ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১

সীমান্তে বিএসএফ বাংলাদেশিদের জীবনের মূল্য দেয় না

প্রকাশিত: ০১:০৯, ৯ জানুয়ারি ২০২৫

সীমান্তে বিএসএফ বাংলাদেশিদের জীবনের মূল্য দেয় না

ফেলানির যে ছবি আজও সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে, সেটি ছিল একটি শোকাবহ এবং অবর্ণনীয় দৃশ্য। বাংলাদেশের সীমান্তে বিএসএফের হাতে যে নির্মমভাবে ফেলানির জীবন শেষ হয়েছিল, তা পৃথিবীর অন্য কোনো দেশে ঘটলেও এমন মানবিক বিপর্যয় দেখতে পেতাম না, বিশেষ করে ফিলিস্তিন ছাড়া। যে হারে ফিলিস্তিনে শিশু কিশোরী হত্যা করা হয়েছে, ঠিক তেমনি বাংলাদেশের সীমান্তে ফেলানির মৃত্যুর ঘটনা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘনের এক দুঃখজনক ছবি।

ফেলানির মৃত্যু নিয়ে যে চিত্রটি বিশ্বের কাছে পৌঁছেছে, সেটি ২০১১ সালে বাংলাদেশের পত্রিকা 'আমার দেশ' থেকেই প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। অনেকেই জানেন না যে, সে সময় বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে অন্যান্য পত্রিকাগুলো এই ছবি ছাপাতে সাহস করেনি। তবে, 'আমার দেশ' প্রথমে এটি ছাপিয়ে বিশ্বের সামনে এনে ছিলো।

বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের দ্বারা অনবরত হামলা ও নিরীহ মানুষের হত্যার ঘটনা নতুন কিছু নয়। সীমান্তের কৃষকদের যাদের জীবনপ্রবাহ সীমান্তের মধ্যেই স্থাপিত, তারাও বিএসএফের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। বহুবার বিএসএফ বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে গুলি করে জীবনহানির ঘটনা ঘটিয়েছে। এমনকি ভারতীয় ভূখণ্ডের মধ্যে এসব হত্যাকাণ্ড ঘটেনি, বরং বাংলাদেশের সীমানার ভেতরেই ঘটে গেছে।

এগুলি বাংলাদেশে ভারতীয় বর্ডার সুরক্ষা বাহিনীর অবজ্ঞা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের একটি প্রমাণ। বাংলাদেশকে তারা কেবল একটি উপনিবেশ হিসেবে মনে করেছে, যেখানে মানবিক মর্যাদার কোনো গুরুত্ব নেই। ফেলানির মৃত্যুর ঘটনা শুধু একটি হত্যাকাণ্ড নয়, এটি বাংলাদেশের জনগণের মর্যাদা এবং অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।

ফেলানি, সেই কিশোরী, যিনি মরে গিয়েও প্রতিবাদের এক অমর চিহ্ন হয়ে উঠেছেন, তিনি বাংলাদেশের প্রতিচ্ছবি। তার ছবিতে শুধু একটি মানবদেহ নয়, বাংলাদেশের মানচিত্রের ছবি দেখা যায়, যা রক্তাক্ত হয়ে পড়েছে। ফেলানি শুধুমাত্র একটি নাম নয়, তিনি বাংলাদেশের প্রতীক হয়ে উঠেছেন। আজকের দিনে, আমাদের সকলের প্রতিজ্ঞা করা উচিত যে আমরা ভারতীয় সম্প্রসারণবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করে যাবো, যাতে ফেলানির মতো আর কোনো জীবন ব্যর্থ না হয়।

রাজু

×