জামায়াতের ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন
৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসীবাদের বিদায় এবং নতুন বাংলাদেশ গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে; তাই এই সুযোগকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ এবং অবক্ষয়মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। তিনি আজ বিকাল ৩টায় রাজধানীর উত্তরার ৭নং সেক্টরের শহীদ মুগ্ধ মঞ্চে উত্তরা পশ্চিম থানা জামায়াত আয়োজিত এক সহযোগি সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
থানা আমীর মাজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি ফিরোজ আলমের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য জামাল উদ্দিন, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ। বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য মাহবুবুল আলম, এডভোকেট ইব্রাহিম খলিল,সাবেক ঢাকা মহানগরী উত্তর শিবিরের সাবেক সভাপতি ব্যারিস্টার আ.রহমান প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ফ্যাসীবাদীদের পতন হলেও তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ব্যর্থ করার জন্য একেবারে উঠে পড়ে লেগেছে। কিন্তু এসব ষড়যন্ত্রে সরকারকে ভয় পেলে চলবে না বরং পতিত স্বৈরাচারের সকল দেশ ও জাতিস্বত্ত্ব বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধভাবে ঐতিহাসিক ও বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করতে হবে। সরকারের প্রধান দায়িত্ব হলো জনমনে স্বস্তি ফিরিয়ে আনা। তাদেরকে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ওপর বিশেষভাবে নজর দিতে হবে। দ্রব্যমূল্য সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে আনাকে দিতে হবে অগ্রাধিকার।
যারা আগামীতে ক্ষমতায় যেতে চান তাদেরকে বক্তব্য দেওয়ার ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও সতর্ককতা অবলম্বন করতে হবে। এমন কথা বলা যাবে না যাবে না যাতে তাদেরকে জনগণ ফ্যাসীবাদের দোসর মনে না করেন। তিনি বিভেদের রাজনীতি পরিহার জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহবান জানান।
তিনি বলেন, অনেক ত্যাগ ও কোরবানীর মাধ্যমে ছাত্র-জনতা ফ্যাসীবাদী অপশক্তিকে বিদায় করছে। জনগণ দেশে আর ফ্যাসীবাদের পদধ্বনি দেখতে চায় না। তাই ফ্যাসীবাদের উত্থান রুখতেই জনগণ আগামী নির্বাচনে দেখে শুনে ভোট প্রদান করবেন। তারা অবশ্যই প্রার্থীদের অতীত পর্যালোচনা করে দেখবেন। নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচিত হওয়ার পর তাদের সম্পদের স্থিতি কতখানি তা তারা বিবেচনায় নিবেন।
আগামীতে ভোট দেওয়ার মানদণ্ড হবে প্রার্থীর সততা, যোগ্যতা, দেশপ্রেম ও তাকওয়া। যারা দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর ঈমান-আকিদাহ, বোধ-বিশ^স, আগেব-অনুভূতি এবং তাহজিব- তামুদ্দনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবেন জনগণ আগামীতে তাদের হাতে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেবে। তিনি আগামী দিনে জাতির নেতৃত্ব প্রদান করতে রাজনীতিবিদদের প্রস্তুতি গ্রহণ করার আহবান জানান।
মহানগরী আমীর বলেন, জামায়াত একটি গণমুখী ও আদর্শবাদী রাজনৈতিক সংগঠন। আমরা যেনতেনভাবে ক্ষমতায় যেতে চাইনা বরং আগামী দিনে দেশ ও জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যোগ্যতর নেতৃত্বের হাতেই ক্ষমতা অর্পন করতে চাই। আমরা এমন তাওকাবান নেতৃত্ব তৈরি করতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি যারা ঘুষ, দুর্নীতি , চাঁদাবাজী, টেন্ডারবাজী সহ কোন প্রকার অবক্ষয়ের সাথে জড়িত হবেন না।
আমরা ক্ষমতায় গেলে শিক্ষাক্ষেত্রে ইতিবাচক সংস্কারের পদক্ষেপ গ্রহণ করবো। শিশু শ্রেণি থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত সকল শ্রেণিতে পবিত্র কুরআনের তরজমা ও তেলাওয়াত শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি করতে পারলে আগামী দিনের নেতৃত্ব আর কোনভাবে অপরাধ প্রবণতার সাথে জড়িত হবেন না। তিনি সেই ইনসাফপূর্ণ ও অবক্ষয়মুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় দলমত নির্বিশেষে সকলকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহবান জানান।