আন্দালিব রহমান পার্থ। ছবি: সংগৃহীত।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান এবং সাবেক সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ সম্প্রতি একটি টকশোতে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের বর্তমান পরিস্থিতি এবং ভবিষ্যৎ নিয়ে মন্তব্য করেছেন। তিনি আওয়ামি লীগের নেতৃত্ব এবং তাদের কর্মকাণ্ড নিয়ে বেশ সমালোচনাও করেছেন। বিশেষ করে, তার মতে, আওয়ামী লীগের প্রত্যেক সদস্যের "কাবা" ছিল গণভবন, যেখানে সবকিছু নির্ধারিত হতো শুধুমাত্র দলের নেত্রীকেই অনুসরণ করে।
টকশোতে সাংবাদিক যখন পার্থকে প্রশ্ন করেন, "আপনি আওয়ামী লীগের কি ভবিষ্যত দেখছেন?" তখন তিনি বলেন, "আমরা তো ভবিষ্যত বলতে পারি না, কিন্তু পর্যবেক্ষণ করতে পারি এবং ধারণা করতে পারি।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের কাবা ঘর পশ্চিম দিকে হলেও, আওয়ামী লীগের সবার কাবা ছিল গণভবন। তাদের পশ্চিম দিকটা ছিল অন্য জায়গায়, তাদের নেত্রী যা বলবেন, তা-ই হবে।"
পার্থ আরও মন্তব্য করেন যে, "আমাদের দেশে পালিয়ে যাওয়ার রীতি অনেক আগে থেকেই। আওয়ামী লীগের সময়ে চিফ জাস্টিস পালিয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের সময় কাউকে সম্মান করা হতো না। ডক্টর ইউনূসকে তখন তার প্রাপ্য সম্মান দেওয়া হয়নি, কেউ একজন তাকে ফুল দিয়েও স্বাগত জানায়নি। এটা কেন হয়েছে? শুধুমাত্র একজন মানুষের ভয়ের জন্য। আওয়ামী লীগ যেহেতু ১৭ বছর ক্ষমতায় ছিল তাই তাদের সবাইকে রাতারাতি বাদ দিয়ে দেয়া যাবে না। তাহলে এটা একটা বিশাল কু হয়ে যাবে।"
আওয়ামী লীগের অহংকার এবং গর্বের কারণেই তাদের পতন হয়েছে বলে মনে করেন পার্থ। তিনি বলেন, "আগে আওয়ামী লীগ কখনো এত অসম্মানিত হয়নি, তবে বর্তমানে তাদের অপমানিত হওয়া খুবই জরুরি ছিল, কারণ এই পতনই দেশের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয় ছিল।" ৭৫-এর পর বঙ্গবন্ধুর পরিবার দেশে ফিরে আসার পর তার চারপাশে ছিলেন বিশ্বস্ত ও অভিজ্ঞ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সেসব নেতাদের স্থলে বর্তমানে এমন সব নেতারা এসেছে যারা সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে সবসময় এমন বানিয়ে রাখত যে তার থেকে সুপেরিয়র আর কেউ নেই। এমনকি তিনিও এটাই বিশ্বাস করতে শুরু করেছিলেন।
পার্থ আরও বলেন, "আওয়ামী লীগ এমন একটি অবস্থায় ছিলো যে, তাদের অনুসারীরা বিশ্বাস করতো দেশটা তাদের। ৭৫ এর ১৫ আগস্টের পর যা ক্ষতি হবার হয়ে গেছে। এরপর আর ওনাদের আর কোন কোন ক্ষতি হবে না, এখন শুধু কামানোর সময়। তাদের মানসিকতা এমন হয়ে গিয়েছে যে তারা বুঝতেই পারছে না তারা কি করেছে। সাড়ে তিন মাসেও তাদের সেই অনুশোচনা টি আসেনি। ।
"তাদের যেহেতু সেকেন্ডিয়ার পলিটিশিয়ান দাড়াইনি সেহেতু তাদের জন্য এখন খুবই কঠিন হয়ে যাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনরায় প্রবেশ করা," বলছিলেন পার্থ।
পার্থ ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, "যতদিন না আওয়ামী লীগের বিচার হচ্ছে, ততদিন তাদের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার কোনো নৈতিক অধিকার নেই।" এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেছেন সার্জিস, হাসনাতসহ আরও কিছু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। তিনি বলেন, "এটা অসম্ভব না হলেও, আওয়ামী লীগের জন্য আবার রাজনীতিতে ফিরে আসা খুবই কঠিন হবে।"
নুসরাত