কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের জন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সমাধান দাবি করে আজ বিকেল ৩ টায় দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আমার বাংলাদেশ পার্টি-এবি পার্টি। কিন্তু সকাল ১১ টায় অনেকটা নাটকীয়ভাবে এবি পার্টি কার্যালয়ে এসে উপস্থিত হন খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। খেলাফতের মহাসচিব ড. আহমদ আব্দুল কাদেরের নেতৃত্বে দলের একটি টিম এবি পার্টির নেতৃবন্দের সাথে সমঝোতা সংলাপে মিলিত হন। সংলাপে মধ্যস্থতা করেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন। দীর্ঘ ৪ ঘন্টা সংলাপের পর দুই দল জাতীয় ঐক্যের বৃহত্তর স্বার্থে স্থান বিষয়ে জটিলতা নিরসনে একমত হন। এসময় খেলাফত মজলিসের নেতৃবৃন্দ এবি পার্টি নেতৃবৃন্দকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন বৈধভাবে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ব্যবহারের চুড়ান্ত অনুমেদন পাওয়া সত্ত্বেও তারা যেন ত্যাগ স্বীকার করে মাঠটি তাদের অনুকুলে ব্যবহারের জন্য ছাড় দেন। খেলাফত নেতৃবৃন্দের অনুরোধে এবি পার্টি নেতারা বৃহত্তর ঐক্য ও সংহতি রক্ষায় তাতে একমত হন। পরবর্তীতে দুদলের কেন্দ্রীয় নেতারা যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন।
এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু ও পরে বক্তব্য দেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির আহবায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার, যুগ্ম আহবায়ক বিএম নাজমুল হক ও যুগ্ম আহবায়ক লে. কর্ণেল (অবঃ) হেলাল উদ্দিন,
ইসলামি আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন, খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিনহাজুল আলম মিলন, এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানাসহ
দুই দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ১ম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে আগামী ২৭ ও ২৮ ডিসেম্বর গণপূর্ত অধিদফতরের নিকট আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মাঠ বরাদ্দের আবেদন করেছিলাম। অপর পক্ষে খেলাফত মজলিসও ২৮ ডিসেম্বর তৃনমুল সংগঠকদের সম্মেলনের জন্য বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করে। গণপূর্ত অধিদফতর উভয় দলকেই পরিস্থিতি বিবেচনা করে মাঠ বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে চিঠি প্রদান করে। সর্বশেষ গণপূর্ত অধিদফতর ২৭, ২৮ ডিসেম্বর এবি পার্টিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান বরাদ্দ করে চুড়ান্ত চিঠি প্রদান করে। কিন্তু যাচাই বাছাই পূর্বক মাঠ বরাদ্দ দেয়ার সুপারিশ ভিত্তিক চিঠির উপর নির্ভর করে খেলাফত মজলিস প্রচার প্রচারণা, মেহমান দাওয়াত সম্পন্ন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশ মুখে নিজেদের দলীয় সম্মেলনের গেট নির্মাণ করায় উভয় দলের সম্মেলন স্থান নিয়ে একধরনের জটিলতা তৈরি হয়। এমতাবস্থায় আজ ১৫ ডিসেম্বর খেলাফত মজলিসের নেতৃবৃন্দ ও এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের মধ্যে দীর্ঘ সমঝোতা বৈঠকের পর আজ খেলাফত মজলিসের একটি প্রতিনিধি দল এবি পার্টির কার্যালয়ে এসে তাদের সম্মেলনে সহোযোগিতার অনুরোধ জানান। সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় খেলাফত মজলিসের নেতৃবৃন্দের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবি পার্টি তাদের কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের তারিখ পরিবর্তন করে আগামী ১০ ও ১১ই জানুয়ারী অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।
তিনি বলেন, একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান কতটা দায়িত্বহীন হলে একদল আবেদন করার পরও আরেক দলের আবেদন তারা কিভাবে গ্রহণ করে। তাদের এই দায়িত্বহীনতার কারণে আমাদের বন্ধুপ্রতিম দুই রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের মাঝে একধরনের ভুল বোঝা বুঝি তৈরী হয়েছে। আজ আমরা একটা সৌহার্দ্য পূর্ণ পরিবেশে এই সমস্যার সমাধান করলাম।
খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমেদ আব্দুল কাদের বলেন, সকাল ১১টা থেকে আমরা এবি পার্টির নেতৃবৃন্দের সাথে বসেছি যেখানে ইসলামি আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য আশরাফ আলী আকন আমাদের সহোযোগিতা করেছেন। আমাদের অনুরোধের প্রেক্ষিতে এবি পার্টি তাদের কাউন্সিলের তারিখ পিছিয়ে আগামী ১১ জানুয়ারী করেছে। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।
আশরাফ আলী আকন বলেন, আমরা ফ্যাসীবাদের বিরুদ্ধে একত্রে আন্দোলন করেছি। আমাদের মানে ভুল বোঝাবোঝির কোন সুযোগ নাই।
এবি পার্টির আহবায়ক প্রফেসর আব্দুল ওহাব মিনার সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন শেষ করে।
নাহিদা