ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১

বিএনপির পর এবার জামায়াত ও গণতন্ত্র মঞ্চের হরতালের ডাক

প্রকাশিত: ২১:১৯, ২৮ অক্টোবর ২০২৩

বিএনপির পর এবার জামায়াত ও গণতন্ত্র মঞ্চের হরতালের ডাক

হরতাল

বিএনপি পর এবার রবিবার দেশব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ এবং বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জোট গণতন্ত্র মঞ্চ।

শনিবার (২৮ অক্টোবর) রাতে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে হরতালের ঘোষণা দেয় জামায়াত। অন্যদিকে বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আয়োজিত গণসমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে গণতন্ত্র মঞ্চ।

জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয়, রাজধানী ঢাকার শাপলা চত্বরে জামায়াত ঘোষিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তিন শতাধিক নেতাকর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করেছে। মিটিং-মিছিল করা যেকোনো রাজনৈতিক দলের সংবিধান স্বীকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার। জামায়াতের মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের বাস, লঞ্চ ও ট্রেন থেকে নামিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গ্রেফতার সম্পূর্ণ বেআইনি, অগণতান্ত্রিক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। আমি সরকারের এই অন্যায় গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। 
 
বিবৃতিতে এটিএম মাছুম বলেন, অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপির মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলা, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং জামায়াত ঘোষিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে পুলিশের বাধাদান ও মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আগামীকাল (রবিবার) সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাড়ি এবং ওষুধের দোকান হরতালের আওতামুক্ত থাকবে।

এদিকে হরতালের বিষয়টি নিশ্চিত করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে সরকার পতনসহ যে যুগপৎ আন্দোলন চলছে রবিবার হরতাল তারই অংশ। আমরা মাঠে থাকব।’

মান্না আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতারা রাস্তায় রাস্তায় লাঠি নিয়ে বেড়াচ্ছে। তারা পুলিশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তারা শান্তিপূর্ণ সমাবেশে হামলা চালিয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।’

এদিকে গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘এই সরকার পুলিশ দিয়ে বিএনপির সমাবেশে হামলা করিয়েছে। পুলিশ আন্দোলনকারীদের সহায়তা না করে তার উল্টো ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে বিএনপির ওপর হামলা করতে সহায়তা করেছে।’

ভাসানী অনুসারী পরিষদের আহ্বায়ক শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু বলেন, ‘ক্ষমতাসীন দলের তাণ্ডব আইয়ুব-মোনায়েম সরকারকেও হার মানিয়েছে। তারা বিএনপিসহ সব বিরোধী দলের ওপর বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে। তাদের এই হামলার প্রতিবাদে আমরা সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছি।’

এর আগে শনিবার সকাল থেকেই বিএনপির পূর্ব নির্ধারিত মহাসমাবেশ শুরু হয়। দুপুর দেড়টায় নাগাদ বিচারপতিদের বাস ভবনের সামনে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। মূলত এই সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে চলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া। এক পর্যায়ে পুলিশের টিয়ারশেল, রাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেডে পণ্ড হয়ে যায় বিএনপির মহাসমাবেশ। পরে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর হরতালের ঘোষণা দেন।

দফায় দফায় চলা সংঘর্ষে পুলিশের এক কনস্টেবল এবং যুবদলের এক নেতা মারা গেছেন। আহত হয়েছেন পুলিশের অন্তত ৪০ সদস্য। এছাড়া বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হওয়ার দাবি করেছে দলটি।

 

 

এস

সম্পর্কিত বিষয়:

×