রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারে দুটি কমিটি গঠন

বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক কারণে হওয়া হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের লক্ষ্যে দুটি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এর মধ্যে একটি জেলা পর্যায়ের কমিটি এবং অন্যটি মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি।
রবিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ আবদুল মোমেনের সই করা এ-সংক্রান্ত একটি প্র্র্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। সেখানে কমিটি দুটির কাজের ধরন ও কাজের পরিধিও নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন থেকে জানা যায়, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্র্রত্যাহারের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করতে হবে। জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশপ্র্রাপ্তির পর সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং প্র্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্র্রস্তুত করা ও মামলা প্র্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্র্রহণ করবে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি।

বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক প্র্রতিহিংসা ও অন্যান্য নানা কারণে রাজনৈতিক নেতা-কর্মী ও নিরীহ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা হয়েছে। সেগুলো প্র্রত্যাহারে সুপারিশের লক্ষ্যে সরকার এই দুটি কমিটি গঠন করেছে বলেও প্র্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকবেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, সদস্য সচিব অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবং সদস্য পুলিশ সুপার (মহানগর এলাকার জন্য পুলিশের একজন ডেপুটি কমিশনার) ও পাবলিক প্রসিকিউটর (মহানগর এলাকার মামলাগুলোর জন্য মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর)।
জেলা পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কেও প্র্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে। তা হলো রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্ব^রের মধ্যে সংশ্লিষ্ট জেলার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদনপত্র দাখিল করতে হবে। আবেদনের সঙ্গে এজাহার ও প্র্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিযোগের সত্যায়িত কপি দাখিল করতে হবে। আবেদনপ্র্রাপ্তির সাত কর্মদিবসের মধ্যে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট দরখাস্তটি জেলার পাবলিক প্র্রসিকিউটরের (ক্ষেত্রবিশেষে মেট্রোপলিটন পাবলিক প্র্রসিকিউটর) কাছে মতামতের জন্য পাঠাবেন। 
প্র্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আবেদনপ্র্রাপ্তির ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে পাবলিক প্র্র্রসিকিউটর (ক্ষেত্রবিশেষে মেট্রোপলিটন পাবলিক প্র্র্রসিকিউটর) তার মতামত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর পাঠাবেন। পাবলিক প্র্র্র্র্রসিকিউটরের মতামত সংগ্রহ করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আবেদনটি সাত কার্যদিবসের মধ্যে জেলা কমিটির সভায় উপস্থাপন করবেন।
জেলা কমিটির কাছে যদি মনে হয় মামলাটি রাজনৈতিক বা অন্য কোনো উদ্দেশ্যে হয়রানির জন্য করা হয়েছে, তাহলে মামলাটি প্র্রত্যাহারের জন্য কমিটি সরকারের কাছে সুপারিশ করবে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সেই সুপারিশ, মামলার এজাহার, অভিযোগপত্রসহ আবেদন পাওয়ার ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে নির্দিষ্ট ছক অনুযায়ী তথ্যাদিসহ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।
মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির কার্যপরিধি ও কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশপ্র্রাপ্তির পর মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবে। প্র্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্র্রস্তুত করবে এবং মামলা প্র্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর আওতাধীন মামলাগুলোর মধ্যে রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলাগুলো ‘দ্য ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৫৪-এর ১০(৪)’ ধারার বিধানমতে কমিশনের লিখিত আদেশ ছাড়া প্রত্যাহার করা যায় না। তাই এ ধরনের মামলা চিহ্নিত করে তালিকা তৈরি করতে হবে। এ ধরনের মামলার বিষয়ে করণীয় পরে নির্ধারণ করা হবে।
মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটির সভাপতি হিসেবে থাকবেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এবং সদস্যসচিব হবেন জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-১ শাখার উপসচিব/জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব/সহকারী সচিব। আর সদস্য হিসেবে থাকবেন জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব, অতিরিক্ত সচিব (আইন ও শৃঙ্খলা) ও যুগ্ম-সচিব (আইন) এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি (যুগ্ম-সচিব পর্যায়ের নিচে নয়)।