ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ৭ মাঘ ১৪৩১

ডাকসু পুনর্গঠন: ছাত্রদলের গণতান্ত্রিক রাজনীতির অগ্রযাত্রা

মাহবুব নাহিদ (রাজনৈতিক বিশ্লেষক)

প্রকাশিত: ২৩:৫০, ২০ জানুয়ারি ২০২৫

ডাকসু পুনর্গঠন: ছাত্রদলের গণতান্ত্রিক রাজনীতির অগ্রযাত্রা

আমাদের দেশের সকল ইতিহাসের সাথে জড়িত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যেই বিশ্ববিদ্যালয় শুধু সেখানকার ছাত্রদের নয়। এই বিশ্ববিদ্যালয় পুরো দেশের, দেশের মানুষের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) বাংলাদেশের সকল গণতান্ত্রিক লড়াই সংগ্রাম এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে সুবিচার প্রতিষ্ঠায় ঐতিহাসিকভাবে গুরু দায়িত্ব  পালন করে আসছে। তবে ১৯২৫ সালে প্রণীত এবং পরবর্তীতে সংশোধিত গঠনতন্ত্রে বিদ্যমান কিছু অস্পষ্টতা, স্বেচ্ছাচারিতা এবং জবাবদিহিতার অভাব আজকের প্রেক্ষাপটে ডাকসুকে কার্যকর করতে বড় অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা আজকের বাস্তবতায় বদলে দেওয়া খুবই জরুরি হয়েছে।

 

বিশেষত, উপাচার্যকে স্বৈরতান্ত্রিক ক্ষমতা প্রদান, নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সুনির্দিষ্ট নির্দেশনার অভাব এবং নির্বাচনের অনিয়ম ডাকসুকে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কার্যকর হতে বাধা দিচ্ছে। ডাকসুকে গণতান্ত্রিক উপায়ে গড়ে তোলার মহৎ চিন্তা মাথায় আসে বাংলাদেশের সকল লড়াই সংগ্রামের নিরলস পথযাত্রী দক্ষিণ এশিয়ার সর্ববৃহৎ ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল মনে করে, "গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা ও স্থায়িত্ব" নিশ্চিত করতে ডাকসুর গঠনতন্ত্রে ত্রুটিপূর্ণ ধারাগুলো সংশোধন করা এবং অসংগতিমূলক কিছু প্রয়োজনীয় নতুন ধারা সংযোজন করে ডাকসুকে নতুন আঙ্গিকে শুরু করা অত্যাবশ্যক। বিশেষত, নিয়মিত নির্বাচনের আয়োজন করা, তহবিলের সঠিক ব্যবস্থাপনা, এবং যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ছাত্র-শিক্ষকের ক্ষমতার ভারসাম্য পুনর্বিবেচনা করে এমন একটি কাঠামো তৈরির স্বপ্ন ছাত্রদল দেখে, যা শিক্ষার্থীদের অধিকার সংরক্ষণ এবং ডাকসুর ধারাবাহিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বজায় রাখতে সহায়ক হবে।

 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল বিগত ১৭ বছর ধরে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পুনরুদ্ধারের সংগ্রামে অকল্পনীয় ত্যাগ স্বীকার করেছে। শত শত নেতা-কর্মী গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন, আর ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে জীবন দিয়েছেন শতাধিক সাহসী যোদ্ধা, এই অবিস্মরণীয় পথযাত্রায় অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, অনেকে ঠিকভাবে শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করতে পারেননি। তাঁদের এই রক্তক্ষয়ী ত্যাগই নতুন বাংলাদেশের গণতন্ত্রের সূর্য উদিত করেছে। ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানের পর দেশের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি, অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনসহ ছাত্রদলের লড়াইয়ের সঙ্গে সংগতি রেখে ডাকসুকে পুনর্গঠনের এ দাবি আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দেশের সর্বোচ্চ এই বিদ্যাপীঠ শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল অঙ্গীকারবদ্ধ । এজন্য তাঁরা নিয়মিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে ইতিবাচক আলোচনায় যুক্ত রয়েছে এবং গঠনতন্ত্র সংস্কারের প্রক্রিয়াকে সম্পন্ন করার জন্য ইতোমধ্যেই একটি সুবিস্তৃত এবং সুস্পষ্ট রূপরেখা প্রদান করেছে। মোটা দাগে ৪০টি সহ মোট ৩৭৭ টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে গত বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।

 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র সংস্কারের জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রস্তাবনাগুলো ছাত্ররাজনীতির ভবিষ্যৎ বিকাশে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এগুলোতে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ, সুশাসন এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণ নিশ্চিত করার লক্ষ্য স্পষ্ট। 

বর্তমান গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, ডাকসুর সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। এই পদ সরাসরি শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত হলে এটি গণতন্ত্রের প্রকৃত প্রতিফলন ঘটাবে। উন্নত দেশের বহু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদের প্রেসিডেন্ট শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত হন, যা নেতৃত্ব বিকাশ ও শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উল্লেখ্য, অক্সফোর্ড, ক্যামব্রিজ, এমআইটি, হার্ভার্ড ও জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয়সহ আন্তর্জাতিক ও আধুনিক ছাত্র সংসদগুলোতে সভাপতির পদ শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকেই সরাসরি নির্বাচিত হয়ে থাকে।

 

একজন শিক্ষক দ্বারা মনোনীত হওয়ার পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত "অর্থ সম্পাদক" রাখার প্রস্তাবনা সুশাসনের একটি দৃষ্টান্ত। এটি আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে এবং শিক্ষার্থীদের সরাসরি অর্থ ব্যবস্থাপনায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দেবে।
ভোটকেন্দ্র হল থেকে অ্যাকাডেমিক ভবনে সরিয়ে নেওয়া নির্বাচন ব্যবস্থাকে আরও সুষ্ঠু, নিরাপদ এবং নিরপেক্ষ করবে। এটি শিক্ষার্থীদের আস্থা ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।

হল সংসদের সভাপতির ক্ষমতা ভারসাম্য আনার জন্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অ্যালামনাই সমন্বয়ে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন একটি উদ্ভাবনী উদ্যোগ। এটি একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ঝুঁকি কমাবে এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করবে।
ভোটার এবং প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে ৩০ বছর বয়সসীমা তুলে দেওয়ার প্রস্তাব একটি সাহসী পদক্ষেপ যার ফলে শুধু নিয়মিত শিক্ষার্থীরা ভোট প্রদানের সুযোগ পাবে। এটি সকল নিয়মিত শিক্ষার্থীকে সমান অধিকার প্রদান করবে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক স্বাধীনতা বজায় রাখবে।

 

ডাকসু এবং হল সংসদে মানবাধিকার, স্বাস্থ্য, পরিবেশ, জেন্ডার সমতা, গবেষণা, কর্মসংস্থান ইত্যাদি ক্ষেত্রে নতুন সম্পাদক পদ সৃষ্টির প্রস্তাব শিক্ষার্থীদের প্রয়োজন এবং সমসাময়িক চাহিদার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এটা ছাত্র সংসদের কার্যক্রমকে বহুমুখী ও আধুনিক করবে। ডাকসুর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে গণতান্ত্রিক, আধুনিক ও সমসাময়িক করার প্রস্তাব শিক্ষার্থীদের কার্যকর অংশগ্রহণ এবং নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ তৈরি করবে। এটি কেবল বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের জন্যও ভবিষ্যৎ নেতা তৈরি করবে।

ডাকসুর স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক পদের নাম ও কার্যাবলিতে প্রস্তাবিত পরিবর্তন সময়োপযোগী এবং প্রশংসনীয়। "মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও '২৪ এর গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক সম্পাদক" নামে এ পদ পুনঃনামকরণ মাধ্যমে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক আন্দোলনগুলোর চেতনাকে সমুন্নত রাখা এবং গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সাম্য ও সবার জন্য সমান সুযোগের মত আদর্শসমূহকে প্রসারিত করার দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হয়েছে। ১৯৫২ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত গণমানুষের অধিকার আদায়ের প্রতিটি সংগ্রামের ইতিহাসকে সংরক্ষণ ও অনুপ্রেরণা হিসেবে তুলে ধরা, শিক্ষার্থীদের মধ্যে দেশপ্রেম ও নেতৃত্বের গুণাবলি তৈরি, এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে লালন করার জন্য এই পদ অত্যন্ত কার্যকর ভূমিকা রাখবে।

 

হল প্রাধ্যক্ষের একক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা পরিবর্তন করে উপদেষ্টা পরিষদের হাতে দায়িত্ব অর্পণ হলে সুশাসন প্রতিষ্ঠা হবে। এটি শিক্ষার্থীদের অধিকার রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে। গঠনতন্ত্রের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য ও কার্যাবলির ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুসরণ করার প্রস্তাব ছাত্র সংসদের কার্যক্রমকে আধুনিকায়ন করবে। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিশ্বমানে উন্নীত করার পথ সুগম করবে।

ডাকসুর নির্বাহী কমিটিতে নারী শিক্ষার্থীদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে নারী ও পুরুষ শিক্ষার্থীদের জন্য দুটি করে সহ-সভাপতি এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক পদের প্রস্তাবনা একটি সময়োপযোগী উদ্যোগ। এ প্রস্তাবনার মাধ্যমে নেতৃত্বে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো, সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় তাদের সক্রিয় ভূমিকা নিশ্চিত করা, এবং গণতান্ত্রিক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ছাত্র সংসদ গঠন সম্ভব হবে। এটি লিঙ্গভিত্তিক বৈচিত্র্য ও সমতা প্রতিষ্ঠায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশকে আরো প্রগতিশীল ও আধুনিক করে তুলবে।

 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, "বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের আদর্শে উজ্জ্বীবিত হয়ে শিক্ষা-ঐক্য-প্রগতির ঝান্ডাধারী সংগঠন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচনমুখী ছাত্র সংগঠন। প্রতিষ্ঠার পর থেকে শিক্ষার্থীদের কল্যাণের স্বার্থে যেকোন পদক্ষেপ নিতে ছাত্রদল কখনো পিছপা হয়নি। সে লক্ষ্যে বিগত ১৫ জানুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর পেশকৃত ডাকসু ও হল সংসদসমূহের গঠনতন্ত্র সংস্কার প্রস্তাবে এমনভাবে ডাকসুর সংস্কার আনার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে যাতে ডাকসু কেন্দ্রিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং নাগরিকসমাজের আকাঙ্খার যে ব্যত্যয় তা আর কখনো না ঘটে।

 

তাই ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে রাষ্ট্রের অন্যান্য সকল প্রতিষ্ঠানের মতন ডাকসুকেও অধিক গণতন্ত্রায়ণের দিকে নিয়ে যাওয়া দরকার৷ কারণ আমরা এমন ডাকসু চাইনা, যে ডাকসু কেবল নেতা বানানোর মাধ্যম হবে। আমরা চাই যেন ডাকসু সত্যিকার অর্থেই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করবে, যেন এই ডাকসুর মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশের সম্মান বৃদ্ধি করতে পারে। সভাপতি ও কোষাধ্যক্ষ সহ নির্বাহী কমিটির সকল পদে নির্বাচিত শিক্ষার্থী প্রতিনিধি রাখার পাশাপাশি সভাপতির পদে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা এবং ৩৬৫ দিন কিংবা এর পরের ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন না হলে নির্বাচনকালীন দায়িত্ব পালনের জন্য কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে আলাদা উপদেষ্টা পরিষদ প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। নারী শিক্ষার্থীদের কার্যকর প্রতিনিধিত্ব নির্বাচনের জন্য একজন নারী সহ-সভাপতি ও একজন সহ-সাধারণ সম্পাদক পদ প্রণয়নের প্রস্তাব করা হয়েছে। এসব ছাড়াও মোটাদাগে মোট ৪০ টি সংস্কার প্রস্তাবনা সহ ৩৭৭টি খুঁটিনাটি সংস্কার প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 

সর্বোপরি, সকল অংশীজনের মতামত ও গুণীজনের সুপরামর্শ সমন্বয় করে একটি সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক ও কার্যকরী সংস্কারের পরেই নিয়মিত নির্বাচনের মাধ্যমে সত্যিকার অর্থেই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে যাবে ডাকসু- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।"

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন বলেন, “জুলাই আগস্টের গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে রাজনৈতিক সচেতনতা তৈরি হয়েছে যে আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে সেই চাহিদা এবং আকাঙ্ক্ষার ভিত্তিতে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সংসদ হিসেবে খ্যাত ডাকসু নির্বাচন বাংলাদেশের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল সাধারণ শিক্ষার্থীদের একটি যৌক্তিক চাওয়া এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রত্যেকটি নেতাকর্মীর চাওয়া ডাকসু নির্বাচন।“

 

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সাধারণ শিক্ষার্থীদের আকাঙ্ক্ষা ও চাহিদার ভিত্তিতে সার্বিক কল্যাণকে মাথায় রেখে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে, যা ক্যাম্পাসে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রতীক। বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে, বিএনপির চেয়ারপার্সন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার পরম স্নেহে বেড়ে উঠে বর্তমানে তাঁদের সাংগঠনিক অভিভাবক বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনায় শিক্ষার্থীবান্ধব ক্যাম্পাস এবং পড়ালেখার পাশাপাশি সহশিক্ষা কার্যক্রমে উদ্বুদ্ধ করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে ছাত্রদল।

 

পাখির বাসা স্থাপন, রাস্তা পরিষ্কার, ফুড কনটেইনার স্থাপন এবং খেলাধুলার আয়োজনের মাধ্যমে তারা শুধু পরিবেশবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করেনি, বরং শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণমূলক ও মানবিক মূল্যবোধের চর্চা নিশ্চিত করেছে। বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের পেটোয়া বাহিনী নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নিপীড়নের ফলে ভীতপ্রায় শিক্ষার্থীদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠায় ছাত্রদলের গণতান্ত্রিক ও কল্যাণমুখী রাজনীতি বর্তমানে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে সাহস, ঐক্য এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সঞ্চার করছে।দীর্ঘ দেড় দশক ধরে ছাত্রলীগের কলুষিত রাজনীতির বিপরীতে শিক্ষার্থী ও জনগণের অধিকার আদায়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের যে অপরিসীম ত্যাগ ও ইতিবাচক চর্চা রয়েছে সেটির উপর ভিত্তি করে ছাত্র রাজনীতির প্রচলিত ধারার বিপরীতে গিয়ে চব্বিশ পরবর্তী প্রত্যাশিত সমাজ বিনির্মানে একটি জ্ঞাননির্ভর ও চিন্তা-মননে একটি রুচিশীল সংগঠন হিসেবে সকলের মণি কোঠায় স্থান করে নিতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।

তাবিব

×