নয়া পল্টনে নিহত হওয়া মকবুল হোসেন
‘আমগোরে কে দেখবো? আমগোর তো কেউ রইলো না। আমারও বাপ নাই, আমার মাইয়ারও বাপ নাই।’ এভাবেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গের সামনে আহাজারি করছিলেন নয়া পল্টনে নিহত হওয়া মকবুল হোসেনের স্ত্রী হালিমা খাতুন।
স্বামীর লাশ বুঝে পেতে বুধবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত হাসপাতালেই অপেক্ষা করতে দেখা যায় তাকে। সবশেষ সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে পুলিশের পাহারায় মরদেহ নিয়ে হাসপাতাল ছাড়েন তারা।
নিহত মকবুলের মোবাইল ফোনটি ফিরে পেতে পুলিশের কাছে কান্নাকটি করতে দেখা যায় তাকে। তিনি বলেন, ‘মোবাইলটা আমার স্বামীর শেষ স্মৃতি। আমার মেয়ের মুখের দিকে তাকায়া মোবাইলটা দিয়ে দেন।’ দু একদিন পর সেটি ফেরত দেয়া হবে বলে এ সময় পুলিশ তাদেরকে আশ্বস্ত করেন।
নিহতের বড় ভাই নুর হোসেন বলেন, আমরা মামলা করবো না। ভাই মরছে, মামলা নিয়া দৌড়ায়া পরে ভাই সঙ্গে আমরা মরতে চাই না। কার বিরুদ্ধে করবো মামলা। যদি ব্যক্তিগত বা দু চার দশ জনের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটতো, তাহলে মামলা করতাম। ছিটা গুলিতে ঝাঝড়া করে ফেলছে পিঠটা। কয়েকশ গুলি পিঠে। মুখ দিয়া কান দিয়া রক্ত ঝড়ছে। আমরা কোনো বিচারও চাই না।
তিনি বলেন, ‘ওর পরিবারটার চলার মতো কিছুই নাই। ওর স্ত্রী কোনো কাজ জানে না। কোনো কাজ করতে দেয়নি। ও বলতো, লবণ আইনা দিলে শুধু লবণ দিয়াই ভাত খাবি। কোনো কাজ করার দরকার নাই। পরিবারটা এখন নিঃস্ব।’
স্বজনরা জানান, বাড়িতেই ৫-৬ জন লোক দিয়ে কাপড়ের নকশীর কাজ করাতেন মকবুল। বিভিন্ন জনের কাছে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা ঋণ রয়েছেন। প্রতি মাসে বাসা ভাড়া ৪ হাজার টাকা। এসব কীভাবে ব্যবস্থা করবে স্ত্রী হালিমা খাতুন ও ৭ বছরের মেয়ে মিথিলা! এসব নিয়েই চিন্তিত তারা।
এসআর