গত ৫৪ বছরে আমাদের সকল সরকারই কোনো না কোনোভাবে "খুনি সরকার" বা "দুর্নীতিগ্রস্ত" হিসেবে পরিচিত হয়ে ক্ষমতা ছেড়েছে। এই দীর্ঘ সময়ের পথচলায় আমরা দেখতে পেলাম, কেউ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেনি। এ অবস্থায় আমাদের নিজেদেরও কিছু দায় স্বীকার করতে হবে। নাগরিক হিসেবে আমরা কি সত্যিই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সফল হয়েছি?
আমরা গণতন্ত্রের সংকট, নির্বাচনের দুর্বলতা এবং রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে গিয়েছি। এসব থেকে শিক্ষা নিয়ে আমাদের এমন একটি নতুন রাজনৈতিক কাঠামো তৈরি করতে হবে, যেখানে ফ্যাসিবাদী শাসন আর ফিরে আসতে না পারে। আমাদের দরকার এমন একটি ব্যবস্থা যেখানে প্রত্যেক প্রার্থী ও ভোটারের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা হবে।
নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখা, ভোট গণনা সঠিকভাবে করা, এবং জনগণের রায়কে শ্রদ্ধা জানানো জরুরি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে, ক্ষমতায় থাকা সরকারগুলো প্রায়ই পুলিশ, প্রশাসন এবং বিচার বিভাগকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করেছে। এর ফলে গণতান্ত্রিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে।
আমরা জানি, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। আজকের সংস্কার ভবিষ্যতে আরও উন্নয়ন ও সংশোধনের দাবি করবে। একই সঙ্গে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি এবং প্রশাসনিক অদক্ষতার মতো ইস্যুগুলো সমাধানে তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নিতে হবে।
দ্রব্যমূল্যের চাপের কারণে দেশের একটি বড় অংশ মানবেতর জীবনযাপন করছে। এই প্রেক্ষাপটে সরকার ও রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব নিতে হবে। অতীতের ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য একটি গ্রহণযোগ্য ও স্বচ্ছ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে।
আমাদের রাজনীতিতে একটি নতুন দিকনির্দেশনা প্রয়োজন। নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হোক, আলোচনা হোক, তবে জনগণের রায়কেই চূড়ান্ত হিসেবে মানতে হবে। আমরা নাগরিক সমাজ, পেশাজীবী সমাজ এবং সুশীল সমাজও এই পরিবর্তনের অংশ হতে পারি।
১৯৯০ সালের গণআন্দোলন আমাদের দেখিয়েছে, পরিবর্তন সম্ভব। তাই আমাদের প্রয়োজন একটি নতুন রাজনৈতিক কাঠামো যেখানে গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার এবং স্বচ্ছতার ভিত্তিতে দেশের নেতৃত্ব গড়ে উঠবে। সব দলের কাছ থেকে আমরা চাই, তারা ক্ষমতায় গেলে জনগণের রায়কে সম্মান করবে এবং সংস্কারের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।
রাজু