ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

আলোচনা সভায় গয়েশ্বর

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৫৬, ২৪ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত

গয়েশ্বর চন্দ্র রায়

ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করা অন্তর্বর্তী সরকারের দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে  জাগ্রত বাংলাদেশ নামক একটি সংগঠন আয়োজিত ‘দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলের করণীয়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। 
অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশ করে গয়েশ্বর বলেন, জনগণ তো আপনাদের বিশ্বাস করে দায়িত্ব দিয়েছেন। আপনারা যদি অনন্তকাল ক্ষমতায় থাকতে চান তাহলে আমরা সেটা বিশ্বাস করব কীভাবে! আমরা কিছুদিন দেখি, এর পর অতীতে যা করেছি ভবিষ্যতেও তা করব। আমরা যেহেতু মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত আছি, তাহলে আমাদের মারতে আর পারবে না। এ সরকার আমাদের বিশ্বাস ও জনগণের আস্থা ভঙ্গ করুক সেটা চাই না।  
গয়েশ্বর বলেন, নির্বাচন করার জন্য যতটুকু সময় দেওয়া দরকার আমরা ততটুকু সময় দেব। নির্বাচন করার সময়টা অতিক্রম হয়ে গেলে জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য বিএনপি তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঘরে বসে থাকবে না। অতীতে রাজপথে থেকে যেমনভাবে সংগ্রাম করেছি, ভবিষ্যতেও করব। আমরা শুধু একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনে জনগণের ভোটের মাধ্যমে সরকার গঠন করতে চাই।  
গয়েশ্বর বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করেছে, এতে আমরা আপত্তি করছি না। আমরা খুশি হয়েছি। কিন্তু যদি বিএনপিকে নিষিদ্ধ করে তখন আমরা কি করব? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার জামায়াতের অনেক লোককে ফাঁসি দিয়েছে এবং অত্যাচারও করেছে।  বর্তমান সরকার ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ করলেও শেখ হাসিনাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেনি। সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, যারা বিভিন্ন সংগঠনের নামে মানুষ হত্যা, ঘুম ও নির্যাতন করেছে তারা তো আরামে আছে। তাদের ধরে ধরে বিচার করেন। অন্যায় করলে তার পরিণাম কি হয় সেটির দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
গয়েশ্বর বলেন, এত লোক সীমান্ত অতিক্রম করল, বিদেশে চলে গেল, হারুনের মতো লোক আমেরিকা চলে গেল কার সাহায্যে? কে তাদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে? এর জবাব কার কাছে চাইব? কে দেবে এই জবাব? যারা ক্যান্টনমেন্টে আশ্রয় নিয়েছে, তারা সেখানে গেলো কীভাবে? অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় না দাঁড় করিয়ে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ করে দিলো কারা? এর জবাব কি অন্তর্বর্তী সরকার দেবে? আয়োজক সংগঠনের সভাপতি দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকার সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম কলিমের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।
এখনো দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি সরকার- রিজভী ॥ এখনো সরকার দ্রব্যমূল্যের সিন্ডিকেট ভাঙতে পারেনি বলে জানিয়েছেন বিএনপির মুখপাত্র ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার বিকেলে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। 
রিজভী বলেন,  দেশের মানুষ খেয়েপড়ে বাঁচতে চায়। নিত্য পণ্য আমদানির জন্য বিকল্প দেশ দেখা দরকার ছিল, যে উদ্যোগ সরকার নেয়নি। ইনস্টিটিউট পর্যায়ে যে কাজগুলো করা দরকার সেগুলো অন্তর্বর্তী সরকার নেয়নি।  
রিজভী বলেন, বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কিংবা দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও জাতীয়তাবাদী পরিচয় দিয়ে কোনো সংগঠন করার ব্যাপারে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।  বিএনপির কেউ যদি ভুঁইফোড় সংগঠনের ব্যানারে কোথাও যায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রিজভী বলেন, পৃথিবী কাঁপানো এক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বিদায় করেছে ছাত্র-জনতা। এই সরকারকে সরাতে অনেককে রক্ত আর প্রাণ দিতে হয়েছে। তাই তাদের রক্ত যেন বৃথা না যায় সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। 
রিজভী বলেন, দুর্ভিক্ষ হওয়া দেশে একমাত্র রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান  দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে পেরেছিলেন। তারপরও আমাদের কেন পরনির্ভরশীল হতে হবে? সিন্ডিকেট ভাঙতে সরকারের কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না। সিন্ডিকেট না ভাঙতে পারলে খেটে খাওয়া নি¤œ আয়ের মানুষ বাঁচতে পারবে না। অন্তর্বর্তী সরকারকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে। 
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, দলের নেতা  শামীমুর রহমান শামীম, আব্দুল খালেক, আসাদুল করিম শাহীন, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, এসএম জাহাঙ্গীর,  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

×