অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড জনগণের প্রত্যাশা

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড জনগণের প্রত্যাশা বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের গণআন্দোলনে নিহতদের স্মরণে বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। তিনি আরও বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যেন দেশে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করা হয়।
আন্দোলনে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ ও ভাতা দেওয়ার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিষয়টি নিয়ে সরকারকে জোরালোভাবে বলতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিরোধী দলগুলোর ৬০ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান বিএনপি মহাসচিব।
দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, কোনোভাবেই চক্রান্তের শিকার হওয়া যাবে না। সবাইকে গণতন্ত্র এবং জনগণের পক্ষে থাকতে হবে।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, তারা হায়েনার মতো লুকিয়ে আছে, যে কোনো সময় আক্রমণ করতে পারে। তাদের প্রতিহত করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ১৬ বছর যেভাবে ঐক্যবদ্ধভাবে সংগ্রাম হয়েছে, এখন সেভাবেই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রের জন্য দেশের মানুষ সব সময় আত্মত্যাগ করেছেন, প্রাণ দিয়েছেন। ’৭১-এ যখন আমরা স্বাধীন হলাম, তখন ভেবেছিলাম সত্যিকার অর্থে আমরা একটা প্রকৃত গণতান্ত্রিক দেশ পাব। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য, যারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের দাবিদার ছিলেন প্রথম তাদের অর্থাৎ আওয়ামী লীগের হাতেই গণতন্ত্র ধ্বংস হয়।

’৭৫ সালে তারা একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। এ কথা একবার বললে হবে না, বারবার বলতে হবে। এই দলটি আবার ২০০৮ সালে নির্বাচনের পর রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসার পর অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রীয় সকল প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছে। 
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ছাত্রদের আন্দোলনকে বারবার দমন করতে নির্যাতন, গুম খুন করেছ। এর ফলে জুলাই মাসে ১৭ বছর পর দেশের গণতান্ত্রিক মানুষ জীবন দিয়ে ওই সরকারের পতন ঘটিয়েছে। আন্দোলনে যারা নিহত ও আহত হয়েছেন তাদের অভিবাদন জানাই।
তিনি বলেন, স্যালুট জানাই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে, গণতন্ত্রের প্রশ্নে তিনি কখনো আপস করেননি, মাথা নোয়াননি। দীর্ঘ ছয় বছর কারাগারে ছিলেন। ছাত্রদের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে তিনি মুক্ত হয়েছেন। সেই সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকেও অভিবাদন জানাই।
গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী ও রওশন আরা রতœাসহ নেতা-কর্মীদের ওপর নৃশংস হামলা এবং সংগঠনের কেন্দ্রীয় ক্রীড়া সম্পাদককে হত্যার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব বলেন, চারদিকে নাগিনীদের বিষাক্ত নিশ্বাস, তারা বিভেদ সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে। তারা পরিষ্কার করে বলতে চাচ্ছে, যে কোনো সময় আক্রমণ করবে। তাদের আক্রমণকে আমাদের প্রতিহত করতে হবে।

স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি জিলানীকে দেখতে হাসপাতালে ফখরুল : শুক্রবার গোপালগঞ্জে হামলায় আহত স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানীকে দেখতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে যান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। শনিবার দুপুরে তিনি সেখানে গিয়ে জিলানীসহ হামলায় আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন।