উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব সোহেল আকন
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. বশির গাজীকে তার কার্যালয়ে গিয়ে হুমকি দিয়েছেন উপজেলা কৃষক দলের দলের সদস্য সচিব সোহেল আকন। বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটেছে।
তবে কৃষক দলের সদস্য সচিব সোহেল আকন হুমকির বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় কৃষি প্রণোদনার যে তালিকা তৈরি করা হয়, তাদের মধ্যে অধিকাংশ প্রকৃত কৃষক ছিল না। প্রকৃত কৃষকদের কৃষি প্রণোদনার জন্য তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে অনুরোধ করতে গিয়েছিলেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. বশির গাজী বলেন, ঘটনার দিন বেলা ১১টার দিকে সোহেল আকন নামের এক ব্যক্তি ১৪-১৫ জন লোক নিয়ে তার অফিস কক্ষে ঢুকেন এবং নিজেকে উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব পরিচয় দিয়ে আমাকে বলেন, আমরা কৃষক দলের পক্ষে ১২শ ব্যক্তির নামের তালিকা দিব। ওই তালিকার সকলকে কৃষি প্রণোদনার অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। আমি তখন সোহেল আকনকে বলি প্রাপ্ত তালিকা যাচাই বাচাই করেই প্রকৃত কৃষকদের মাঝে প্রণোদনা দিতে হবে। তখন তিনি উত্তেজিত হয়ে উঠেন।
একপর্যায়ে আমাকে বলেন, প্রকৃত কৃষক বুঝি না, আমারা যে ১২শ নামের তালিকা দিবে সেই নামের সকলকেই প্রণোদনা দিতে হবে। এ নিয়ে আমার সঙ্গে বাকবিতাণ্ডা শুরু করেন। একপর্যায়ে তাদের তালিকা অনুযায়ী নাম না দিলে খবর আছে বলে হুমকি দেন।
এ সময় আমার অফিস কক্ষে উপস্থিত উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ ও উপজেলা যুব দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন তাকে শান্ত করেন। ওই সময় কৃষকদলের সদস্য সচিব সোহেল আকনের সঙ্গে বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব অলিয়ার রহমান ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব আপেল মাহমুদ ফিরোজ ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে উঠলে আমি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করি। ঘটনার সময় কৃষক দলের সঙ্গে উপজেলা বিএনপির সাবে সদস্য সচিব(বহিস্কৃত) অলিয়ার রহমানও ছিল।
উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব অলিয়ার রহমান বলেন, আমি কাকতলীয় ভাবে ঘটনার সময় ইউএনও কার্যালয় উপস্থিত ছিলাম। আমি যতটুকু জানেছি, উপজেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব সোহেল আকন ইউএনও কার্যালয়ে যাওয়ার আগে ১২শ কৃষকের নামের তালিকা নিয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ দাসের কাছে যান।
ওই সময় তিনি নাকি বলেন, কৃষিবিদ মিজানুর রহমার লিটুর দেয়া কোন নামের তালিকা নেয়া যাবে না। ইউএনও স্যার এ কমিটির সভাপতি। আপনি তার কাছে যান। তখন সোহেল আকন ওই তালিকা নিয়ে ইউএনও কার্যালয়ে গেলে এ নিয়ে তার সঙ্গে উত্তেজিত বাক্য বিনিময় হয়।
কৃষিবিদ মিজানুর রহমান লিটু বাংলাদেশ কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অনিরুদ্ধ দাস বলেন, কৃষিবিদ মিজানুর রহমান লিটু প্রসঙ্গ নিয়ে আমার সঙ্গে আগত ব্যক্তিদের কোন কথা হয়নি। আমি বলেছি, ইউএনও স্যার সভাপতি আপনি তার সঙ্গে আলাপ করেন।
সরকার চলতি অর্থ বছরে বাউফল উপজেলায় ৮ হাজার ৬শ ৯৫ জনকে কৃষি প্রণোদনা হিসাবে ১০ লাখ ২৬ হাজার ৪শ ৫১ টাকা মূলের গম, ভুট্টা, সরিষা, সূর্যমুখী, চিনাবাদাম, পেঁয়াজ, মুগ, মুসর, খেসারি ও ডালের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষে বীজ ও কীটনাশক প্রদানের সিদ্ধান্ত নেয়।
এসআর