রাজধানীর স্কাউট ভবন সংলগ্ন নয়াপল্টন এলাকায় জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ফান্ড এর নামে কেন জমি অবশেষে ফেরত পাচ্ছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি। এখানেই তৈরি হওয়ার কথা দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়।
৪২ কাঠার এই জায়গায় অফিসের জন্য নয় তলা ভবনের নকশা একাধিক বেইজমেন্টসহ প্রাথমিক অনেক কাজ শেষ করেছিলেন অবিভক্ত ঢাকার প্রথম মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকা। দলীয় চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আলাদা কক্ষসহ ভিন্ন সাজে এই ভবন তৈরীর উদ্যোগ নেওয়া হলেও আওয়ামী সরকারের রোশনালে থমকে যায় সবকিছু। পরিবর্তিত বাস্তবতায় চরম বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকে জায়গাটি৷
জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াসহ সাজা ভোগ করেন তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর তৎকালীন একান্ত সচিব জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র প্রয়াত সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
গত বুধবার জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড থেকে খালাস দেয় হাইকোর্ট। বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
এর আগে দুর্নীতির দায়ে করা মামলাটিতে খালেদা জিয়াকে ৭ বছরের দণ্ড দিয়েছিলেন আদালত। সেই সাজার বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার আপিল মঞ্জুর করে আজ খালাস দেয় হাইকোর্ট। ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা অনাদায়ে আরো ছয় মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন খালেদা জিয়া। এরই মাঝে দেশে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করলে খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে তার পরিবার সরকারের কাছে আবেদন জানায়। পরে কয়েক দফায় খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রাখে সরকার।
মামলা থেকে খালাস পাওয়ার পর জিয়াউল ইসলাম বলেন, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ফান্ড মামলা একটি, মিথ্যা, ভুয়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণালীত মামলা। সবচেয়ে জনপ্রিয় বাংলাদেশের তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে রাজনীতি থেকে দূরে সরানোর জন্য এই মামলা দেওয়া হয়। বিএনপির পার্টি অফিসের উল্টোদিকে যে জমিটি কেনা আছে সে জমি বহাল আছে। কিন্তু উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বেগম খালেদা জিয়া তার রাজনৈতিক সচিব আবুল হারিস চৌধুরী, আমি নিজে এবং ঢাকার সফল মেয়র সাদেক হোসেন খোকার এপিএস মনিরুল ইসলাম খানসহ আমাদেরকে আসামী করে তারা জেলে প্রেরণ করে।
তিনি আরও বলেন, আমি একজন সরকারি কর্মকর্তা হয়েও ১৬ বছর ওএসডি ছিলাম। সাসপেন্ড ছিলাম। এমন একটি পরিস্থিতি ছিল আমরা কোথাও গেলে কোন সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী বিশেষ করে সরকারি কর্মকর্তারা আমাদের সাথে কথা বলতে চাইত না। আমার স্ত্রী বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে ১৫ ব্যাচের দক্ষ কর্মকর্তা। তাকেও আমার জন্য পদোন্নতি বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল।
মনিরুল ইসলাম বলেন, তৎকালীন ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকার নেতৃত্বে এটা ক্রয় থেকে শুরু করে সবকিছু করা হয়। বেজমেন্টের ঢালাই কমপ্লিট চারিপাশের পাইলিং কমপ্লিট, বিল্ডিং এর কাজ শুরু হবে এ সময় দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ওয়ান ইলেভেন আসে। বিল্ডিং এর কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এটা নিয়ে নানা ষড়যন্ত্র চলে। আল্লাহর রহমতে হাইকোর্ট থেকে এই মামলা। খারিজ করে দিয়েছে। এবং আমাদেরকে বেকসুর খালাস দিয়েছে। আমি সাত বছর সশ্রম কারো জন্য ভোগ করেছি। পুরো প্রক্রিয়া বাদ থাকলো অথচ আমার সাত বছর জেল খাটা শেষ। আমি শুধু এই জায়গাটা দেখতে এসেছিলাম যে জায়গার জন্য আমি জেল খেটেছি। এখানের যে অবস্থা তা খুবই খারাপ। আমি আশা করবো বিএনপি দ্রুতই উদ্যোগ নিয়ে পুরোনো মডেলর এখানে কাজ শুরু করবে।
এমএম