ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

সাংবাদিকদের ইসি আলমগীর

যেভাবেই হোক ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:১৫, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩

যেভাবেই হোক ২৯ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচন

 সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছর জানুয়ারির ২৯ মধ্যে যেভাবেই হোক না কেন নির্বাচন হতে হবে

 সংবিধান অনুযায়ী আগামী বছর জানুয়ারির ২৯ মধ্যে যেভাবেই হোক না কেন নির্বাচন হতে হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। মঙ্গলবার নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান। এদিকে অভিজ্ঞতা না থাকলে কোনো বিদেশী পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অনুমতি পাবে না। এমন শর্ত রেখে বিদেশী পর্যবেক্ষক নীতিমালা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। মঙ্গলবার এই নীতিমালা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। 
এক প্রশ্নের জবাবে মো. আলমগীর বলেন, জানুয়ারির ২৯ তারিখের মধ্যে নির্বাচন না করলে একটি সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হবে। সেই শূন্যতা তৈরি হলে দেশে একটা অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। সেটি তো নির্বাচন কমিশন হতে দিতে পারে না। তাই নির্বাচন কমিশনের ওপর যে দায়িত্ব জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার সে দায়িত্ব পালন করা হবে। আমরা কিন্তু সরকারি বা কোনো প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী নই। আমরা কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী শপথ নিয়েছি। সেই শপথ তো আমাদের পূরণ করতে হবে।  
 মো. আলমগীর বলেন, নির্বাচনের জন্য আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়। যেমন ভোটার তালিকা চূড়ান্ত করতে হবে, ভোটকেন্দ্র চূড়ান্ত করতে হবে। যারা নির্বাচনে দায়িত্ব পালন করবেন তাদের প্রশিক্ষণ দিতে হবে। ব্যালট পেপার কেনার জন্য কাগজ কিনতে হবে। এছাড়া নির্বাচন করার জন্য ব্যালট বাক্স, কালি, সুই, সুতাসহ বিভিন্ন ধরনের জিনিস লাগবে, সেগুলো কিনতে হবে। মো. আলমগীর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংকট আছে। তবে নির্বাচন চায় না এমনটা তো কোনো দল বলছে না। আমাদের নিবন্ধিত যে রাজনৈতিক দলগুলো আছে তার মধ্যে নির্বাচন চায় না কোনো দলই বলেনি। তাহলে আমরা কেন নির্বাচনের প্রস্তুতি নেব না।  তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে হয়ত অনেকে অনেক কথা বলছেন। পরিবেশ যাতে সুন্দর করা যায় তার জন্য আমরা চেষ্টা করব। পরিবেশের সবটা সুন্দর করার দায়িত্ব তো আমাদের না। পরিবেশ সুন্দর করা আমাদের যেটুকু দায়িত্ব সেটুকু আমরা করে যাচ্ছি।
বিদেশী পর্যবেক্ষক নীতিমালা ॥  ইসির আগের নীতিমালায় কিছুটা সংশোধন করে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি বা উপকরণ শুল্কমুক্তভাবে বিদেশ থেকে আনার সুযোগ সৃষ্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন পরিপন্থি কাজ করলে বহিষ্কার করা হবে সংসদীয় আসন থেকে। একই সঙ্গে বাতিলও হতে পারে পর্যবেক্ষণের অনুমতি। এছাড়াও নীতিমালায় বিদেশী পর্যবেক্ষক বা গণমাধ্যমকর্মীদের যোগ্যতা, করণীয়, ভিসা প্রক্রিয়া সম্পর্কে সুনির্দিষ্টভাবে বলা হয়েছে এই নীতিমালায়।
বিদেশী পর্যবেক্ষক সংস্থার নির্বাচনী কাজ, সুশাসন, গণতন্ত্র, শান্তি প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার সম্পর্কিত কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। তাদের সংশ্লিষ্ট দেশের যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে নিবন্ধন নিতে হবে এবং তার প্রমাণপত্র দাখিল করতে হবে। বাংলাদেশের নির্বাচনী আইন মেনে চলতে হবে। নির্বাচনী অপরাধ কিংবা জাল-জালিয়াতি বা অসততাজনিত কোনো অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত ব্যক্তি পর্যবেক্ষক হওয়ার অযোগ্য হবেন।
নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের যেসব তথ্য দাখিল করতে হবে তার মধ্যে রয়েছে- অভিজ্ঞতার সনদসহ সিভি, মেয়াদ আছে এমন পাসপোর্টের কপি, ইসি নির্ধারিত ঘোষণাপত্র সইসহ জমা,  কভার লেটারসহ আবেদনপত্র, যেখানে নামের তালিকা থাকতে হবে। দোভাষী নিলে তার জন্য সব প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে হবে।
নির্বাচন কমিশন বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য আবেদন করতে হবে। এক্ষেত্রে আবেদন করতে হবে সংশ্লিষ্ট দূতাবাসের মাধ্যমে। আবেদনপত্র বাছাইয়ের পর ইসি তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠাবে অনাপত্তি পত্রের জন্যব, যার অনুলিপি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হবে। স্বরাষ্ট্রও মন্ত্রণালয় তাদের মতামত বা অনাপত্তির বিষয় সাত দিনের মধ্যে সরাসরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইসিতে পাঠাবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে অনাপত্তি মিললে নির্বাচন কমিশন বিদেশি পর্যবেক্ষক হিসেবে ভোট পর্যবেক্ষণের জন্য পর্যবেক্ষক কার্ড দেবে। পর্যবেক্ষণ হতে হবে পক্ষপাতহীন, ফলপ্রসূ ও সর্বোচ্চ মানসম্পন্ন। পর্যবেক্ষকদের ইসির দেওয়া সব নিয়ম মেনে চলতে হবে।

সীমিত পর্যায়ে মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারবেন সাংবাদিকরা ॥ নির্বাচনী কাজে সীমিত পর্যায়ে সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারে অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে মোটরসাইকেল রেজিস্ট্রেশন, ড্রাইভিং লাইসেন্সসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হবে। ইসির জনসংযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মো. আশাদুল হক জানিয়েছেন, নীতিমালার ৬ নম্বর নির্দেশনায় সংশোধন আনা হয়েছে। আগে যেখানে বলা হয়েছিল, সাংবাদিকরা ভোটের কাজে মোটরসাইকেল ব্যবহার করতে পারবেন। সংশোধনের পর এখন বলা হলো, সাংবাদিকদের যাতায়াতের জন্য যৌক্তিক সংখ্যক গাড়ির স্টিকার দেওয়া হবে।

প্রয়োজনীয়তা ও বাস্তবতার আলোকে স্থানীয় প্রশাসন (রিটার্নিং অফিসার, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ সুপার, সহকারী রিটার্নিং অফিসার) প্রকৃত সাংবাদিকদের ভোটকেন্দ্রে গমনাগমনকরত সংবাদ সংগ্রহের লক্ষ্যে সীমিত পর্যায়ে মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতি দিতে পারবেন। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সাংবাদিককে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের নিয়োগপত্র, প্রেস আইডির কপি, এনআইডির কপি এবং যে মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হবে সেই মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশনের কাগজপত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং প্রয়োজনীয় অন্যান্য কাগজপত্র রিটার্নিং বা সহকারী রিটার্নিং অফিসারের নিকট জমা দিতে হবে।

×