ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ২১ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

যুক্তরাজ্যে সমাবেশে ফখরুল

দেশের মানুষ তারেকের জন্য অপেক্ষা করছে

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৪৩, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪

দেশের মানুষ তারেকের জন্য অপেক্ষা করছে

যুক্তরাজ্যে সমাবেশে ফখরুল

দেশের মানুষ এখন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত  চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্য অপেক্ষা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মঙ্গলবার লন্ডনে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায় যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে  প্রধান অতিথির বক্তব্যে  তিনি এ মন্তব্য করেন। 
ফখরুল বলেন, দেশের মানুষ এখন বলছে তারেক রহমান কবে দেশে আসবেন। এ পরিস্থিতিতে আমরা তারেক রহমানকে আর লন্ডনে রাখতে চাই না। তিনি বলেন, 
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা নির্বাচন ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়েছে। তিন তিনটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন জোর করে দখল করে নেয়। ফখরুল বলেন, অহেতুক মিথ্যা বলে বাংলাদেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে ভারত। আমাদের আগরতলা কনস্যুলেটে হামলা করেছে, কলকাতায় হামলা হয়েছে। তাই আমাদের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে আগামীর সময় পার করতে হবে। তিনি বলেন, আমরা আশা করছি ভারত অতীতে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে যে ভুল করেছে সেটিকে তারা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করবে। পাশাপাশি বর্তমানে যে কার্যকলাপ করেছে তা বন্ধ করবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সমালোচনা করে ফখরুল বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের শ্বেতপত্র প্রণয়ন কমিটির চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,  দেশ থেকে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ১৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অবৈধভাবে পাচার হয়েছে। চিন্তা করা যায় একটা দেশের সরকার তার দেশের সম্পদ এভাবে লুট করে নিয়ে যেতে পারে। এই লন্ডনেও সরকারের মাত্র এক ব্যক্তির ৩৬৫টি বাড়ি রয়েছে। 
দেশ রক্ষায় আমরা হিন্দু-মুসলমান একসঙ্গে লড়াই করব- রিজভী ॥  বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, দেশ রক্ষায় আমরা হিন্দু-মুসলমান একসঙ্গে লড়াই করব। বুধবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন ফ্রন্ট আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশ ও পদযাত্রায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সিরাজ উদ দৌলা ও মোহনলাল একসঙ্গে লড়াই করেছেন দেশের মুক্তির জন্য, দেশ রক্ষার জন্য। ঠিক একইভাবে আমরা হিন্দু-মুসলমান একইসঙ্গে লড়াই করব। দিল্লির দাসত্বকে খান খান করে দেব। তিনি বলেন, বিজেপি সরকার গোড়া হিন্দুত্ববাদকে পুঁজি করে ক্ষমতায় এসেছে। এদের আর কোনো পুঁজি নেই। সুতরাং ক্ষমতায় থাকতে হলে হিংসা এবং ঘৃণা ছড়াতে হবে। এ ছাড়া নরেন্দ্র মোদির ক্ষমতায় থাকা অনেক মুশকিল হবে। কারণ ভারতের স্বাধীনতায় তাদের উত্তরসূরিদের কোনো অবদান নেই। এটি আমার নিজের ইতিহাস পাঠ নয়, একজন বিখ্যাত লেখক অন্নদা শংকর রায়- তিনি তার এক লেখায় এ কথা বলেছেন।
রিজভী বলেন, আমার কাছে অবাক লাগে যে, কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ছিল। অসাম্প্রদায়িক, সেকুলার হিসেবে যে রাজনীতিবিদকে চিনতাম তাকেও মনে হলো রাজনীতির জন্য মুখে অসাম্প্রদায়িকতার কথা বলতেন। ধর্ম নিরপেক্ষতার কথা বলতেন। কিন্তু তার গভীরে ছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদ। যে কোনো আদর্শের কট্টরবাদ মানবতার পরিপন্থি। যে কোনো ধর্ম সম্প্রদায়ের কট্টরবাদ মানবতার বিরুদ্ধে যায়।
রিজভী বলেন, পশ্চিমবঙ্গে মুসলিমের হার ২৫ শতাংশ।  অথচ সরকারি চাকরিতে সুযোগ পায় মাত্র ১ শতাংশ। তা হলে মমতা তো কখনোই ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী ছিলেন না। আমরা জোরগলায় বলতে পারি, বাংলাদেশে শেখ হাসিনা ছাড়া অন্য ধর্মের প্রতি ঘৃণা, বিদ্বেষ কখনোই ছড়ায়নি। বাংলাদেশে যারা ইসলামী রাজনীতি করেন তারাও কিন্তু সাম্প্রদায়িক কথা বলেন না। অন্য ধর্মের প্রতি আক্রমণ করে কোনো কথা বলেন না। এটাই আমাদের ঐতিহ্য।
রিজভী বলেন, আমরা আমাদের স্বাধীনতা রক্ষায় অঙ্গিকারাবদ্ধ। আমরা ভারতসহ যত বড় ও ক্ষুদ্র রাষ্ট্র আছে প্রত্যেকটা দেশের স্বাধীনতার মর্যাদা দেই। কিন্তু ভারতের শাসকগোষ্ঠী যদি মনে করে সম্প্রসারণ চালিয়ে বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান ও অন্যান্য দেশ তারা কব্জা করে নেবে তা হলে তারা বোকার স্বর্গে বাস করছেন।
রিজভী বলন, বাংলাদেশের মানুষের দেশরক্ষার অন্তর্নিহিত শক্তি, প্রাণের উন্মাদনা- এটা কখনোই ভারত টের পায়নি। ভারতের যদি অশুভ ইচ্ছা থাকে তা হলে আমরাও বলব আমাদের নবাবের এলাকা বাংলা, বিহার ও উরিষ্যা আমরা দাবি করব যদি তারা একের পর এক আগ্রাসী ভূমিকা পালন করেন।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অর্পণা রায় দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সমীর কুমার বসুর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অমলেন্দু দাস অপু, যুবদল নেতা গিয়াস উদ্দীন মামুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জাহিদুল কবির প্রমুখ।

×