ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় বিচারকাজ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল, যার আওতায় পড়ে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, মানবতা ও শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ। আওয়ামী লীগ সরকার নির্বাচনী ইশতেহার হিসেবে ২০১০ সালের ২৫ শে মার্চে এটি প্রতিষ্ঠা করে। এরপর যুদ্ধাপরাধের নামে শুরু হয় বিরোধী দল নিশ্চিহ্ন করার পায়তারা। আব্দুল কাদের মোল্লা, ছিলেন জামায়াত নেতা, ২০১০ সালের ১৪ই অক্টোবর যুদ্ধাপরাধ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরের বছর ২৮ মে থেকে অভিযোগ গ্রহন আর ৩ জুলাই থেকে সাক্ষ্য গ্রহন শুরু হয়। প্রথমে যাবজ্জীবন এবং পরে তরুণ প্রজন্মের আন্দোলনের তোপে দেয়া হয় যুদ্ধাপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যেুদণ্ড। ২০১৩ সালের ১২ই ডিসেম্বর কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করা হয়। পুরো প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লেগেছিলো মাত্র তিন বছর একমাস। এছাড়াও যুদ্ধাপরাধের দায়ে মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, আলী আহসান মোহাম্মদ মোজাহিদ, সালাউদ্দ্নি চৌধুরী, মতিউর রহমান নিজামি, মীর কাশেম আলীর মতো জামায়াত নেতার বিদায় হয়েছে যুদ্ধাপরাধ মামলায়।
শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের প্রায় সকল নেতা কর্মীর নামে চলছে মানবতাবিরোধী মামলা। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্বিচারে গুলি চালানোর নির্দেশদাতা হিসেবে দেশের জনগন খুনি হাসিনার বিচার চাই বলে স্লোগান দিয়েছে। তারই প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে শুরু হয়েছে বিচারকাজ। অনেকেই বলছেন কর্মফল ভোগের ক্ষণগণনা শুরু। নিজামী বা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর মতো অবস্থা হতে পারে আওয়ামী নেতা কর্মীদের। আওয়ামী লীগের তৈরী আইনেই প্রাথমিক বিচারকাজ শুর করলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। প্রতিহিংসা বা রাজনৈতিক প্রতিশোধ কিংবা যুদ্ধাপরাধের বিচারের দাবিতে তখন জনমানুষের দাবি যাই থাকুক না কেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, হাসিনার আমলে করা ট্রাইবুনালে তারা নিজেরাই ফেঁসে যাচ্ছেন। হাসিনা আমলেও বিতর্ক উঠেছিল এই ট্রাইবুনাল নিয়ে। আইনের সংস্ককার না করেই আওয়ামী লীগের আমলের আইনেই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল কাজ শুরু করায় এ নিয়ে প্রশ্ন তোলার সুযোগ থাকছে। সুপ্রিম কোর্টের একজন সিনিয়র আইনজীবী বলছেন ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল আইনে যুদ্ধাপরাধের বিচার করার কথা বলা হয়েছে। এই আইনের সংস্কার না করে ছাত্র জনতার আন্দোলনে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হলে বিতর্ক উঠতে পারে। এখন দেখার বিষয় এই ট্রাইবুনাল কি বিগত সরকারের করা ট্রাইবুনালের মতো হবে নাকি তারা বিচারের সচ্ছতা নিশ্চিত করবে!
শিহাব উদ্দিন