গুম বিষয়ক তদন্ত কমিশনের সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, আওয়ামী লীগের শাসনামলে ‘গুমের নির্দেশদাতা’ হিসেবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্পৃক্ততার প্রমাণ পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে তারা গুমের ঘটনায় বিচার প্রক্রিয়া শুরু এবং র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) বিলুপ্তির সুপারিশও করেছে।
শনিবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশন তাদের প্রথম অন্তর্বর্তী প্রতিবেদন জমা দেয়। প্রতিবেদনে মানবাধিকার লঙ্ঘনে র্যাবের ভূমিকা এবং গুম ও খুনের বিভিন্ন ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করা হয়েছে।
র্যাবের বিতর্কিত কার্যক্রম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সমালোচনা চলছে। ২০১৪ সালে নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের ঘটনায় র্যাব সদস্যদের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়ার পর বাহিনীটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও সমালোচনার মুখে পড়ে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে র্যাবের ছয় কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে, যা তাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন সংক্রান্ত উদ্বেগের প্রতিফলন।
প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, কমিশন গুমের ১,৬৭৬টি অভিযোগের মধ্যে ৭৫৮টির তদন্ত সম্পন্ন করেছে এবং বাকি অভিযোগগুলোর তদন্ত চলছে।
র্যাব প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের সময়ে, তবে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে এর বিরুদ্ধে গুম ও খুনের অভিযোগ আরও ব্যাপকভাবে উঠেছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর র্যাব বিলুপ্তির দাবি আরও জোরালো হয়েছে। বিএনপিও সাম্প্রতিক সময়ে এই দাবি সমর্থন করেছে।
তদন্ত কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, গুমের ঘটনায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং র্যাবের মতো বিতর্কিত বাহিনী বিলুপ্তির মাধ্যমে মানবাধিকার রক্ষায় সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।