যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কে লাঞ্ছিতের ঘটনায় বিএনপি নেতা এ কে শরফুদ্দৌলা ছোটলুকে শোকজ ও যুবদল নেতা হাবিবুল্লাহকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ৫ কোটি টাকার চিকিৎসা উপকরণ সরবরাহের (এমএসআর) টেন্ডারের সব কাজ না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হন জেলা বিএনপির সদস্য একে শরফুদ্দৌলা ছোটলু। তার নেতৃত্বে নিজ কক্ষে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদকে লাঞ্ছিত করা হয় বলে অভিযোগ উঠে। গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সিসিটিভি ফুটেজের ভিডিওটি।এর পর বিএনপি ঐ নেতাকে ঘিরে সমালোচনার ঝড় উঠে। এ ঘটনায় বিব্রত জেলা বিএনপির শীর্ষ নেতাকর্মীও।
এই বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু বলেন, ‘বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে তারা জানতে পেরে যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার বিষয়টি আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। জেলা বিএনপি বিষয়টি নিন্দনীয় ও অগ্রহণযোগ্য মনে করে এবং তারা এর তীব্রভাবে নিন্দা জানান।’
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে, কতিপয় ঠিকাদার ও সুপারের মধ্যে এ ঘটনার সঙ্গে কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নাই। বিএনপি যেমন রাষ্ট্রক্ষমতায় নাই,তেমন টেন্ডার সংক্রান্ত বা দখলদারিত্বের মতো কোনো বিষয় বিএনপির কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা দলে কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।অতএব ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক বা ঠিকাদারি কাজে কেউ অনৈতিক সুবিধা নিতে চাইলে সে ব্যক্তি দলের যে কোনো স্তরের নেতা বা কর্মী হোক তার বিরুদ্ধে দল কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিচ্ছে যা অব্যাহত থাকবে।ফলে এ ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার জেলা যুবদলের সহসাংগঠনিক সম্পাদক হাবিবুল্লাহকে যুবদল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।এছাড়া ওই সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিতির কারণ ব্যাখ্যা করতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য এ কে শরফুদ্দৌলা ছোটলুকে শোকজ করা হয়েছে।তদন্তে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে দল কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে,বিগত পতিত সরকারের টেন্ডারবাজি ও দখলবাজির কারণে প্রতিটা প্রতিষ্ঠান ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে।তাই কোনো রকম টেন্ডারবাজি ও দখলবাজি বিএনপি সমর্থন করে না এবং ভবিষ্যতেও করবে না।তাই বিএনপির অঙ্গ এবং সহযোগী সংগঠনের কোনো ব্যক্তি যদি এহেন কোনো কর্মকাণ্ডের সঙ্গে ন্যূনতম সংশ্লিষ্ট হন তাহলে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থার এবং প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থার আওতাভুক্ত হবেন বলে কঠোর হুঁশিয়াররি দেয়া হচ্ছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে,আজীবন সংগ্রামী ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করা বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সাবেক সদস্য মরহুম তরিকুল ইসলামের পরিবারের কোনো সদস্য ঠিকাদারী করেন না। বরং রাষ্ট্র ক্ষমতায় থাকাকালে সব প্রকার দখলদারিত্বের বিষয় তিনি কঠোরভাবে দমন করেছেন যা যশোরবাসী জানে। অতএব যশোর জেলা বিএনপি সব ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল ও থাকবে।
শোকজের বিষয়ে জেলা বিএনপির সদস্য এ কে শরফুদ্দৌলার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি। আর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘ঘটনার পর আমি আর আইনি কোন পদক্ষেপে যায়নি। দুজনের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। বিষয়টি সমাধান হয়ে গেছে।’ তবে এর আগে তিনি বলেছিলেন, ‘ক্ষমতাধর লোকজন তাঁরা। আমাদের কিছুই করার নেই। কোথাও কোনো অভিযোগ করিনি। তবে বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে।’
তাবিব