ছবি: সংগৃহীত
শেখ হাসিনা ইস্যুতে এবার ভোল বদল করলো ভারত। দায়িত্বশীল ব্যক্তিরাই বলছেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে হাসিনা ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের হাল ধরার মতো যোগ্য তার পরিবারে তৈরী হয়নি। হেভিওয়েট নেতাদেরও এই দলের সভাপতি হওয়ার মত গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাহলে কি শেষ হতে যাচ্ছে বৃহৎ এই রাজনৈতিক দলের ঐতিহ্য? বাংলাদেশে হাসিনার রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন নিয়ে বিবিসি বাংলাকে একটি মন্তব্য করেছেন পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী। তিনি ঢাকায় ভারতের সাবেক হাইকমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগ ও হাসিনার বেশ ঘনিষ্টজন হিসেবেই তিনি পরিচিত।পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরে আসাটা শুধু কঠিন নয়, খুবই কঠিন।
এখনও আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে ক্ষোভ-বিক্ষোভ চলছে। তাদের দলীয় ছাত্রসংগঠন ছত্রভঙ্গ। শেখ হাসিনার বয়স আজকের থেকে দশ বছর কম হলে হয়তো মনে করা যেত তিনি দেশে ফিরে দলের হাল ধরবেন। কিন্তু এই মুহূর্তে সেটা প্রায় অসম্ভব বলে মনে হচ্ছে। হাসিনার বয়স এখন ৭৭ বছর। ভারতের বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা এখন যে পর্যায়ে তাতে জনগনের আস্থা ফিরতে কমপক্ষে ১০ বছর লাগবে। তখন হাসিনার বয়স হবে ৮৭ বছর। এছাড়া হাসিনা এবং তার দলীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যে পরিমাণ মামলা হয়েছে, তাতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এসব মামলা থেকে ক্লিনচেক মিলতে আরও এক দশক লেগে যেতে পারে। প্রায় শতবর্ষী হাসিনা তখন দলের হাল ধরতে কতটুক সক্ষম হবেন সেটাই মুখ্য প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে। সেই বিবেচনায় বাংলাদেশের রাজনীতিতে হাসিনার প্রত্যাবর্তন সম্ভব না বললেই চলে। আওয়ামী লীগের উচ্চ পদের নেতারাও বর্ষীয়ান, দলের শীর্ষ পদের জন্য কারও তেমন গ্রহণযোগ্যতা নেই। সুতরাং, তরুণদের তৈরী করতেও বেশ সময় লাগবে বলে মন্তব্য ভাসছে ভারতীয় মিডিয়ায়। তাছাড়া এই দলটি এখনও দলের শীর্ষ পদে পরিবারতন্ত্রের বাইরে যেতে পারে নি। ফলে সিনিয়র নেতাদের দলের শীর্ষ পদে বসা দিবা স্বপ্নের মতই।
শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বৃটিশ পাসপোর্টধারী, ১৫ বছর ধরে তিনি মায়ের সাথে থাকলেও তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে খোদ আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদেরও। ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ও এমন একটি প্রধান রাজনৈতিক দলের প্রধান হওয়ার মত কোনো কারিশমা দেখাতে পারে নি। সুতরাং, আস্থার সঙ্কট রয়েছে। ৬৯ বছর বয়সী শেখ রেহানারও রাজনৈতিক ব্যাকগ্রউন্ড শক্ত না। এই পরিবারের বাকি যারা আছেন রাজনীতির মাঠে তাদের চলাফেরা একেবারেই সীমিত। মুজিব পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে শেখ রেহানার ছেলে রেওয়ান সিদ্দিকি ববিকে রাজনীতিতে তেমন সক্রিয় দেখা যায়নি, তার বোন টিউলিপ সিদ্দিকি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে বেশ ভাল পদে রয়েছেন। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের আসার সম্ভাবনা আছে বলে মনে হয়না। শেখ হেলাল, শেখ তন্ময় মামলার বোঝা মাথায় নিয়ে পলাতক। শেখ সেলিম, তাপস দেশ ছাড়া বলে জানা গেছে। সবমিলিয়ে রাজনীতিতে ফেরাই যেখানে শেখ পরিবারের জন্য কঠিন কর্ম, সেখানে হাসিনার ফেরার বিষয়টিকে যুক্তিসঙ্গত মনে করছেনা অধিকাংশ ভারতীয় বিশ্লেষকরা।
শিহাব