ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১ মাঘ ১৪৩১

৩ কায়দায় শীঘ্রই ঘোষণাপত্র

আবদুর রহিম

প্রকাশিত: ০১:৫৮, ১৪ জানুয়ারি ২০২৫

৩ কায়দায় শীঘ্রই ঘোষণাপত্র

জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র নিয়ে চলছে টানাপোড়েন। রক্তভেজা বিজয়ের পাঁচ মাসেও আসেনি ঘোষণা। ৩১ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ঘোষণাপত্র ডেটলাইন দিয়ে হোঁচট খায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। ঘোষণার দায়ভার কাঁধে নেয় ড. ইউনুছ সরকার, বলা হয় সরকারের পক্ষ থেকেই ঘোষণাপত্র আসবে। শিক্ষার্থীরাও ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আল্টিমেটাম দিয়ে রাজপথে নামেন। একটা অংশ ৬ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত সারাদেশে লিফলেট বিতরণ, সমাবেশ ও জনসংযোগের মাধ্যমে জনসমর্থনের কাজে নেমে পড়েন। আরেকটা অংশ পর্দার আড়ালে রাজনৈতিক দলগুলোর দরবারে বৈঠকে বসেন। এর মধ্যেই হঠাৎ ইউটার্ন সরকারের।

 

গত ৯ জানুয়ারি ঘোষণা দেওয়া হয় জুলাই ঘোষণাপত্র সরকার দেবে না, ফ্যাসিলিটেট করবে। জনমনে প্রশ্ন উঠে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা তাহলে কে দেবে? নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, রাজনৈতিক বাধা এবং নানা ষড়যন্ত্রের মুখে থেকেও ৩ কায়দায় ঘোষণাপত্রের প্রস্তুতি নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও নাগরিক কমিটি। শীঘ্রই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বৃহৎ কর্মসূচীর মাধ্যমে ঘোষণাপত্র আসছে। 

বিশেষজ্ঞরা বলছেন,স্বাধীনতার ঘোষণার একমাস পরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল একটি ঘোষণাপত্র দেওয়া হয়। সেটির ওপর ভিত্তি করে সংবিধান প্রণয়নের আগ পর্যন্ত দেশ পরিচালনাও হয়েছে। সেই নজিরের ওপর ভিত্তি করে এবারও সেটি করা যেতো। সে ক্ষেত্রে এবার কিছুটা বিলম্ব ঘটেছে। ছাত্রদের উচিৎ ছিলো আরও আগেই ঘোষণা দেওয়ার। তবে এখনো সেই সময় ফুরিয়ে যায়নি। যতই দিন যাচ্ছে ততই রাজনৈতিক বাধার দৃশ্য স্পষ্ট হচ্ছে। এই অভিযোগ ছাত্রদের মধ্যে থেকেও এসেছে। ঘোষণাপত্র নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে।

 

বিশ্বস্ত ছাত্রনেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যে কোনো মূল্য ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে কঠোর সিদ্ধান্তে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ইতিমধ্যে  মাঠ পর্যায়ে প্রচারণা, রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক এবং বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করে তিনটা পথ খুঁজে পেয়েছেন। এর মধ্যে প্রথমত, ঘোষণাপত্রের অধিকার রাখে শহীদ এবং আহত ব্যাক্তিরা। মূলত তারাই চব্বিশের বিজয়ের মসনদের মালিক। দ্বিতীয়ত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তারাই সকল দলমত ব্যাক্তিদের এক ব্যানারে আনতে পেরেছেন। ঘোষণাপত্র অধিকারে প্রথম সারির বিপ্লবীরাই অন্যতম। শহীদ পরিবার , আহত ব্যাক্তিরা যখনই ইচ্ছে পোষণ করবেন তাদেরকে সঙ্গে নিয়ে ঘোষণাপত্র পাঠ করা হবে। এরপর রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শও প্রয়োজন রয়েছে। বিপ্লবীরা ইচ্ছে পোষণ করলে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতও গুরুত্ব দিতে পারেন। যাদের নেতৃত্বে সরকার গঠন তাদের পক্ষ থেকে ঘোষণাপত্র পাঠের পর তা বাস্তবায়ন করাও অন্তর্বর্তী সরকারের জন্য অপরিহার্য হয়ে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। 

 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়- ঘোষণাপত্রে সংবিধান ইস্যুতে রাজনৈতিক দলগুলো থেকে মতানৈক্য তৈরি হয়েছে। গণপরিষদ নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান পুনর্লিখন হবে, নাকি পরবর্তী নির্বাচিত সংসদ সংশোধনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার করবে, তা নিয়ে রাজনীতিতে জটিলতা দেখে দেয়। সম্প্রতি সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে বিদ্যমান সংবিধান সংশোধন নয়; বরং সংবিধান পুনর্লিখনের প্রস্তাব দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি। তাদের প্রস্তাব, নির্বাচনের মাধ্যমে গণপরিষদ গঠন করতে হবে। সেখানেই নতুন সংবিধান অনুমোদন করা হবে। বিএনপি ও বামপন্থিদের বড় একটি অংশ সংবিধান বাতিল বা সংস্কারের বিপক্ষে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন। অন্যদিকে ইসলামপন্থিদের বড় একটি অংশ সংবিধান বাতিল বা পুনর্লিখন নিয়ে অনঢ অবস্থান নিয়েছেন। এ নিয়ে রাজনীতিতে চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য।   

 

এদিকে, গত ৩১ ডিসেম্বর শহীদ মিনারে জুলাইয়ের শহীদ পরিবার এবং আহত যোদ্ধারা ঘোষণা দিয়েছেন নতুন সংবিধান তৈরি করতে বাংলাদেশে আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, তাড়াহুড়ো করে নির্বাচনের জন্য দুই হাজার মানুষ জীবন দেয়নি। শুধু নির্বাচনের জন্য প্রায় ২৫ হাজার মানুষ গুলিতে পঙ্গু হয়নি। মানুষ স্বৈরাচারের গুলির সামনে দাঁড়িয়ে একটি নতুন বাংলাদেশ পাওয়ার জন্য জীবন দিয়েছেন। ৭২ এর সংবিধানে অধিকারের কথা নেই। তারা সেই সংবিধান চান না। ৭২ এর সংবিধান বাতিল করতে হবে। নতুন করে সংবিধান লিখতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলায় হেফাজত হত্যাকান্ড ,সবশেষ চব্বিশের জুলাইয়ে গণহহত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত  আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। আওয়ামী লীগের বিচারের আগে দেশে কোনো ভোট হবে না। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র জারি করতে সরকারকে ডেটলাইন জানিয়ে দেন তারা। 

 

সামগ্রিক বিষয় নিয়ে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সাবেক ডিন এবং ইংরেজি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. সদরুল আমিন জনকন্ঠকে বলেছেন, আমরা যে ঘোষণাপত্রের কথা শুনতেছি সেটা আরও আগে আশা উচিৎ ছিলো। আমরা এখনো জানি না , ঘোষণাপত্রে কী থাকছে , কী আসছে । জানতে পারলে হয়তো তখন এ নিয়ে ভালো কিছু বলা যেতো। এখন এটি সরকারের পক্ষে থেকে আসুক কিংবা ছাত্রদের পক্ষ থেকে আসুক,  দেশের এমন একটা অভূতপূর্ব বিজয় পরবর্তী ঘোষণাপত্র আসা উচিৎ। ঘোষণাপত্র বিষয়ে জনগণকে জানানো উচিৎ, অবহিত করা উচিৎ বলে আমি মনে করছি। এখন যে পক্ষ থেকেই আসুক সবাইকে নিয়ে সবার সাথে আলোচনা করেই খুব শীঘ্রই এই ঘোষণাপত্র আসার ঘোষণা দেওয়া দরকার। 

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসুদ বলেছেন,জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রকাশ নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে। ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের  ঘোষণাপত্র প্রকাশে আমাদের পক্ষ থেকে সরকারকে একটা আলটিমেটাম দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করি, এই সময়ের মধ্যেই সরকার এটা ঘোষণা করবে। কিন্তু এ ঘোষণাপত্র যাতে না হয় সেজন্য বিভিন্ন জায়গা থেকে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। আমরা এ নিয়ে শীঘ্রই আলোচনা করে আমাদের সিদ্ধান্ত জানাবো। 

 

এ বিষয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন জনকণ্ঠকে বলেছেন , ছাত্রদের একটা অংশ ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছে কিন্তু পরে দেখলাম সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তারাই ঘোষণাপত্র দেবেন। আসলে ছাত্রদের একটা অংশ কী ঘোষণাপত্র দেবে বা সরকার কী দেবে আমরা এখনো তা জানি না । এখন পর্যন্ত সরকার আমাদের সাথে আলোচনা করেনি ,আলোচনার জন্য ডাকেনি । অন্যদিকে ছাত্ররাও কী  দিবে সেটাও জানি না।  আমরা দেখছি আগে যে ছাত্রসংগঠনগুলো ঐক্যবদ্ধ ছিলো সে ঐক্যবদ্ধ জায়গা কিন্তু এখন নেই। অনেকে আলাদা হয়ে গেছে। ছাত্রদল আলাদা , ছাত্রশিবির আলাদা ,বাম রাজনৈতিক দলগুলো আলাদা। এখন তারাও আলাদা কিছু দেবে কিনা তাওতো জানি না। সব মিলিয়ে এ নিয়ে কোন খসড়া পাওয়ার আগে সরকারের সাথে আলোচনার আগে মন্তব্য করা কঠিন। কারা কি দিচ্ছে, দেবে সেটা বলাও দুষ্কর। 

 

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন জনকন্ঠকে বলেছেন, গত ৩১ ডিসেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র ঘোষণার সকল প্রস্তুতি ছিলো। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা এসেছে তারাই দেবে- তাই সেটি আর হয়নি। আমরা এখনো মনে করছি এই ঘোষণাপত্র যাদের পক্ষ থেকে আসা উচিৎ সেখানে তিনটা সেক্টরের ভূমিকা সবচেয়ে বেশী। এক, যাদের নেতৃত্বে স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে , সেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। তাদের নেতৃত্বেই দলমত সকল শ্রেনী পেশার মানুষ একত্রিত হয়ে রাজপথে নেমেছে। দ্বিতীয়ত,  এই আন্দোলনে প্রায় দুই হাজার শহীদ হয়েছেন তাদের পরিবার রয়েছেন, ২৫ হাজার আহত হয়েছে । ঘোষণাপত্রে তাদের চাওয়া চাহিদা সর্বাধিক অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত বলে মনে করছি। তাদের ত্যাগের বিনিময়ে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। তৃতীয়ত, রাজনৈতিক দল গুলোরও একই প্লাটফর্মে আসা উচিত। সবাইকে যুক্ত রেখে ২০২৪ এর ছাত্র-জনতার ত্যাগ এবং যে কারণে অদ্ভুত্থান হয়েছে যে সংকটে অভ্যুত্থান হয়েছে সেগুলো পরিশুদ্ধ করা উচিত। 

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাজমুল হাসান জনকণ্ঠকে বলেন, ৫ তারিখ গণঅভ্যুত্থানের পরপরই আমাদের ঘোষণাপত্র দেওয়ার কথা ছিলো। সেটি দিতে আমাদের দেরি হয়ে গেছে। আমরা মনে করেছিলাম সরকারের পক্ষ থেকে একটা ঘোষণাপত্র আসবে কিন্তু সেটিও সরকার দেয়নি। আবার আমরা যখন ৩১ তারিখ ঘোষণা দিতে চেয়েছিলাম তখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে , তারা ঘোষণাপত্র দেবেন। এখন তারা যদি ঘোষণাপত্র দিতে ব্যর্থ হয় রাজনৈতিক দলগুলো বাধা তৈরি করে তাহলে ছাত্র-জনতাকে সঙ্গে নিয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘোষণাপত্র দেবেন। দুই হাজার শহীদ, ২৫ হাজার আহত ব্যক্তিদের স্বপ্ন পূরণ করবেন। যত ধরনের বাঁধাই আসুক সকল বাঁধা উপেক্ষা করে ২৪ এর চেতনা বাস্তবায়নে ঘোষণাপত্র বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে।  

 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সিনথিয়া জাহিন আয়েশা জনকণ্ঠকে বলেছেন, গত ৩১ তারিখ আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়ে ঘোষণাপত্র দিতে চেয়েছিলাম। আমাদের সকল শহীদ পরিবার, গুলিতে আহত ব্যক্তিরা সারাদেশ থেকে আসার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সেই মুহূর্তে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তারাই ঘোষণাপত্র দেবেন। আমরা ঐদিন রাত বারোটা পর্যন্ত সকল ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছিলাম তখন সরকারের পক্ষ থেকে কয়েকজন ব্যক্তি আমাদের বারবার অনুরোধ করেছেন যাতে আমরা ওইদিন ঘোষণাপত্র না দিই। তাদের অনুরোধে আমরা ঘোষণাপত্র স্থগিত করে ঐক্যের কর্মসূচি দিয়েছিলাম। এখন সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে তারা ঘোষণাপত্র দেবেন না। আমি বলব এটা এক ধরনের প্রতারণা আমাদের সাথে। দুই হাজার শহীদ পরিবার,  ২৫ হাজার আহত ব্যক্তিদের স্বপ্ন বাস্তবায়নে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ছাত্র জনতাকে সাথে নিয়ে শীগ্রই ঘোষণাপত্র দেবেন। আমাদের সপ্তাহ ব্যাপী লিফলেট বিতরণসহ জনসংযোগ কর্মসূচি শেষ হয়েছে। আমরা শিগ্রই এ নিয়ে বৈঠক করব । ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নে আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব। কারা ঘোষণাপত্র পাঠ করবেন শীগ্রই আমাদের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত আসবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সকল রাজনৈতিক দল সকল মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন। এখন শহীদ পরিবার এবং আহত ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে ঘোষণাপত্র ঘোষণা দেওয়ার একমাত্র অধিকার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিপ্লবীরাই রাখেন।

 

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদি জনকন্ঠকে জনকণ্ঠকে বলেছেন, আমরা পুরো বিষয়টা পর্যবেক্ষণ করতেছি। ঘোষণাপত্রের বিষয় নিয়ে মানুষের কাছে গিয়েছি। মানুষের সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছি। এটা আমাদের জন্য অনেক ভালো হয়েছে। মাঠ পর্যায় থেকে জনসমর্থন পেয়েছি। আমরা আশা করছি ১৫ তারিখের মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণাপত্র আসবে। না আসলে ছাত্রজনতা আবারও আন্দোলনে নামবেন। আমাদের করনীয় বিষয় কী, সামগ্রিক সকল বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। আশা করছি বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের ব্যানারে শীঘ্রই এ নিয়ে দিক নির্দেশনা আসবে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করে ঘোষণাপত্র দেওয়া হবে। শহীদ এবং আহতদের ত্যাগে যে জন্য এই দ্বিতীয় বিজয় হয়েছে সেটির উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করা হবে। 

 

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে হাত হারানো আরজে আতিকুল গাজী বলেছেন, আমরা নির্বাচনের জন্য আন্দোলন করিনি। নির্বাচনের জন্য রাজপথে রক্ত দেইনি। কেউ যদি যদি সংস্কার ছাড়াই ক্ষমতা চায় তাহলে ১৬০০ শহিদ ভাইয়ের জীবন ফিরিয়ে দিতে হবে। আমার ২২ হাজার আহত ভাইয়ের আগের সুস্থ জীবন ফিরিয়ে দিতে, আমার হাত ফিরিয়ে দিতে হবে। তা যদি সম্ভব না হয় তাহলে আগে সংস্কার শেষ তারপর নির্বাচন হবে। একই সঙ্গে বলতে চাই আরও আগেই আমাদের ঘোষণাপত্র দেওয়া উচিৎ ছিলো। আমাদের কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। আমাদের ত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে। আমাদের যারা শহীদ হয়েছে, যারা আহত হয়েছে, যারা রাজপথে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের পক্ষ থেকেই খুব শীঘ্রই ঘোষণাপত্র আসবে।

তাবিব

×