ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গবেষণা কেন্দ্রের চেয়ারম্যান

শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া ও তারেক রহমানের উপযুক্ত নেতৃত্ব নিয়ে বিশ্লেষণ: ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম

প্রকাশিত: ২০:২২, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ২০:২২, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫

শেখ হাসিনার পালিয়ে যাওয়া ও তারেক রহমানের উপযুক্ত নেতৃত্ব নিয়ে বিশ্লেষণ: ইঞ্জিনিয়ার এ কে এম রেজাউল করিম

বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপথে, বিশেষ করে বিএনপির নেতৃত্বে তারেক রহমানের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা যখন হয়, তখন প্রায়শই বিভিন্ন মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। কিন্তু, একথা স্পষ্ট যে, তারেক রহমানের বর্তমান অবস্থান এবং কর্মকাণ্ড দেশের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক কাঠামোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বিদেশে থাকা অবস্থাতেই তিনি যে সঠিক পথ অনুসরণ করছেন, তা তার নেতৃত্বের প্রমাণ। তার এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের পেছনে একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, যেখানে পৃথিবীর অনেক বিখ্যাত নেতা বিদেশ থেকে বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছেন, যা সফলও হয়েছে।

ইরানের খোমেনী, রাশিয়ার লেনিন, দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা, কিউবার ফিদেল ক্যাস্ট্রো, এবং অনেক আন্তর্জাতিক নেতা যখন বিদেশে থেকেও নিজেদের দেশে বিপ্লব ঘটিয়েছেন, তখন তারা প্রমাণ করেছেন যে, শুধু দেশেই নয়, আন্তর্জাতিক মঞ্চেও নেতৃত্বের ভূমিকা রাখা সম্ভব। খোমেনী যেমন দ্রুত ফ্রান্স থেকে দেশে ফিরে এসে বিপ্লবের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন, তেমনি লেনিনও রাশিয়ায় ফিরে বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করেছিলেন। এইসব নেতাদের মতো, তারেক রহমানও তার দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে সচেতন আছেন এবং সময়ের সঠিক ব্যবহার করছেন।

বাংলাদেশে যখন ক্ষমতার পালাবদল হচ্ছে, তখন দেশের বর্তমান শাসক শ্রী শেখ হাসিনা বিদেশে পালিয়ে যান, তারপরে তারেক রহমানের মতো একজন উদ্যমী নেতা দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য তার উপস্থিতি প্রমাণ করছেন। যদিও তারেক রহমান এখনো দেশে ফিরে আসেননি, কিন্তু তার সেই সিদ্ধান্তের মধ্যেই নিহিত রয়েছে দেশের ভবিষ্যতের জন্য সবচেয়ে সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি। তার দীর্ঘস্থায়ী দূরদর্শিতা এবং রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা তাকে আজকের দিনে বাংলাদেশে সবচেয়ে উপযুক্ত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দৃশ্যে আমরা প্রায়ই এমন একটি পরিস্থিতি দেখতে পাই যেখানে দেশীয় রাজনীতির পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয়তা অনুভব করা হলেও, আমাদের মানসিকতা ও গতিশীলতা বরং স্থবির। একদিকে যেখানে পৃথিবীর অন্যান্য প্রভাবশালী নেতারা রাজনৈতিক বিপ্লব বা পরিবর্তন ঘটানোর জন্য দেশ ছাড়ছেন এবং আন্তর্জাতিকভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছেন, সেখানে আমাদের দেশে এ ধরনের মানসিকতা দুঃখজনকভাবে অবহেলিত। তারেক রহমানের মতো নেতারা নিজেদের দেশের জন্য কোনো না কোনো পরিবর্তন আনতে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন, কিন্তু তা করতে গিয়ে তারা প্রায়শই বাধার সম্মুখীন হন।

এটি এক ধরনের রাজনৈতিক বাস্তবতা, যেখানে যারা স্থির থাকতে পছন্দ করেন এবং ছোট ছোট পদক্ষেপে নিজেদের অবস্থান সুরক্ষিত রাখতে চান, তাদের জন্য সর্বোচ্চ সম্মান। কিন্তু, সঠিক নেতৃত্ব হলো সেই নেতৃত্ব, যা পরিবর্তন আনতে সাহসী পদক্ষেপ নেয় এবং জনগণের জন্য ভালো কাজ করে। 

তারেক রহমানের বিদেশে থাকা শুধু তার ব্যক্তিগত পছন্দের বিষয় নয়, এটি তার রাজনৈতিক দর্শনের একটি অংশ। তিনি জানেন যে, দেশের মাটিতে না ফিরেও তিনি তার কর্মসূচী এবং নির্দেশনা দিয়ে দেশের জনগণের মধ্যে প্রেরণা তৈরি করতে সক্ষম। তার নেতৃত্বে বিএনপি কিভাবে শক্তিশালী হতে পারে, তা শুধু সময়ের ব্যাপার। তিনি দেশের উন্নয়নে গুরুত্ব দিয়ে যা করছেন, তা নিঃসন্দেহে উপকারী এবং ভবিষ্যতে দেশীয় রাজনীতিতে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে।

তারেক রহমান, যেভাবে এখনো দেশে ফিরে আসছেন না, সেটি তার বুদ্ধিমত্তার প্রমাণ। তিনি দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিচার করে নিজেকে সঠিক সময়ে ফিরে এসে আরো শক্তিশালীভাবে নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত। তার নেতৃত্বে বিএনপির ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল এবং জাতির জন্য একটি শক্তিশালী পরবর্তী নেতৃত্ব হিসেবে তার দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত মূল্যবান। 

তারেক রহমানের এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাতে হবে এবং তাকে স্বাগত জানাতে হবে, কারণ তিনি আজকের দিনে বাংলাদেশের সবচেয়ে উপযুক্ত দেশনায়ক হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। 
 

রিফাত

×