ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১

বাড়তে পারে বয়সসীমা 

ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব বাছাই, গুরুত্ব পাচ্ছে পজিটিভ কাজ

তাসমিম সুলতানা

প্রকাশিত: ১২:৫৬, ৭ ডিসেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৩:০২, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

ছাত্রলীগের শীর্ষ নেতৃত্ব বাছাই, গুরুত্ব পাচ্ছে পজিটিভ কাজ

বাংলাদেশ ছাত্রলীগ

উৎসবমুখর পরিবেশে ইতিমধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন।

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন হয়। সেখানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রথম অধিবেশন শেষ হয় বেলা দুইটার দিকে। এরপর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হয়। অধিবেশন শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন। এর আগে ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হবে।

গতবারের মতো এবারও নতুন নেতৃত্ব বাছাই করবেন ছাত্রলীগের অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে নিজেদের নাম পৌঁছাতে আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে ব্যস্ত সময় পার করছেন ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীরা।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দক্ষ সংগঠক, সংকটে দলের পাশে থাকা, বিতর্কমুক্ত, ইতিবাচক কাজ করেছে এরকম পদপ্রত্যাশীদের বিবেচনায় রাখছেন আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। এদিকে এসব শর্ত বিবেচনায় প্রায় দুই ডজন পদপ্রত্যাশী নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে আছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুনজরে আসার জন্য অক্সিজেন সরবরাহ, খাদ্য সহায়তা প্রদান, শিক্ষা উপকরণ বিতরন, রোবটিক্স ক্যাম্প, বাইসাইকেল বিতরণসহ শিক্ষার্থীবান্ধব ও ব্যতিক্রমী কৌশলে নানা ধরনের কর্মসূচি পালন করছেন ছাত্রলীগ নেতারা।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের বেশ কয়েকজন পদপ্রত্যাশীর সঙ্গে কথা হয় জনকন্ঠের। তারা জানান, বিগত কয়েক বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় ছাত্রলীগের রাজনীতিতে বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। আমরা আশা করি যারা ইতিবাচক কাজ করেছে, সংকটকালীন সময়ে মানুষের পাশে দাড়িয়েছে ও শিক্ষার্থীবান্ধব নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছে তাদের মধ্য থেকেই আসবে শীর্ষ নেতৃত্ব। 

আলোচনায় আছেন যারা : বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী অঞ্চলভিত্তিক যেসব পদপ্রত্যাশী এগিয়ে আছেন তারা হলেন-

চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকেঃ করোনাকালীন সময়ে মানুষের কাছে বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দিয়ে নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, সাবেক সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম শামীম, সংকটকালীন সময়ে প্রতিদিন হাজারো মানুষের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করে আলোচিত ছাত্রলীগের সাবেক উপ-সমাজ সেবা সম্পাদক ও ডাকসুর সদস্য তানভীর হাসান সৈকত। এছাড়া দৌড়ে আছেন সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক তাহসান আহমেদ রাসেল, সহ সভাপতি ইফতেখার আহমেদ সজিব,  উপসাহিত্য সম্পাদক জয়জিৎ দত্ত।

ময়মনসিংহ অঞ্চল থেকে : কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা সম্পাদক মেহেদি হাসান তাপস, তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক রাশিদ শাহরিয়ার উদয়, স্কুল ছাত্র বিষয়ক উপসম্পাদক শাকের আহমেদ আল আমিন, সহসম্পাদক রাকিব সিরাজী।

ফরিদপুর ও মাদারীপুর অঞ্চল থেকে : ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি রাকিব হোসাইন, আইন সম্পাদক ফুয়াদ হোসেন শাহাদাত, উপ-আইন বিষয়ক সম্পাদক  সম্পাদক শাহেদ খান ও সুজন শেখ।

বরিশাল অঞ্চল থেকে : শিক্ষার্থীদের মাঝে অসমাপ্ত আত্মজীবনী বিতরণ করে আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি মাজহারুল ইসলাম মিরাজ, করোনাকালীন সময়ে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা পৌছে দিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক উপবিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক সবুর খান কলিন্স, এছাড়া নেতৃত্বের দৌড়ে আছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সৈয়দ আরিফ হোসাইন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান আল ইমরান, সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ইনান, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহানুর রহমান, ত্রাণ ও দূর্যোগ সম্পাদক, ইমরান জমাদ্দার, কর্মসংস্থান বিষয়ক উপ-সম্পাদক খাদিমুল বাশার জয়।

খুলনা অঞ্চল থেকে : সংস্কৃতিমনা হিসেবে পরিচিত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক বরিকুল ইসলাম বাঁধন, সহ-সভাপতি ফরিদা পারভীন, মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন।

উত্তরবঙ্গ থেকে : ঢাবি ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর সাবেক এজিএস সাদ্দাম হোসেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক হায়দার মোহাম্মদ জিতু, গনশিক্ষা সম্পাদক আব্দুলাহ হীল বাড়ি, ক্রীড়া সম্পাদক আল আমিন সিদ্দিক সুজন, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক আবুল হাসনাত হিমেল, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পল্লব কুমার বর্মন।

এছাড়া নেতৃত্বের দৌড়ে আছেন সাবেক সহসভাপতি  তিলত্তমা শিকদার, ধর্ম সম্পাদক তুহিন রেজা, পরিবেশ সম্পাদক শামীম পারভেজ, সাহিত্য সম্পাদক আহমেদ মনির তাঈফ, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক উপ সম্পাদক রনক জাহান রাইন

শিথিল হতে পারে বয়সসীমাঃ

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনে প্রার্থীদের বয়স বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা মহামারির জন্য সাংগঠনিক কার্যক্রমে স্থবিরতা, সময়মতো সম্মেলন না হওয়া এবং সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দক্ষ নেতৃত্ব বাছাই করতে এ বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে।

ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক কমিটির মেয়াদ ২ বছরের। কিন্তু এবার ৪ বছর ৮মাস পর হচ্ছে ছাত্রলীগের সম্মেলন। সে হিসেবে সম্মেলন আয়োজনে অতিরিক্ত যে সময়টা পার হয়েছে, তা ছাড় দেয়ার সম্ভাবনা আছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছে।

গঠনতন্ত্রের সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ী, ছাত্রলীগে প্রার্থিতার সর্বোচ্চ বয়স ২৯ বছর। তবে আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, সব দিক বিবেচনা করে বয়সের ব্যাপারে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।

 

টিএস

×