ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১

অন্তর্বর্তী সরকারের টাকা ছাপানো দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে দিয়েছে: মির্জা ফখরুল

আবদুর রহিম

প্রকাশিত: ১৫:৪৬, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ১৫:৪৮, ১৮ জানুয়ারি ২০২৫

অন্তর্বর্তী সরকারের টাকা ছাপানো দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে বাড়িয়ে দিয়েছে: মির্জা ফখরুল

ছবি- জনকণ্ঠ

বিএনপি সংবাদ সম্মেলনে আজ (১৮ জানুয়ারি) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর  বলেন, সরকার গত নভেম্বর ২০২৪ মাসে আওয়ামী সরকারের লুণ্ঠিত কিছু ব্যাংকের তারল্য সংকট কমাতে নতুন করে ২২,৫০০ কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজারে ছেড়েছে। যদিও এই সরকার তার মেয়াদের শুরুতে বলেছিল, দেশের অর্থনীতির কোন অবস্থাতেই টাকা ছাপানো হবে না। কিন্তু, আওয়ামী লীগ সরকারের ন্যায় টাকা ছাপানোর মতো অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর পদক্ষেপটি গ্রহণ করল, যা দেশের উচ্চ মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে, এবং জনগণের নাভিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিয়েছে।

 

সরকারি রেকর্ড অনুযায়ী, ডিসেম্বর ২০২৪ নাগাদ দেশের জাতীয় মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৮৯% এবং খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১২.৯২%। তাছাড়া, গ্রামের (১২.৬৩%) তুলনায় শহরে (১৩.৫৬%) খাদ্য মূল্যস্ফীতি আরো প্রকট আকার ধারণ করেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য ও আনুষঙ্গিক জিনিসপত্রের দাম এমনিতেই নাগালের বাইরে চলে যাওয়ায় প্রান্তিক জনগণের পাশাপাশি খেটে খাওয়া মানুষ, দিনমজুর ও স্বল্প আয়ের মানুষদের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। যেভাবে জনজীবনের দৈনন্দিন ব্যয় বৃদ্ধি পাচ্ছে সেভাবে তাদের আর্থিক আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে না।

 

 তিনি আরও বলেন, আমরা বুঝতে পারি যে আওয়ামী ফ্যাসীবাদের পরবর্তী সময়ে অন্যান্য খাতের মতো আর্থিক খাতেও বিশৃঙ্খলা ও ভঙ্গুর অবস্থা পরবর্তী চ্যালেঞ্জগুলো সৃষ্টি করেছে। তথাপি, বিএনপি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের এমন সিদ্ধান্তে সাধারণ জনগণের জীবনের ওপর প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন। পতিত আওয়ামী লীগ সরকার গত ১৫ বছর দুর্নীতি ও লুটপাটের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে কার্যত ধ্বংস করে ফেলেছে। ডিসেম্বর ২০২৪ অনুযায়ী, বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারে নেমে গিয়েছে, দেশের মূল্যস্ফীতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১%, অনেক ক্ষেত্রে এটি ২৫% এরও বেশি বেড়েছে। অথচ দক্ষিণ এশিয়া বিশেষত শ্রীলংকার মত দেশে মূল্যস্ফীতি উল্লেখযোগ্য হারে করেছে। দেশের মোট ঋণের পরিমাণ ২০ লাখ কোটি টাকা অতিক্রম করেছে  এবং ব্যাংকিং খাতের তারল্য সংকটের কারণে জনগণ তাদের কষ্টার্জিত আমানত ফেরত পাচ্ছে না। দেশের অর্থনীতি কার্যত ভেঙে পড়েছে।

 

এমন বাস্তবতায় দেশের অর্থনীতিকে স্বাভাবিক ও গতিশীল অবস্থায় ফিরিয়ে নেওয়া অব্যশই একটি বড় চ্যালেঞ্জ। দেশের শাসন ব্যবস্থায় যেই থাকুক না কেন, তাকেই সেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে এবং যোগ্যতা ও সাহসের সাথে তা মোকাবেলা করতে হবে। কিন্তু অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার এই চ্যালেঞ্জগুলোকে কার্যকর উপায়ে মোকাবেলা না করে এবং একটি অর্থনৈতিক পুনর্গঠনের ভিত্তি তৈরির দিকে মনোযোগ না দিয়ে চলতি অর্থ বছরের মাঝপথে হঠাৎ করে ভ্যাট ও শুল্ক বৃদ্ধি করল, যা সহজ কিন্তু জনগণের জন্য কল্যাণকর নয়।

মনিষা মিম

আরো পড়ুন  

×