শেখ হাসিনা।
আন্দোলনের তোপে পদত্যগ করে ভারতে পালিয়ে যান আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে একের পর এক মামলায় আসামি করা হচ্ছে হাসিনাকে। তার সঙ্গে দলের দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীর নামেও মামলা করা হচ্ছে। আর এমনই পরিস্থিতিতে হাসিনার জন্য আইনি লড়াইয়ে নামার অপেক্ষায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের আইনজীবীরা।
জানা গেছে, মামলাগুলো আইনি প্রক্রিয়ায় লড়বে আওয়ামী লীগ। সময় হলেই নেতাকর্মীরা আইনজীবী নিয়োগ দেবেন। প্রয়োজন হলে বিদেশি আইনজীবীও নিয়োগ দেওয়া হবে।
এদিকে আওয়ামী লীগের একাধিক সিনিয়র নেতা গণমাধ্যমকে জানান, মামলা লড়াইয়ের জন্য এখনও উপযুক্ত সময় আসেনি। সময় হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সূত্র মতে, ক্ষমতা হারানোর পর থেকে মামলা আর হামলার ভয়ে দিন পার করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দীর্ঘদিন ক্ষমতায় থাকা দলটির কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বাড়িতে অবস্থান করতে পারছেন না। কেউ আত্মগোপনে চলে গেছেন, কেউ কেউ দেশের বাইরে অবস্থান করছেন। যারা বাড়িতে থাকছেন, রাত হলেই তারা অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। হামলা থেকে বাঁচলেও রেহাই মিলছে না মামলা থেকে। এরই মধ্যে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ও সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের নামে দেড় শতাধিক মামলা হয়েছে। বাদ পড়েননি শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলও।
আওয়ামী লীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘দেশের যে পরিস্থিতি, এখনও মামলা মোকাবিলার সময় হয়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও নিয়ন্ত্রণে নেই। এ পরিস্থিতিতে কে মামলা মোকাবিলা করবে? আদালতের মতো একটি জায়গায় হামলা করা হচ্ছে। ব্যাপক নিরাপত্তাবেষ্টনীর মধ্যে যেখানে আটক নেতাকর্মীরা নিরাপদ নয়, সেখানে আইনজীবীরাও নিজেদের নিরাপদ বোধ করছেন না। আমরা অপেক্ষা করছি, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আমাদের দলের নিজস্ব আইনজীবী আছেন। তারাই মামলাগুলো লড়বেন। তবে, এখন নয়। আইনজীবীরা প্রস্তুতি নিচ্ছেন। সময় হলেই আইনি লড়াইয়ে নামবেন তারা।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি আমাদের অনুকূলে নয়, আমরা সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। সময় মতো আমরা আইনি লড়াইয়ে নামব। প্রস্তুতি চলছে। প্রয়োজন পড়লে বিদেশি আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হবে। পরিস্থিতি ও সময় সেটি বলে দেবে।’
জানা যায়, ৫ আগস্টের পর থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৮২টি মামলার তথ্য পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ১৬২টিই হত্যা মামলা। এ ছাড়া, তার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় ১৩টি ও চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে ১০টিসহ ২৩টি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। মামলাগুলোতে শেখ হাসিনা ছাড়াও আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আরো অনেককে আসামি করা হয়েছে। আর এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, উপদেষ্টা ও শীর্ষপর্যায়ের নেতা মিলিয়ে ৩১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এম হাসান