে পারে,এমন সন্দেহ থেকেই তারা আপত্তি জানাচ্ছে।

সূত্র:https://www.youtube.com/watch?v=792LSOcByZ 

 

আফরোজা

×