ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ৫ পৌষ ১৪৩১

নতুন প্রজন্মের দৃষ্টি ও অভিজ্ঞতার মূল্য 

বাঘ এবং বিড়ালের মধ্যে কি তুলনার কথা বললেন ফজলুর রহমান?

প্রকাশিত: ০০:২৩, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪

বাঘ এবং বিড়ালের মধ্যে কি তুলনার কথা বললেন ফজলুর রহমান?

অনেক তরুণ আছেন যারা সংস্কারে বিশ্বাস করেন, এবং এমন মানুষ প্রতিটি ঘরে আছেন। কিন্তু আমরাও এক সময় এমন ছিলাম, ২২ বছর বয়সে, যখন মাওলানা আবুল কালাম আজাদ ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হন। ২২ বছর পর, ১৯৪৩ সালে, তিনি আবারও সভাপতি হন। যখন তাকে তার প্রথম মেয়াদ এবং দ্বিতীয় মেয়াদের মধ্যে পার্থক্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি বলেছিলেন, "২২ বছর আগে, আমার কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না এবং শিক্ষাও কম ছিল, কিন্তু আমি চতুর ছিলাম। আজ, ২২ বছর পর, আমি অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি এবং তার সঙ্গে বুদ্ধিমত্তা এসেছে।"

এখন, যখন তরুণরা কথা বলেন, আমি তাদের "শিশু" মনে করি। আমি সম্প্রতি একটি ছেলেকে শুনছিলাম, যে নিজেকে "মেন্টর" বা "মাস্টারমাইন্ড" বলে দাবি করে। আমি দেখলাম যে সে বাংলার এবং বিহারের স্বাধীনতার সাথে সম্পর্কিত একটি মানচিত্র তৈরি করেছে। একজন শিল্পীর জন্য এমন কিছু কল্পনা করা ঠিক, কিন্তু যখন একটি শক্তিশালী অবস্থানে থাকা ব্যক্তি, যেমন প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টা, এমন একটি ভূগোলিক মানচিত্র তৈরি করেন, তখন তা দেশের জন্য বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে।

এরা যারা এত আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলেন, তারা হয়তো বলবেন মাওলানা ভাসানী কোনো শিক্ষা বা বোঝাপড়া জানতেন না, বা শেখ মুজিবুর রহমান কিছু জানতেন না। তারা হয়তো ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের নেতাদের—যেমন তাজউদ্দিন আহমেদ—সম্পর্কে বলবেন যে তারা তেমন কিছু করেননি, আর এখন তারা সব ঠিক করে ফেলতে প্রস্তুত। তারা বিশ্বাস করেন যে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করছি, কিন্তু তাদের বক্তব্য হাস্যকর। মুক্তির সংগ্রামকে কিছু তুচ্ছ বিষয়, যেমন আগস্ট বিপ্লবের সঙ্গে তুলনা করা এক বিশাল ভুল। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ হলো বাঙালি জনগণের সর্বশ্রেষ্ঠ অর্জন, একটি ইতিহাস যা তারা কখনো ভুলে যেতে পারে না।

যারা এমন দাবি করেন, যারা অতীত মুছে ফেলার চেষ্টা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধের মূল্য কমানোর চেষ্টা করেন, তাদের শাস্তি দেওয়া উচিত। তাদের কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করা উচিত, এবং তাদের সমাজ থেকে চিরতরে নিষিদ্ধ করা উচিত।

আপনি নির্বাচন এবং রাজনীতি সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারেন, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি আওয়ামী লীগের প্রভাব ফিরে পেতে কমপক্ষে দশ বছর লাগবে। আমি অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। আমি ৪০ বছর ধরে আওয়ামী লীগে আছি, এমপি হিসেবে, ছাত্র সংগঠনের সভাপতি হিসেবে, এমনকি কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে। এসব বছর ধরে, আমি দলের বিবর্তন দেখেছি। কিন্তু আজ, দলের অবস্থা এমন যে, যদি আগামীকাল নির্বাচন হয়, কেউ তাদের জন্য ভোট দেবে না। আসলে, তারা হাসির পাত্র হবে, যেমন একটি শিশু "বাঘ আসছে" বলে চিৎকার করে, জনগণকে বিভ্রান্ত করে।

আমি সরাসরি দেখেছি কিভাবে আওয়ামী লীগ অবনতির দিকে গেছে। যদি মানুষ এভাবে চলতে থাকে, কেউ তাদের জন্য ভোট দেবে না। দল বা ব্যক্তিদের নিষিদ্ধ করা নিয়ে আমি কোনো মতামত প্রকাশ করি না। জামাত নিষিদ্ধ হওয়ার সময়েও আমি এটি সমর্থন করি নি। জনগণকেই ঠিক করতে হবে, তারা কাকে সমর্থন করবে এবং কাকে প্রত্যাখ্যান করবে, এবং তেমনই থাকতে হবে। জনগণের বিচারই ঠিক করবে কে থাকবে এবং কে যাবে।

রাজু

×