ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২০ মাঘ ১৪৩১

রাজনীতিতে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে কি বললেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ?

প্রকাশিত: ১১:০৭, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

রাজনীতিতে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নিয়ে কি বললেন ব্যারিস্টার ফুয়াদ?

বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নবীন এবং প্রবীণদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চিরকালীন একটি আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই দ্বন্দ্ব নিয়ে নিজের মতামত জানিয়েছেন "আমার বাংলাদেশ (এবি)" পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ। 
সম্প্রতি এক টকশোতে তিনি নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্বের বিষয়ে কথা বলেন এবং এই বিষয়ে তার মূল্যবান পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। ফুয়াদ বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি বেশ জটিল এবং পরস্পরবিরোধী চাহিদার মধ্যে আটকে পড়েছে-একদিকে প্রবীণদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা, আর অন্যদিকে নতুন প্রজন্মের রাজনীতিতে নতুনত্ব আনার তাগিদ।রাজনীতি এমন একটি ক্ষেত্র, যেখানে বয়সের পাশাপাশি নেতৃত্বের দক্ষতা, নৈতিকতা এবং জনগণের আস্থা সবচেয়ে বড় বিষয়।


ফুয়াদ পরিষ্কারভাবে বলেন, “রাজনৈতিক নেতৃত্বের গঠন একটি সমন্বিত প্রক্রিয়া, যেখানে দলীয় সদস্যদের মতামত এবং জনগণের আস্থা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে, যখন তরুণরা নেতৃত্বে আসবে, তখন তাদের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা ও নৈতিকতার প্রশ্ন উঠতে পারে।” 
তার মতে, প্রবীণদের কাছে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ যে, তাদের অভিজ্ঞতা এবং দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের সাথে তরুণরা কীভাবে তাল মিলিয়ে চলবে। প্রবীণদের ধারণা, রাজনৈতিক দায়িত্ব নিতে হলে দীর্ঘ সময়ের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। ফুয়াদ এ বিষয়ে বলেন, "কিন্তু, বয়স আর অভিজ্ঞতা যদি দক্ষতা, নৈতিকতা ও দায়িত্বশীলতা দ্বারা সঠিকভাবে সমর্থিত না হয়, তবে কোনো নেতৃত্বই যথার্থ হবে না।"


ফুয়াদ জানিয়ে দেন, প্রবীণদের থেকে নেতৃত্বের দখল নিতে হলে, তরুণদের অবশ্যই যোগ্যতা ও নৈতিকতার দিক থেকে যথেষ্ট পরিপক্ব হতে হবে। তিনি বলেন, “বিশ্বের অনেক দেশে তরুণরা সফলভাবে নেতৃত্ব গ্রহণ করেছে। যেমন, টনি ব্লেয়ার ব্রিটেনে ৪৩ বছর বয়সে প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, এবং বারাক ওবামা ৪৫ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।” তবে, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে, প্রবীণদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তারা দীর্ঘ সময় ধরে রাজনীতির অঙ্গনে সংগ্রাম করে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। ফুয়াদ বলেন, “আমাদের সমাজ প্রবীণদের সম্মান করে এবং জনগণ তাদের নেতৃত্বে বিশ্বাস রাখে, কারণ সামাজিক কাঠামো প্রবীণদের বেশি সম্মান দেয়।”


তবে ফুয়াদ তরুণদের জন্য বিশেষভাবে বলেন, “বয়সে তরুণ হলেও যদি তাদের মধ্যে রাজনৈতিক দক্ষতা এবং দায়িত্বশীলতা না থাকে, তবে তাদের নেতৃত্ব গ্রহণযোগ্য হবে না।” তিনি বাংলাদেশে ক্যাম্পাস পলিটিক্সের খারাপ দিকগুলো তুলে ধরেন, যেখানে অনেক যুবক অপরাধমূলক কার্যকলাপে জড়িয়ে পড়ছেন। ফুয়াদ এভাবে নতুন প্রজন্মের মধ্যে কিছু নেতিবাচক প্রবণতা তুলে ধরে, তাদের রাজনৈতিক দায়িত্বের দিকে মনোযোগ দেওয়ার আহ্বান জানান।


ফুয়াদ আরও বলেন, রাজনীতিতে নবীন-প্রবীণ দ্বন্দ্ব নতুন নয়। তবে এই দ্বন্দ্ব সমাধানের উপায় হলো তরুণদের নিজেদের নেতৃত্বের গুণাবলী এবং নৈতিকতা প্রমাণ করা। পাশাপাশি প্রবীণদের উচিত, নবীনদের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি প্রসারিত করা এবং তাদের কাজের মূল্যায়ন করা। সুতরাং, রাজনীতির নেতৃত্বে বয়স বা অভিজ্ঞতার চেয়ে গুণাবলী ও যোগ্যতাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক লিডারশিপের ক্ষেত্রে বৈষম্যহীন ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সঠিক নেতৃত্ব তৈরি হওয়া উচিত।


সূত্র: https://tinyurl.com/mrxan6ej

আফরোজা

×