ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

অন্তর্বর্তী সরকারের অদক্ষতা জনগণ সহজভাবে নেবে না : তারেক রহমান

প্রকাশিত: ১৯:১০, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

অন্তর্বর্তী সরকারের অদক্ষতা জনগণ সহজভাবে নেবে না : তারেক রহমান

ছবি: সংগৃহীত।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, সরকার যদি জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অদক্ষতা প্রদর্শন করে, তবে জনগণ তা সহ্য করবে না এবং সহজভাবে মেনে নেবে না। শনিবার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)-এ জাতীয়তাবাদী টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন (জেটেব) আয়োজিত তৃতীয় কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব মন্তব্য করেন।

তারেক রহমান বলেন, স্বৈরাচার পালানোর পর একটি বিধ্বস্ত দেশের দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। মাফিয়া সরকারের তৈরি করা জঞ্জাল তিন মাসে দূর করা সম্ভব নয়। আবার তিন মাস পরে সরকারের সফলতা/ব্যর্থতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন ওঠা অস্বাভাবিক বা অন্যায্যও নয়। তবে সরকার পরিচালনায় অদক্ষতা দেখতে পেলে জনগণ সহজভাবে মেনে নেবে না।

তিনি বলেন, আমি আগেও বলেছি, সংস্কারকাজ করতে গিয়ে অগ্রাধিকারের সেটিংস যদি ভুল হয় তাহলে জনগণের কাছে সরকারের অদক্ষতা হিসেবেই সেটা বিবেচিত হবে। দুদিন আগে আহতরা হাসপাতাল থেকে যেভাবে বের হয়ে এসেছেন, সেটা আমাদের বিবেকবান প্রত্যেকটা মানুষের জন্যই লজ্জাজনক বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে আহতদের পুনর্বাসন, চিকিৎসা ও নিরাপত্তা কেন অগ্রাধিকার লিস্টে নেই, থাকলেও কত নম্বরে ছিল?

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, গত ১৫ বছর স্বৈরাচারী সরকার দেশকে আমদানিনির্ভর, পরনির্ভর ও ঋণনির্ভর করেছে। এমন অবস্থা থেকে দেশকে বের করে আনা প্রয়োজন। বের করে এনে যে কোনো উপায়ে সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। বিশেষ করে গার্মেন্টস খাত আরও লাভজনক ও বিশ্ববাজারে চাহিদা তৈরিতে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করছে বিএনপি। এছাড়া ক্ষুদ্র ও মাঝারি বিশেষ করে এসএমই খাতে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়িয়ে অন্তর্ভুক্তি বাড়ানোর বিষয়টিও বিএনপির বিবেচনায় রয়েছে।

তিনি বলেন, একটি দেশের রাজনীতি যদি রুগণ হয় তাহলে অর্থনীতিও রুগণ হতে বাধ্য। স্বৈরাচারী আমলে আমরা সেটা দেখেছি। তারা উন্নয়নের নামে যে মেগা প্রজেক্ট করে তার আসল রূপ কিন্তু এখন বের হয়ে আসছে।


তিনি আরও বলেন, বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের উন্নয়নে ঐতিহাসিক সনদ বলে আমরা মনে করি। ঘোষিত এই ৩১ দফা বাস্তবায়নে মানসম্পন্ন ও প্রায়োগিক শিক্ষার ওপরও কিন্তু জোর দেওয়া হয়েছে। আমরা মনে করি জনসংখ্যা কোনো অভিশাপ নয় বরং এই জনসংখ্যাকে যদি মানবসম্পদে রূপান্তর করা যায় তাহলে দেশের উন্নয়নে এটাই বড় শক্তি।

তারেক রহমান বলেন, আমরা দেখেছি অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে। জনগণ আশা করছে, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ পরিবেশে ভোট দিতে সক্ষম হবে। জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করার সুযোগ পাবে। জনগণ যখন সত্যিকার অর্থে বুঝতে পারবে তাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার কাজ করছে, তখন জনগণের সঙ্গে সম্পর্কটা দৃঢ় হবে।

দেশকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আমাদের সবার লক্ষ্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, জনগণের জীবনযাত্রাকে একটু ভালো করা, শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ব্যবস্থা ভালো করা, বেকারদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করা, মানুষের চিকিৎসার ব্যবস্থা ভালো করা, নিরাপত্তা একটু ভালো করা- অতীতে যখনই জনগণের ভোটে বিএনপি সুযোগ পেয়েছে তখন চেষ্টা করেছে যতটুকু সম্ভব এই কাজগুলো করার।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য সংস্কার কাজ করছে, আমরা তাদের সমর্থন করি। প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে নির্বাচন ব্যবস্থা করবেন। আমাদের সতর্ক থেকে কাজ করতে হবে এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন, শামসুজ্জামান দুদু, নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, ফরহাদ হালিম ডোনার, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক মিনহাজুর রহমানসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আগত সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।

নুসরাত

×