আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, “একটি বিপ্লবের মাধ্যমে আমরা একটি নতুন দেশ পেয়েছি। কিন্তু সেই বিপ্লবের চেতনা সরকার ও বিএনপি কেউই ধারণ করতে পারেনি। সরকারের উচিত ছিল ক্ষমতায় এসে একটি শুদ্ধি অভিযান পরিচালনা করা। কিন্তু তার পরিবর্তে হঠাৎ পণ্যের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধি করা হয়েছে। ভ্যাট বাড়ানোর আগে সঠিক পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন ছিল, যাতে গরিব মানুষের ওপর এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব না পড়ে।”
তিনি আরও বলেন, “ওষুধের ওপর ভ্যাট বৃদ্ধির কোনো যৌক্তিকতা নেই। এটি প্রমাণ করে যে, বিপ্লবের চেতনা এই সরকার ধারণ করতে ব্যর্থ। এগুলো সরকারের দুর্বলতা।”
শনিবার (১১ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর অ্যাডভোকেট তারেক স্মৃতি অডিটোরিয়ামে সামাজিক সংগঠন আস-সিরাজ আয়োজিত একটি সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল ‘২০১৩ সালের শাপলা চত্বর থেকে ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থান: শহীদদের স্মরণ, বিপ্লবোত্তর আকাঙ্ক্ষা ও সম্ভাবনা।’
ড. মাহমুদুর রহমান আরও বলেন, “২০১৩ সালে যারা শহীদ হয়েছেন, তাদের আন্দোলন অনেকেই ব্যর্থ ভেবেছিলেন। কিন্তু তাদের সেই সংগ্রামের বিজয় ২০২৪ সালে এসেছে, যা তাদের পরবর্তী প্রজন্মের মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে।”
তিনি বলেন, “শেখ হাসিনা পালিয়ে গেলেও দেশে ফ্যাসিবাদ শেষ হয়নি। কারণ যারা তাকে ফ্যাসিবাদী শাসন বজায় রাখতে সহায়তা করেছে, তারা এখন অন্য দলের পৃষ্ঠপোষকতায় থাকবে। এই শ্রেণিকে প্রতিহত করতে হবে। বিভাজনের রাজনীতিকে সমাপ্ত করে ঐক্যবদ্ধ হওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে কোনো বিদেশি শক্তির প্রভাব পড়তে দেওয়া যাবে না।”
আস-সিরাজ ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা ও চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুফতি মুহিববুল্লাহর সভাপতিত্বে সেমিনারে বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম। বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য লুৎফর রহমান, জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক মাওলানা আশরাফ মাহাদী, ড. আতিক মুজাহিদ এবং বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
সেমিনারে শহীদ পরিবারের ১৫ সদস্যকে অনুদান বিতরণ করা হয়। পরে জাগরণী সংগীত পরিবেশনার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
রাজু