হাজীগঞ্জে পথসভায় শুভেচ্ছা বিনিময় করেন উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম
যে প্রতিষ্ঠানগুলো হাসিনাকে টিকিয়ে রেখেছিল, সেই প্রতিষ্ঠানগুলোকে একই রকম রেখে আমরা নির্বাচনে যেতে পারি না, হাসিনার দালালদের উৎখাত করেই নির্বাচনে যেতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। শনিবার বিকেলে বৃহত্তর নোয়াখালীর রামগঞ্জ সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে গণসংবর্ধনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
এর আগে দুপুরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ বাজার এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে পথসভা ও শুভেচ্ছা বিনিময়ের সময় মাহফুজ আলম বলেছেন, বাংলাদেশবিরোধী আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। যদি আওয়ামী লীগ আবার ফেরত আসে, তাহলে আবার ফ্যাসিবাদ ফেরত আসবে।
রামগঞ্জে গণসংবর্ধনা সভায় মাহফুজ আলম বলেন, বাংলাদেশে সেনাশাসন আসার কোনো প্রেক্ষিত নেই। আমরা কোনো রাষ্ট্রের মদতে হাসিনাকে উৎখাত করিনি। আমাদের ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে হাসিনাকে উৎখাত করেছে। আমাদের কারও তাঁবেদারি করার দরকার নেই। রাজনৈতিক দলগুলোকে সংস্কারের কাজে সহযোগিতা করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার পর সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের দিকে এগোবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।
গণসংবর্ধনা সভায় রামগঞ্জ সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর দিদারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা জামায়তের আমির নাজমুল হাসান, পৌর আমির আইনজীবী হাসান বান্না, জেলা ইসলামী আন্দোলনের সহ-সভাপতি জাকির পাটোয়ারি, উপজেলা সভাপতি রফিকুল ইসলাম, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি অপূর্ব সাহা, মুক্তিযোদ্ধা সালেহ আহমদ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক আরমান হোসেন, হাসিবুর রহমান রাফী প্রমুখ।
এর আগে রামগঞ্জ উপজেলার ডাকবাংলোতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না ॥ অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, বাংলাদেশবিরোধী আওয়ামী ফ্যাসিবাদীদের আর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেওয়া হবে না। যদি আওয়ামী লীগ আবার ফেরত আসে, তাহলে আবার ফ্যাসিবাদ ফেরত আসবে।
শনিবার দুপুরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বাজার এলাকায় ছাত্র-জনতার সঙ্গে পথসভা ও শুভেচ্ছা বিনিময়ে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহফুজ আলম বলেন, বিএনপি-জামায়াতসহ অন্য রাজনৈতিক দল যারা বাংলাদেশপন্থি আছেন, তারাই নির্বাচনে থাকবেন। সুষ্ঠু নির্বাচন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে, সকল দল ইতিবাচক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বাংলাদেশের শাসন প্রতিষ্ঠা করবেন। আমরা আর শেখ মুজিব-শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদীদের শাসনামল চাই না। আমরা চাই এই দেশ বাংলাদেশপন্থিদের হাতে থাকবে। তিনি বলেন, আমাদের লড়াইটা মূলত গত ৫৩ বছরের একটি অস্থিতিশীল বাংলাদেশ থেকে বেরিয়ে একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াই। একটি ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াই।
মাহফুজ বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল প্রতিষ্ঠা করে চারটি পত্রিকা ছাড়া সকল মিডিয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক অভিযাত্রাকে নস্যাৎ করার চেষ্টা করেছেন। নব্য দেশটির স্বাধীনতাকে ভূলণ্ঠিত করেছে। কয়েক হাজার বিরোধী নেতাকে গুম করেছেন শেখ মুজিব। ওই সময়ের পর থেকে আওয়ামী লীগের নেতারা একই স্টাইলে বাংলাদেশে গুম-খুন করেছিল।
এই উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনা যে ব্যবস্থার ওপর দাঁড়িয়ে গণহত্যা, নিপীড়ন-নির্বিচার ও লুটপাট চালিয়েছে এবং গুম-খুন ধর্ষণ করেছে, সে সকল প্রতিষ্ঠানের সংস্কার ব্যতিত সামনে আগাতে চাই না। আমরা যদি ন্যূনতম সংস্কার না করে নির্বাচন করি, তাহলে আওয়ামী দোসররা ওই সব প্রতিষ্ঠানে থেকে যাবে। তাহলে জনগণ বৈষম্য ও নিপীড়নমুক্ত হতে পারবে না। সুতরাং সংস্কার কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে শীঘ্রই রাজনৈতিক দল ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে এবং সংস্কার গণতান্ত্রিকভাবে পট-পরিবর্তনের জন্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।
মতবিনিময়ে হাজীগঞ্জ উপজেলা নিবাহী কর্মকর্তা তাপস শীল ও হাজীগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কয়েক শতাধিক নেতাকর্মী এ সময় উপস্থিত ছিলেন।