ছবি: সংগৃহীত।
একটি মার্কিন ম্যাগাজিনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ডঃ মোঃ ইউনুস বলেছেন, বিচার প্রক্রিয়া শেষে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়া হবে। তবে, এই মন্তব্যের পর রাজনৈতিক মহলে বেশ সাড়া ফেলেছে, বিশেষ করে ব্যারিস্টার ফুয়াদ এর প্রতি সমালোচনা করেছেন।
একটি সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক ফুয়াদ কে জিজ্ঞেস করে আসলেই কি দেশের জনগণ আবার আওয়ামী লীগ কে দেখতে চায় নির্বাচনে?
ব্যারিস্টার ফুয়াদ এই প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগকে একটি "রাজনৈতিক ডাইনোসর" হিসেবে আখ্যায়িত করেন, যার সময় বহু আগেই শেষ হয়ে গেছে। তিনি বলেন, "ডাইনোসর নামক প্রাণীটা যে হাজার হাজার বছর আগে বেঁচে ছিল বলে ধারণা করা হয়, তার কঙ্কাল বের করা হচ্ছে এবং জাদুঘরে সংরক্ষন করা হচ্ছে তেমনি বাংলাদেশের গণভবনে জাতীয় জাদুঘর করা হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান ভিত্তিতে। এখানে আওয়ামীলীগ নামক কঙ্কালটা একসময় দেখতে যাবে মানুষ। আওয়ামী লীগের রাজনীতিটা মুসলিম লীগের মতো হয়ে গিয়েছে এবং সেটা আমি অনেক আজ আগে থেকেই বলছি যে আওয়ামী লীগের কোন রাজনৈতিক ফিউচার নেই।”
ফুয়াদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগকে আবার রাজনীতিতে ফিরিয়ে আনার আগে, দেশের জনগণের মতামত জানা জরুরি। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের ভবিষ্যত নিয়ে একটি গণ শুনানি হওয়া উচিত, যাতে সাধারণ মানুষ নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। তিনি এই শুনানির জন্য পার্লামেন্টের স্ট্যান্ডিং কমিটির মাধ্যমে একটি ওপেন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার আহ্বান জানান, যা বিটিভি লাইভে সম্প্রচারিত হবে এবং ওয়েবসাইটে নাগরিকরা মতামত দিতে পারবে। "এটা জনগণের মতামত জানা ও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ," তিনি বলেন।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন হলেও, তার সমর্থকরা দেশের সমাজের অংশ, তাদেরকে হঠাৎ করে রাজনীতি থেকে বাদ দেয়া সম্ভব নয়। তবে, ফুয়াদ প্রস্তাব দেন যে, গত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগের যেসব নেতা-কর্মী দুর্নীতি, মানবতা বিরোধী অপরাধ বা ফৌজদারি অপরাধে জড়িত, তাদেরকে রাজনীতি ও নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে নিষিদ্ধ করা উচিত।
ফুয়াদ আরও বলেন, আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধে বিচার চলছে, এবং এ ক্ষেত্রে বিচারক, অ্যাটর্নি জেনারেল এবং চিফ প্রসিকিউটর এর মতামতও জনগণের মতামতের সঙ্গে মিলিয়ে গণ শুনানির মাধ্যমে সংগ্রহ করা উচিত। তিনি উল্লেখ করেন, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি এবং ১৪ দলের সমন্বয়ে মিটিং এর পরিপ্রেক্ষিতে গণভবনের বাইরে এসে কারফিউম ডিক্লেয়ার করা হয়েছিল, ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল, সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল। অর্থাৎ ১৪ দল সম্মিলিত ভাবে এই গণহত্যা ও মানব হত্যার সাথে জড়িত, সেটিও জনসাধারণের কাছে পরিষ্কার হওয়া দরকার।
ফুয়াদ বলেন, “আমরা এখন জাতি হিসেবে কী বেছে নেব? সেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য একটি গণ শুনানি প্রয়োজন।” এই গণ শুনানির মাধ্যমে দেশের জনগণ কী চায়, আওয়ামী লীগ বা ১৪ দলের ভবিষ্যত কী হবে, তারা কি আবার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে কিনা—এসব বিষয়ে জনগণের মতামত স্পষ্ট হবে।
নুসরাত