ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

ঢাবি শিবির সভাপতি এসএম ফরহাদ

ক্রেডিটের রাজনীতির পেছনে দৌড়ায় না ছাত্রশিবির

প্রকাশিত: ২২:১০, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫; আপডেট: ০০:৫৪, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

ক্রেডিটের রাজনীতির পেছনে দৌড়ায় না ছাত্রশিবির

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এসএম ফরহাদ/ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি চ্যানেল ২৪ আয়োজিত ‘রাষ্ট্র মেরামতের চ্যালেঞ্জ নিয়ে GEN-Z’ নামে এক বির্তক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এসএম ফরহাদ। সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহ, অভ্যূত্থানিক রাজনীতি এবং বিগত ফ্যাস্টিস্ট আমলে ছাত্রশিবিরের উপর নির্যাতন, নিপীড়ন তুলে ধরে বর্তমান রাজনীতি কোন দিকে যাচ্ছে, এ নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। 

তিনি বলেন, সংবিধান একেবারে পুনর্লিখন করা যায়, যদি পুরোপুরি চেঞ্জ করে দেওয়া যায়, সবচেয়ে ভালো হতো। এখানে আমাদের সহযোগিতা দরকার। দুই সপ্তাহের মধ্যে আমাদের ১৪৪ টা ইউনিটের কমিটি হয়ে যাবে। নেভার-এভার কখনোই দেখেননি এবং দেখবেন না যে, ইন্টারনাল কোন সংঘর্ষ, কারো কুশপুত্তলিকা দাহ, ককটেল বিস্ফোরণ, এক গ্রুপ-এক গ্রুপের বিরুদ্ধে, কখনোই দেখবেন না, নেভার-এভার, এটা হয় নাই, সামনেও হবে না।

নাম্বার ওয়ান প্রবলেমটা হচ্ছে, ক্রেডিট নিতে গিয়ে। সাপোজ, শহীদ হলো ২০০০, আমি যখন দাবি করব, আমার ১০০, এতজন আমার দলের, আরেক দল দাবি করবে, এতজন আমার দলের, আরেক দল দাবি করবে, এতজন আমার দলের। পরবর্তীতে এসে কিছু তো থাকবে, কোন দলের না, বড় সংখ্যক, তাদেরকে কে ওন করবে?

সেদিক থেকে আমাদের ছাত্রশিবিরের স্ট্যান্ড ছিল, সকল শহীদকে আমরা ওন করবো। সবার বাড়ি বাড়ি যাব। সবাই সবাইকে ওন করবো। সবাইকে, আমরা এটাকে, আমাদের অন্যান্য সাংগঠনিক শহীদকে যেভাবে আমরা ধারণ করি বুকে, সেভাবে ধারণ করতে থাকবো।

আমাদের সদ্য, এই যে কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন হলো। আমাদের ছাত্রদলের যিনি, ভাইয়েরা বলেন, যে শহীদ ওয়াসিম, ওয়াসিমের পিতা কিন্তু আমাদের প্রোগ্রামে আসছে, আমরা কিন্তু তাদেরকেও ওন করি। সকল দল, সকল শহীদকে ওন করার মধ্যে যদি, সকল দলকে ওন করা, আমরা শুরুতে পারতাম, এই সংঘর্ষ তৈরি হতো না।

দ্বিতীয়ত, হিস্ট্রিতে, এই যে লাস্ট, আমাদের অভ্যুত্থানিক হিস্ট্রি বর্ণনা করা হচ্ছে, এখানে একটা ফেব্রিকেটেড হিস্ট্রি, এখানে একটা হিস্টরিক্যাল করাপশন তৈরি হচ্ছিল। অথচ আমি তো জানি, নয় দফার ঘোষণা আমার, আব্দুল কাদের তো নিশ্চয়ই তখন বলেছে, যে নয় দফার সাথে, আমার সাথে যোগাযোগ হয়েছিল।

রাষ্ট্রপতিকে যে স্মারকলিপি দেওয়া, আমি নিজে রেডি করে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি এসে প্রদান, ৬৪ জেলায় পৌঁছায়ে দিছিলাম, মানে ৬৪ জেলায় আমার লোকদের কাছে পৌঁছে দিয়ে, সেটা নিশ্চিত করেছি যাতে ডিসি বরাবর পৌঁছায় এবং রাষ্ট্রপতি বরাবর, মাহফুজ ভাইরা এটা সাক্ষ্য দিবেন নিশ্চয়ই। তারপর, পরবর্তী রিমেম্বারিং আওয়ার হিরোস প্রোগ্রাম, মার্চ ফর জাস্টিস, প্রত্যেকটা সিদ্ধান্ত, প্রেস রিলিজ আমার, আমাদের হাত দিয়ে টাইপ করে পাঠানো।

এভাবে করে প্রত্যেকটা প্রোগ্রাম থাকবে, আমরা কিন্তু ক্রেডিটের রাজনীতিতে যাই নাই, কেন যাই নাই?

কারণ, এই ক্রেডিট নিতে গেলে, এই যে, যেই প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা, কওমি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা, কৃষকেরা, শ্রমিকেরা ও শিশুরা জীবন দিল, এখানে ভাগ হইতে থাকবে।

আমার মনে হয়, এই হিস্ট্রিটা সত্য বর্ণনা থাকবে এবং ক্রেডিটের রাজনীতি থেকে সরে আসতে পারলে, আমরা, প্রধান উপদেষ্টা, উনি যে প্রত্যাশা করছেন, জাতীয় প্রয়োজনে সব দল একসাথে থাকবে, এটা থাকতো আর কি। এই গ্যাপটা, আমাদের কিছু রাজনৈতিক সংগঠন থেকে যেমন হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জায়গা থেকে হয়েছে।

এখানে আমাদের অবস্থান হচ্ছে, সংবিধানের ব্যাপারে সবচেয়ে ভালো হতো, যদি এটিকে, সংবিধান একেবারে পুনর্লিখন করা যায়, পুরোপুরি চেঞ্জ করে দেওয়া যায়, সবচেয়ে ভালো হতো। এখানে আমাদের সহযোগিতা দরকার। রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা দরকার, পারস্পরিকের সহায়তায় ।

আমরা দেখেছি পাঁচ তারিখের পরে, যখন আমরা জাতীয় সরকারের কথা চিন্তা করা হয় বা আরেকটা ফরমেট চিন্তা করা হয়েছিল, তখন কিছু কিছু রাজনৈতিক দল, তখন সহযোগিতার আশ্বাসটুকু আমরা পাইনি, সহযোগিতা পাইনি। পরবর্তীতে, তখন আরো বিভিন্ন ইস্যুতে, রাজনৈতিক দলগুলোর সহযোগিতা না পেয়ে, আমাদের এই ক্রাইসিসটা তৈরি হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এখানে বলে রাখা ভালো, শুধু এটাতে না, ইতিপূর্বে আন্দোলনের বিভিন্ন ধারা-গতিধারায়, কেন যেন বিভিন্ন দলগুলো, তাদের ইন্টেনশন টেস্ট করে যে, আমি আদৌ এখানে এঙ্গেজ হবো কিনা। তার চাইতে ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট যদি ফোকাস থাকে, আমার মনে হয়, এটা চেঞ্জ করার সুযোগ আছে।

দ্বিতীয়ত, এই যে অডিয়েন্সরা যেটা বলল, প্রশ্নকর্তারা, নিঃসন্দেহে, বাংলাদেশের বর্তমান যে সংবিধান, ৭২ এর সংবিধান, এখানে যে মেইন প্রিন্সিপাল, যে চারটা প্রিন্সিপাল, এটা জনগণের যে সঠিক রিপ্রেজেন্টেশন, সেটা হয় না। এখানে অনেকগুলো ধারা যথেষ্ট প্রবলেমেটিক। এটা সবার সংস্কার প্রস্থাবনা সামাজিকভাবে একসাথে নিয়ে, একেবারে পুনর্লিখন হওয়াটাই, মানে আমরা বেটার, সাজেস্ট করি।

আমার সংগঠন ছাত্রশিবিরকে আপনি এনালাইসিস করবেন, দুইটা ভাবে করতে পারেন।

একটা হচ্ছে ইন্টার্নাল স্ট্রাকচার কি, ইন্টার্নাল অ্যাপ্রোচ কি, এবং ইন্টার্নাল তাদের অ্যাক্টিভিটিস কি?

আরেকটা হচ্ছে, এক্সটার্নাল এক্সপোজার কি?

ইন্টার্নাল ইস্যুতে আসি, সাপোজ, ছাত্রশিবিরের লাস্ট, ১ তারিখ থেকে দুই সপ্তাহের মধ্যে, আমাদের ১৪৪ টা ইউনিটের কমিটি হয়ে যাবে। নেভার-এভার কখনোই দেখেননি এবং দেখবেন না যে, ইন্টারনাল কোন সংঘর্ষ, কারো কুশপুত্তলিকা দাহ, ককটেল বিস্ফোরণ, এক গ্রুপ-এক গ্রুপের বিরুদ্ধে, কখনোই দেখবেন না, নেভার-এভার, এটা হয় নাই, সামনেও হবে না। কারণ, আমাদের ইন্টার্নাল স্ট্রাকচারটা এভাবে ওয়েল ডেকোরেট।

আবার দেখবেন, এক্সটার্নাল এক্সপোজার কি?

সাপোজ, ছাত্রশিবিরকে আপনি টেস্ট করবেন দুইটা ভাবে।

এক থেকে পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত শিবির কি করছে, শিক্ষার্থীদের জন্য অথবা লাস্ট তিন-চার মাসে কি করছে?

আপনি দেখবেন, আমরা সময় পাই নাই, এর মধ্যেও আমরা চেষ্টা করছি, একটা সাইন্স ফেস্ট করার। এটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল, ক্ষুদে বিজ্ঞানীদেরকে নিয়ে এসে, তাদেরকে সুযোগ প্রদানের। রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল, ‘৩৬’-কে, মানে এটাকে ধারণ করা, আমরা এটার জন্য আলাদা করে, অনেক বড় পরিসরে চিত্র প্রদর্শন করার চেষ্টা করছি। রাষ্ট্রের দায়িত্ব ছিল, শিক্ষার্থীদেরকে রেডি করা। আমরা এখন চিন্তা করছি, সামনে জাতীয় বির্তক উৎসব কি করে, কিভাবে করা যায়।

সম্প্রতি দেখছি, বাংলাদেশের হিস্ট্রিতে খুব কমই, জাতীয় বড় বড় বির্তক উৎসব হয়েছে, যেটা খুব জাতীয়ভাবে ফেস্টিভাল হয়েছে। আমরা চিন্তা করছি, কিভাবে এটা করা যায়, আমাদের এখন অলমোস্ট মান্থলি ২০ টা ম্যাগাজিন বের হয়,  যাতে লেখক তৈরি করা যায়।

এক থেকে পাঁচ সপ্তাহ পর্যন্ত আমরা এভাবে করে, স্কুল পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের, কিভাবে ক্ষুদে লেখক তৈরি করা যায়, তাদেরকে কিভাবে বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী করা যায়, তাদেরকে কিভাবে প্রগতিশীলতার চিন্তার মধ্য দিয়ে, তাদেরকে এই জাতির জন্য রেডি করা যায়, এ চিন্তা আমরা করতাম।

কিন্তু আমাদের করতে দেয় নাই, এই যে ২০০৯ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমাদেরকে চাপিয়ে রাখার চেষ্টা করেছে, তাও আমরা দমে যাই নাই। আমাদেরকে হত্যা করা হয়েছে, আমাদের পরপর, কেন্দ্রীয় সভাপতিকে উঠায় নিয়ে গিয়ে রিমান্ডে দেওয়া হয়েছে, আমাদের সবগুলো কেন্দ্রীয় অফিস থেকে থানা অফিস পর্যন্ত, সব অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। একটা স্টাডি সার্কেল উঠে নিয়ে গিয়ে বলেছে, অস্ত্র মামলা, অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার, একটা স্টাডি সার্কেল উঠায় নিয়ে গিয়ে, ইয়াবাসহ গ্রেফতার, এগুলা দেখানোর চেষ্টা করেছে ।

তা সত্ত্বেও, নুরুল হক নূর স্বীকার করবেন, সর্বশেষ ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলন, যে ফার্স্ট টু লাস্ট ছাত্রশিবিরের চমৎকার সমন্বয় হয়েছে, এবং মাহফুজ ভাই, নাহিদ ভাইরা তা স্বীকার করবেন।

৫ই জুন থেকে ৫ই আগস্ট পর্যন্ত, প্রত্যেকটা কর্মসূচি, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, এক্সিকিউশনে, ছাত্রশিবির, তার মন-প্রাণ উজার করে দিয়ে, ক্রেডিটের বাহিরে চেষ্টা করেছে। তবে আমরা হতাশ হয়েছি, শেষের যে ইতিহাস বর্ণনা এবং ক্রেডিটের রাজনীতি। এখান থেকে আমরা পরিচালিত হচ্ছি!

 

তথ্যসূত্র: https://www.youtube.com/watch?v=n2IROAyhnfI

মো. মহিউদ্দিন

×