ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৪ কার্তিক ১৪৩১

সরকারের কাছে এলডিপির ২৩ দফা দাবি

প্রকাশিত: ১৮:৫৫, ১৯ অক্টোবর ২০২৪

সরকারের কাছে এলডিপির ২৩ দফা দাবি

লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সংলাপে আওয়ামী লীগ দল নিষিদ্ধসহ ২৩ দফা দাবি জানিয়েছে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি)।

শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সংলাপ শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা জানান এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবির কথা উল্লেখ করে অলি আহমদ বলেন, যারা আমাদের ছেলেমেয়েদের হত্যা করেছে তারা কি আমাদের দুলাভাই। তাদের কি আমরা নরম বিছানায় শোয়ায়ে রাখব।

এলডিপির প্রেসিডেন্ট বলেন, নির্বাচন দেবেন কি? সব চোর-ডাকাতরা যদি থেকে যায়। যারাই দুর্নীতি করেছেন তাদের বিচার করতে হবে। যারা আমার ছেলেমেয়েদের হত্যা করেছে তাদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগ দল নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে হবে। যারা জনগণে টাকা লুণ্ঠন করেছে তাদের থেকে সেই টাকাগুলো নিয়ে আসতে হবে। তারপরে নির্বাচন করেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে জামায়াতের নেতাদের ফাঁসি প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওদের তো ফাঁসি দিয়েছেন, এখন আওয়ামী লীগকে ফাঁসি দিতে হবে। জামায়াতকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে, এখন আওয়ামী লীগকে ফাঁসি দেন।

এলডিপির প্রেসিডেন্ট বলেন, আপনারা আমরা সবাই, পুরা জাতি একটা যুদ্ধের মধ্যে গেলাম জুলাই-আগস্ট মাসে। এই যুদ্ধটা কার বিরুদ্ধে হলো, এই যুদ্ধটা হলো আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে যুদ্ধটা কেন হলো, তারা পুলিশকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে, প্রশাসনকে অন্যায়ভাবে ব্যবহার করেছে, জনগণের সঙ্গে মুখোমুখি করে দিয়েছে। দেশকে ধ্বংসের দিকে ঢেলে দিয়েছে। দেশ দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছিল, আমাদের অনেক ছেলেমেয়েরা হতাহত হয়েছে। প্রায় দেড় হাজারের বেশি আমাদের ছেলেমেয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। অনেকে বলে আরও বেশি হবে, যেগুলো পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। ১৫-২০ হাজারের বেশি বিভিন্নভাবে আহত হয়েছে।

কর্নেল অলি বলেন, আজকে কী কারণে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে না? আজকে আমরা আবার বলেছি, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে। কারণ আওয়ামী লীগ কোটি মানুষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। তাদের রাজনীতি করার এখানে কোনো অধিকার নেই। তারা সবাইকে ব্যবহার করেছে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য। শেষ পর্যন্ত তারা জনতার চাপে টিকে থাকতে পারেনি, ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।

অধ্যাপক ইউনূসকে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন জানিয়ে অলি আহমদ বলেন, আমরা বলেছি সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যান। আমরা আপনাদের সর্বতোভাবে সাহায্য করব। কারণ এটা একটা ওয়ার টাইম সরকারের মতো। এটা পিস টাইম সরকার না। ওয়ার টাইম সরকারকে যা করতে হয়, কঠোর হস্তে দমন করতে হবে। এখানে সহজ-সরলভাবে কিছু করার অবকাশ নেই। যারা অন্যায় করবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর হতে হবে।

তিনি বলেন, হাসিনার যারা কট্টর সমর্থক ছিল তাদের চাকরিচ্যুত করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে হবে। প্রয়োজনে জেলে নিক্ষেপ করতে হবে।

অলি আহমদ বলেন, আওয়ামী লীগের যারা সমর্থক ছিলেন, তারা শেখ হাসিনাকে এখনো সাহায্য করছেন। তারা চিহ্নিত ব্যক্তি, তাদের চিহ্নিত করার কোনো প্রয়োজন নেই।

যারা জনগণের টাকা লুট করেছেন তাদের আর্মি অথবা পুলিশের ব্যারাকে নিয়ে ফ্লোরে শোয়ানোর পরামর্শ দিয়ে এলডিপির প্রেসিডেন্ট বলেন, অনেক দিন তো নরম বিছানায় শুয়েছেন। যে টাকা তারা লুট করেছেন সেগুলো রাষ্ট্রকে পরিশোধ করতে বাধ্য করা হোক, তাহলে দেশ লাভবান হবে।

২৩ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন জানিয়ে অলি আহমদ বলেন, আজকেও আমরা ২৩টি প্রস্তাব দিয়েছি। এই ২৩টি প্রস্তাব দেশের জনগণের জন্য যা প্রয়োজন, সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন, সুন্দর প্রশাসন, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার জন্য, গরিব, মেহনতি মানুষ যারা দ্রব্যমূল্যের কারণে কষ্ট পাচ্ছে তাদের সুবিধার জন্য এই পয়েন্টগুলো আমরা দিয়েছি।

শহিদ

×