ছবি : সংগৃহীত
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) সকালে ঢাকায় যুব উন্নয়ন সংস্থা আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আন্ত: থানা/বিভাগ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৪ এর ফাইনাল খেলা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ, ‘উনারা এতোদিন ফাঁকা মাঠে খেলেছেন’ বলে মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, বিগত ১৬ বছরে কোন খেলা নেই, কোন প্লেয়ার নেই, কোন দল নেই, কিছুই নেই। শুধু আমরা মাইকে শুনতাম, খেলা হবে। শুধু খেলা হবে কথা শুনেছি, কিন্তু কোন খেলা ছিল না। আবার আমাদের শিক্ষার্থী-তরুণরা যখন রাস্তায় নেমেছে, তখন আবার এই খেলোয়াড় কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায় নাই, এই খেলোয়াড়দের এখন আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই সমস্ত ডামি খেলোয়াড় এখন সরে গেছে, আসল খেলোয়াড়রা আমাদের মাঠ দখল করেছে। এই আসল খেলোয়াড়রা বাংলাদেশ করেছে।
আমাদের বাংলাদেশের রাজনীতিতে যদি এটাকে স্বীকার করা হতো, তাহলে আমাদের ব্যাট দিয়ে আজকে আপনারা বল পিটিয়েছেন। আর বিগত ১৫ বছর, এই ব্যাট দিয়ে বিরোধীদলকে পিটানো হয়েছে। আমাদের সংগঠকরা খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন, প্রত্যেকের কথাই চলে এসেছে, যে এই মাঠটাকে খেলার মাঠ হিসেবে না নিয়ে, এখানে দলবাজি করা হয়েছে, এখানে চাঁদাবাজি করা হয়েছিল, আমি বহুদিন এইখানে, আশেপাশে আমার নিজের চোখে দেখেছি। এটা খেলার মাঠ ছিল না, এটা ছিল একটা মাদকের হাট।
আমি আশা করি যে, এখানে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা আছেন, সংগঠকরা আছেন, আমরা নিজেরাও চেষ্টা করব যে, এই মাঠ হবে স্বাধীনতার মাঠ। আমাদের একজন কবি, একটা কথা খুব আফসোস করে লিখেছিলেন, ‘যে মাঠ থেকে এসেছিল স্বাধীনতার ডাক, সেই মাঠ এখন মাদকের হাট’।
এটা বিগত ১৬ বছরে এই পতিত খুনি, স্বৈরাচারী সরকার, আওয়ামী সরকার, আমাদের ক্রীড়াঙ্গনটাকে একটা রাজনৈতিক মাঠ হিসেবে এটাকে এমনভাবে কাজে লাগিয়েছে। আমাদের দেশে সম্পদ ছিল, এটাকে তারা দলের সম্পদে পরিণত করে, তাদেরকে ডামি ক্যান্ডিডেট করে, ডামি এমপি বানিয়ে, পুরো খেলার জগতটাকে তারা ধ্বংস করে দিয়েছে।
আমরা আশা করি, এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার আমাদের যুব সংস্থাসহ অসংখ্য ক্রিকেট সংগঠন, আমাদের অন্যান্য আরো যে ক্রীড়া সংগঠন আমরা করেছি, সেগুলোর মধ্য দিয়ে আমরা রাজনীতির মাঠে যেমন আমরা ভূমিকা রাখবো, দেশ গড়ার জন্য সবাই মিলে আমরা ক্রীড়াঙ্গনে ভূমিকা রাখবো। এই কারণে যে, এখান থেকে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় শেখার আছে, সেটা হচ্ছে দেখেন আজকে যারা হেরেছে, তারা কি এটা এসে এখানে বলা শুরু করেছে যে, এখানে স্থূল কারচুপি হয়েছে। এখানে সূক্ষ্ম কারচুপি হয়েছে অথবা আমাকে বল পিটানোর পরিবর্তে, আমার পায়ে পিটানো হয়েছে। অথবা আমার সাথে আপনি প্রতিযোগিতা পারবেন না, এটা মনে করে আমাকে খেলার এই ১০ জন বা ১১ জন প্লেয়ার বাদ দিয়ে, বাইরে থেকে আরো কয়েকশো লোক নিয়ে এসে তাদের উপরে ঝাপিয়ে পড়া হয়েছে, তার মানে কি?
তার মানে এখানে প্রতিভার বিকাশ, এখানে প্রতিযোগিতা প্রতিদ্বন্ধীতা থাকবে, প্রতিহিংসা থাকবে না। কিন্তু আমাদের রাজনীতিতে আমরা দেখি প্রতিযোগিতার পরিবর্তে প্রতিহিংসা, এবং প্রতিদ্বন্ধীতার মাধ্যমে অপরকে আধিপত্য বিস্তার করে, শক্তি প্রয়োগ করে তাকে থামিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। আমি আশা করব যে, আজকে খেলার মাধ্যমে আমাদের দেশ করার এই যে একটা গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা, এখান থেকে আমরা গ্রহণ করব। এবং সেটা যদি আমরা ধারণ করতে পারি, তাহলে আমি বিশ্বাস করি, খেলার মাঠের আজকের যে সুন্দর শৃঙ্খলা, এখান থেকে যেমন আমরা বিনোদন নিচ্ছি, এখান থেকে যেন আমরা প্রতিভার বিকাশ করছি, আজকে এখানে ম্যান অফ দা ম্যাচ হবে, এখানে ম্যান অফ দা সিরিজ হবে।
এখানে একপক্ষ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, আরেক পক্ষ রানার্স আপ হচ্ছে। আরো অন্যান্য যে আমাদের প্রায় ৯০টা থানা-বিভাগ যারা অংশগ্রহণ করেছে, তারা তো এই কথা কেউ বলে নাই, যে ভাই, ভবিষ্যতে আর এই খেলা আমাদের যদি জিততে না দেওয়া হয়, তাহলে এই খেলা আমরা অনুষ্ঠিত হতে দেবো না। অথচ বিগত ১৬ বছরে কোন খেলা নেই, কোন প্লেয়ার নেই, কোন দল নেই, কিছুই নেই।
তিনি আরো বলেন, শুধু আমরা মাইকে শুনতাম, খেলা হবে। শুধু খেলা হবে কথা শুনেছি, কিন্তু কোন খেলা ছিল না। আবার আমাদের শিক্ষার্থী-তরুণরা যখন রাস্তায় নেমেছে, তখন আবার এই খেলোয়াড় কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায় নাই, এই খেলোয়াড়দের এখন আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। ওই সমস্ত ডামি খেলোয়াড় এখন সরে গেছে, আসল খেলোয়াড় তাদের মাঠ দখল করেছে। এই আসল খেলোয়াড় বাংলাদেশ করে দিল, কারণ ওই ডামি খেলোয়াড়দের নেতারা, যারা এই মাইকে এসে বলতো, খেলা হবে। আমি শুনতাম, যে তাদেরকে ধরে রাখার জন্য দুই-তিনজন ডানে, বামে, পিছে দাঁড় করে রাখত, নাহলে নিজেই পড়ে যেত।
এই সমস্ত কৃত্রিম কথা বলে, বাংলাদেশটাই একটা কৃত্রিম রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। একটা অঙ্গরাজ্যে পরিণত করেছে। এটাকে একটা সেবাদাস রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। আমরা ভবিষ্যতে আমাদের এই মাতৃভূমি বাংলাদেশকে মাথা উঁচু করে, আজকে আপনারা যেমন শিরদাঁড়া দিয়ে, আপনাদের প্রতিভা, আপনাদের শক্তি বিকশিত করে, এখানে একটা বিনোদন এবং ঐক্য গড়ে তুলেছেন, টিম স্পিরিট তৈরি করেছেন। আমরা গোটা বাংলাদেশে ১৮ কোটি মানুষের মধ্যে জাতীয় ঐক্য টিম স্পিরিট তৈরি করে, আমরা ওরকম খেলা হবে চিৎকার না করে, বাস্তবে গোটা পৃথিবীর মাঝে আমাদের বাংলাদেশকে, আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড় করাবো, ইনশাল্লাহ।
এটা যদি আজকে এখান থেকে আমরা ধারণ করতে পারি, তাহলে এই খেলাই হবে, যেটা আপনারা স্লোগান দিয়েছেন। আমাদের এই ক্রিকেট, আমাদের এই খেলা, আমাদের সংস্কৃতি। এটা হবে রাষ্ট্র বিনির্মাণের একটা কাঠামো, এটা হবে একটা ভিত্তি। সেই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে, আবারো যারা খেলায় একদম শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অংশগ্রহণ করে ধৈর্য ধরেছেন, প্রতিভা বিকাশ করেছেন, বিকশিত করতে অপরকে সাহস দিয়েছেন, উৎসাহিত-অনুপ্রাণিত করেছেন, তাদের সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ, কৃতজ্ঞতা ।
সূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=hSrSW9PB3bc
মো. মহিউদ্দিন