ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ অক্টোবর ২০২৪, ১২ কার্তিক ১৪৩১

সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল

রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে সিদ্ধান্ত সংবিধান অনুযায়ী

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ২৭ অক্টোবর ২০২৪

রাষ্ট্রপতি ইস্যুতে সিদ্ধান্ত সংবিধান অনুযায়ী

যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে শহীদ জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান বিএনপি মহাসচিবসহ দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা

রাষ্ট্রপতি অপসারণে হঠকারী সিদ্ধান্ত না নিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সবকিছু সাংবিধানিকভাবে করতে হবে। আমরা চাই অতিদ্রুত সংস্কার করে জাতীয় সংসদ নির্বাচন। 
যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রবিবার দুপুরে সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে শেরেবাংলানগরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মাজারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন। 
এর আগে শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের বিষয়ে তাঁদের দাবি নিয়ে বিএনপির অবস্থান জানতে চাইলে ফখরুল বলেন, গণঅভ্যুত্থানের ফসলকে ঘরে তোলার জন্য বাংলাদেশের বিপ্লবকে যদি সংহত করতে হয়, তা হলে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। তবে বিএনপির সর্বোচ্চ ফোরাম স্থায়ী কমিটি রয়েছে, সেই ফোরামে আলোচনা শেষে আমরা আমাদের অবস্থান পরিষ্কার করব।
এক প্রশ্নে ফখরুল বলেন, আমরা আগেও বলেছি, গণঅভ্যুত্থানের ফসলকে ঘরে তোলার জন্য বিপ্লবকে যদি সংহত করতে হয়, তা হলে জাতীয় ঐক্য প্রয়োজন। সেখানে হঠকারী সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। রাষ্ট্রপতি পরিবর্তন সাংবিধানিক প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত বলে আমরা মনে করি। তার জন্য বেশি প্রয়োজন অতি দ্রুত নির্বাচনকেন্দ্রিক সংস্কার শেষে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করা। তাই আমরা বারবার বলছি, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন করার কথা। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পর সাংবিধানিক রাজনৈতিক শক্তির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। তা হলেই সমস্ত সংকট নিরসন করা যাবে। তবে নির্বাচন বিলম্ব হলে সংকট প্রকট হবে। 
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমরা শপথ নিয়েছি আমাদের যে স্বাধীনতা সেটা যেকোনো মূল্যে রক্ষা করব।  আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সংগ্রাম শেষে ৫ আগস্ট দ্বিতীয়বার দেশ স্বাধীন হয়েছে। এই সংগ্রামে যুবদলের ভূমিকা নিঃসন্দেহে উল্লেখযোগ্য। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া অসুস্থ। তা সত্ত্বেও আমাদের নেতা তারেক রহমানের নেতৃত্বে যুবদল আগের চেয়ে অনেক বেশি শক্তিশালী হয়েছে। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সফল পরিণতিতে যুবদলের ভূমিকা অক্ষুণœ থাকবে। যারা দেশের ভালো চায় না, তাদের প্রতিহত করতে যুবদল অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বর্তমান সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের আহ্বায়ক খন্দকার এনামুল হক এনাম, সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন, কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিন, ঢাকা মহানগর উত্তর যুবদলের আহ্বায়ক শরীফ উদ্দিন জুয়েল, সদস্যসচিব সাজ্জাদুল মিরাজ প্রমুখ। 
যুবদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের মাজারে সংগঠনের বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী মিছিল সহকারে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উপস্থিত হন। এ সময় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন  ধরনের স্লোগান  দেন। তাদের হাতে শোভা পায় জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি সংবলিত ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড। 
এদিকে যুবদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুপুরে নয়া পল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দিনব্যাপী মেডিক্যাল ক্যাম্প ও স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি উদ্বোধন করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। এ সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন এবং যুবদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
১৯৭৮ সালের ২৭ অক্টোবর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দলের অঙ্গ সংগঠন যুবদল প্রতিষ্ঠা করেন। বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, জনগণের গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যে উৎপাদনমুখী রাজনীতির মাধ্যমে যুব শক্তিকে কর্ম শক্তিতে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নিয়ে যুবদল প্রতিষ্ঠা করা হয়।
যুবদলের প্রতিষ্ঠাকালীন আহ্বায়ক আবুল ছিলেন আবুল কাশেম, যিনি পরবর্তীতে সংগঠনটির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর সাইফুর রহমান ছিলেন যুবদলের প্রথম সাধারণ সম্পাদক। এর পর বিভিন্ন সময় যুবদলের শীর্ষ নেতৃত্বে ছিলেন মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, বরকতউল্লাহ বুলু, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, সাইফুল আলম নীরব, সুলতান সালাউদ্দিন টুকু প্রমুখ।

×