ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১১ মাঘ ১৪৩১

১/১১-এর ভয়াবহ পরিণতির সবচেয়ে বেশি শিকার বিএনপি: মির্জা আব্বাস

প্রকাশিত: ১৪:২৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৪:২৫, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫

১/১১-এর ভয়াবহ পরিণতির সবচেয়ে বেশি শিকার বিএনপি: মির্জা আব্বাস

ছবি: সংগৃহীত

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, আজ অনেকেই স্বাধীনতা পেয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন। কেউ কেউ দাবি করছেন, বিএনপি নাকি আবারও ১/১১ আনার পাঁয়তারা করছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, ১/১১-এর ভয়াবহ পরিণতির সবচেয়ে বেশি শিকার বিএনপিই হয়েছে। খালেদা জিয়া থেকে শুরু করে দলের কোনো নেতাকর্মীই তখন রেহাই পাননি। এমন ভিত্তিহীন কথা বললে দেশের গণতন্ত্রের প্রকৃত চেহারা কেউ দেখতে পারবে না। 

শুক্রবার দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের নিচতলায় আরাফাত রহমান কোকোর দশম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

মির্জা আব্বাস বলেন, আরাফাত রহমান কোকোকে চৌকসভাবে হত্যা করা হয়েছে। একদিকে মা অসুস্থ, ভাইকে শারীরিকভাবে নিষ্ঠুরতম অত্যাচার করে দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। তখন কোকোকে অসুস্থ অবস্থায় দেশত্যাগে বাধ্য করা হয়। আর লাশ হয়ে দেশে ফিরেন।

তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের ইতিহাসে শহীদ জিয়া এবং তার পরিবারের ইতিহাস বিরল। খালেদা জিয়া তার স্বামী হারিয়েছেন, সন্তান হারিয়েছেন। বিনাদোষে সাতবছর বন্দী ছিলেন। আজকে অনেকে জিয়া পরিবারের অবদানকে অবজ্ঞা করছেন। এই অবজ্ঞা শুধু জিয়া পরিবারকে নয়, দেশ ও গণতন্ত্রের প্রতি অবজ্ঞা। 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, খালেদা জিয়াকে স্লো পয়জনের মাধ্যমে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া মানে গণতন্ত্রকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া। 

তিনি বলেন, শিশুদের যখন নতুন দাঁত উঠে তখন বাচ্চারা উল্টাপাল্টা কথা বলেন। এখন কেউ কেউ এমনভাবে কথা বলছেন যেন বিএনপি আওয়ামী লীগের দোসর। বিএনপি ভারতের দোসর। যারা এগুলো বলছেন তারা নিজেরা নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখুন।

তিনি আরও বলেন, আমার ১১ বছর জেল হয়েছে, আমার স্ত্রী ১৬ বছর, আমার ছোট ভাইয়ের আট বছর সাজা হয়েছে। এমনি করে বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে নির্যাতন নিপীড়ন হয়েছে। আর আজ আমাদেরকে আওয়ামী লীগের সিল বানাতে চান। চক্রান্ত যাই করেন আমরা বুঝি। বিএনপি কিছু বললেই সমস্যা। 

তিনি বলেন, অনেকে বিদেশে বসে জ্ঞান দিচ্ছেন। এতে দেশের শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে। আপনাদের যে প্রজ্ঞা আছে তা দেশের কাজে লাগান। অনেকে বলেন নতুন দল গঠিত হচ্ছে বিএনপি তা জেলাসী করছে। যারা এগুলো বলছেন তারা জাতির শত্রু। বিএনপি গণতান্ত্রিক দল। যেকোন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকেই স্বাগত জানায়। তবে, জনসমর্থন আদায় করতে হলে জনগণের পালস বুঝতে হবে। 

আজকে অনেকে বলছেন ৫ ই আগস্ট যারা এনেছেন, সবকিছুর অধিকার তাদের। যারা ১৭ বছর নির্যাতনের শিকার হয়েছে, খুন হয়েছে গুম হয়েছে তাদের কি হবে? আমি নিজেওতো ১৩ বার জেল খেটেছি। আমাদের কোন অবদান নেই! এগুলো বলে জাতির মাঝে বিভেদ সৃষ্টি করবেন না। 

কোনো দলের নাম উল্লেখ না করে আব্বাস বলেন, গাছে কাঠাল গোঁফে তেল। একটি দল ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য পাগল। সুযোগ পেলেই টোপ করে বিএনপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন। 

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের ভূইয়া জুয়েল, সহ প্রচার সম্পাদক আসাদুল করিম শাহীন, সহ যুব বিষয়ক সম্পাদক মীর নেওয়াজ আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য শামসুজ্জামান মেহেদী, মাহবুব আলম, মসিউর রহমান বিপ্লব, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহবায়ক রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব এহসান, সিনিয়র সহসভাপতি ইয়াসিন আলী, সহ সভাপতি ডা. জাহিদুল কবির, রফিকুল ইসলাম, ছাত্রদলের সহ সভাপতি ডা. তৌহিল আউয়াল, মৎসজীবী দলের সাবেক সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ।

রাসেল

×