ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১

ঢাকা উত্তর বিএনপির সভাপতি-সম্পাদক হওয়ার দৌ‌ড়ে এগি‌য়ে যারা

অনলাইন রিপোর্টার

প্রকাশিত: ১৪:৫০, ২০ অক্টোবর ২০২৪; আপডেট: ১৫:০৮, ২০ অক্টোবর ২০২৪

ঢাকা উত্তর বিএনপির সভাপতি-সম্পাদক হওয়ার দৌ‌ড়ে এগি‌য়ে যারা

আলোচনায় যেসব নেতারা।

বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তর শাখার নতুন কমিটি দ্রুতই দেওয়া হবে। এরই মধ্যে আগের কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর বেশ কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে গেছে। তবে নতুন কমিটিতে কারা জায়গা পাবেন তা নিয়ে চলছে যাচাই-বাছাই। আর দল ও নেতাকর্মীদের কাছে যাদের ক্লিন ইমেজ রয়েছে তাদেরই নতুন কমিটিতে প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে। এছাড়া, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের মহানগর উত্তরে এরই মধ্যে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব আসতে পারে। আগামী সপ্তাহের মধ্যে উত্তরে নতুন আংশিক কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।
 
জানা গেছে, নতুন কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে নানামুখী তৎপরতা, তদবির, জল্পনা-কল্পনা চলছে। বিএনপির ঢাকা মহানগরকেন্দ্রিক রাজনীতিতে যারা সক্রিয়, তারা নিজ নিজ বলয় থেকে নেতৃত্ব উঠিয়ে নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তারা। একই সঙ্গে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানও তার নিজস্ব চ্যানেলে যোগ্য ও ক্লিন ইমেজের নেতৃত্বের ব্যাপারে খোঁজখবর নিচ্ছেন। 

বিএনপির দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতা জানিয়েছেন, ‘তারেক রহমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আনতে চান। এ বিষয়টি মাথায় রেখে সম্পূর্ণ ক্লিন ইমেজের নেতাদের দিয়ে মহানগর উত্তর বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করতে চান তিনি।’
 
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহানগর উত্তরের নতুন কমিটিতে যাদের নাম আলোচনায় রয়েছে তার মধ্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল এবং বিলুপ্ত কমিটির সদস্য সচিব আমিনুল হক ও মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এম কফিল উদ্দিন।  

এ বিষয়ে মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক এম কফিল উদ্দিন ব‌লেন, ‘দলের প্রয়োজনে হাইকমান্ড যখন যে দায়িত্ব দিয়েছে, তা সবসময় সততার সঙ্গে পালন করার চেষ্টা করেছি এবং আজীবন করে যাব। এ ক্ষেত্রে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তিনি যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাকেই স্বাগত জানাব। নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে তাদের পাশে রয়েছি। সবসময়ই সততার সঙ্গে কাজ করেছি। আগামীতেও আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হলে তা শতভাগ নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে পালন করব। তিনি উত্তরের সাধারণ সম্পাদক পদে নেতৃত্বে আসতে চান।’

এদি‌কে নতুন কমিটি প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলছে। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান যখন উপযুক্ত মনে করবেন, তখনই কমিটি দেবেন।’

জানা যায়, মাত্র আড়াই মাসের ব্যবধানে গত ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে বিএনপি। এর আগে গত ৭ জুলাই সাইফুল আলম নিরবকে আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্য সচিব করে দুই সদস্যের এই আংশিক কমিটি গঠন করা হয়েছিল। বিএনপির একাধিক কেন্দ্রীয় নেতা বলেন, হাইকমান্ডের কাছে আহ্বায়ক কমিটির বিরুদ্ধে দলের শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে। লিখিত এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেই দল ব্যবস্থা নিয়েছে।

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিশৃঙ্খলা রোধ এবং সাংগঠনিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ‘জিরো টলারেন্স নীতি’ গ্রহণ করেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সারা দেশে দল ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের ৩০০ এর অধিক নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়। কয়েকটি জেলা কমিটি বিলুপ্ত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির কমিটিও বিলুপ্ত করে হাইকমান্ড। দলটির একাধিক দায়িত্বশীল নেতার মতে, বিশৃঙ্খলা রোধে তারেক রহমানের এমন কঠোর অবস্থান দল ছাড়াও দেশের মানুষের কাছে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছে।

সংগঠনকে গতিশীল এবং নেতৃত্বের বিকাশে ২০১৭ সালের এপ্রিলে ঢাকা মহানগর বিএনপিকে দুই ভাগে ভাগ করে কমিটি দেওয়া হয়। উত্তরে এমএ কাইয়ূমকে সভাপতি এবং আহসানউল্লাহ হাসানকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। এরপর ২০২১ সালের আগস্টে আমানউল্লাহ আমানকে আহ্বায়ক ও আমিনুল হককে সদস্য সচিব করে উত্তর বিএনপির কমিটি গঠন করা হয়।

এদিকে, সভাপতি পদে আলোচনায় রয়েছেন, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এমএ কাইয়ূমও। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে যুবদলের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মামুন হাসান, মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন, এজিএম শামসুল হক, মোস্তফা জামান, আক্তার হোসেন, সাবেক সদস্য এবিএমএ রাজ্জাকের নামও শোনা যাচ্ছে।

এম হাসান

×