ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০১ মে ২০২৫, ১৭ বৈশাখ ১৪৩২

কুতুবদিয়া রক্ষায় চাই টেকসই বেড়িবাঁধ

আবতাহী চৌধুরী আইভী

প্রকাশিত: ১৯:৩৬, ৩০ এপ্রিল ২০২৫

কুতুবদিয়া রক্ষায় চাই টেকসই বেড়িবাঁধ

কুতুবদিয়া-প্রায় ৬০০ বছর পূর্বে কক্সবাজার থেকে ৮৬ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরের বুকচিরে জেগে ওঠা একটি দ্বীপ। বাংলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এই দ্বীপ নানা প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। রয়েছে পর্যটনের ব্যাপক সম্ভাবনা। এই অপার সম্ভাবনার মাঝেও কুতুবদিয়া বরাবরই অবহেলিত। সারা দেশে এতো উন্নয়ন কিন্তু এ উন্নয়ন আজও স্পর্শ করেনি কুতুবদিয়াকে। চিকিৎসা সেবা, শিক্ষাব্যবস্থা থেকে শুরু করে যাতায়াত ব্যবস্থা এবং অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত দ্বীপটি।
সূচনালগ্ন থেকেই  ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস গ্রাস করেছে এ উপকূলকে। যেমন– ১৫৫৯, ১৭৯৫ এর ঘূর্ণিঝড়। কুতুবদিয়া বিখ্যাত বাতিঘরের জন্য। ১৮২২ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত সেই ঐতিহাসিক বাতিঘর বিলীন হয় ১৯৬০-এর জলোচ্ছ্বাসে, (পরবর্তীতে নতুন বাতিঘর তৈরি হয়)। ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব ছিল সবচেয়ে মর্মান্তিক। প্রাণ হারায় প্রায় ১০ হাজার মানুষ। লণ্ডভণ্ড হয়েছিল পুরো কুতুবদিয়া।
কুতুবদিয়ার দুই লাখ মানুষ আজও রাতযাপন করছে অনিশ্চয়তায়। এ সংকটের মূলে রয়েছেÑ স্থায়ী বেড়িবাঁধের অভাব। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাড়ছে সমুদ্রের পানির উচ্চতা। বাড়ছে দুর্যোগ। এ দুর্যোগের হিংস্রতা কয়েকগুণ বেড়ে যাচ্ছে টেকসই বেড়িবাঁধ না থাকায়। কুতুবদিয়ার চারপাশে ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে বেশিরভাগ অংশেই স্থায়ী বেড়িবাঁধ নেই। ফলে সামান্য দুর্যোগেই প্লাবিত হয় এই উপকূল। বর্ষাকালে এ দুর্যোগ বেড়ে যায় হাজার গুণে। এ সময় সামান্য বৃষ্টিতে সাগরের পানি স্বাভাবিক উচ্চতার চেয়ে একটু বাড়লেই যেসব বালির বাঁধ দেওয়া হয়, তা ভেঙে পানি ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। দ্বীপের বেশিরভাগ মানুষ পেশায় কৃষক, লবণ চাষী এবং জেলে। এ পরিস্থিতিতে ফসলি জমি লবণাক্ত পানিতে নষ্ট হয়, পুকুরের মাছ মারা যায়, গাছপালা উজাড় হয়, লবণ চাষের জমি নষ্ট হয়। ফলসরূপ খাদ্যসংকটে ভোগে পুরো দ্বীপ। এছাড়া মানুষ  এবং পশুপাখি হারায় তাদের সহাবস্থান। বিশুদ্ধ পানির সংকটে নানা অসুস্থতায় মৃত্যু হয় অনেকের। ২১৫.৮ কিলোমিটার আয়তনের এ দ্বীপ ভাঙনের ফলে ক্রমে দুই-তৃতীয়াংশ আয়তন হারিয়েছে। এখনো সাগরের ঢেউয়ের প্রভাবে ভেঙ্গে সমুদ্রে পরিণত হচ্ছে সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুতুবদিয়া।
কুতুবদিয়ার অস্তিত্ব আজ হুমকির মুখে। গত কয়েক বছরে বেশকিছু বাজেট বেড়িবাঁধের জন্য এলেও স্বার্থান্বেষী মহল সে টাকা লুটে নিয়ে ধরিয়ে দেয় কিছু বালির বস্তা। এ দ্বীপের দুই লাখ মানুষ চায় তাদের জীবনের নিরাপত্তা। এটা তাদের অস্তিত্বের লড়াই। তারা চাই যথাযথ উপায়ে কুতুবদিয়ার চারপাশে যেন টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ হয়। কুতুবদিয়ার মানুষের প্রাণের দাবি– স্থায়ী ও টেকসই বেড়িবাঁধ চাই।

শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

প্যানেল

×

শীর্ষ সংবাদ:

যেই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে: আমীর খসরু
জামায়াত নেতারা রাজাকার হলে পাকিস্তানে গাড়ি বাড়ি থাকতো : শামীম সাঈদী
এনসিপির সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত সম্পৃক্ততা নেই- উমামা ফাতেমা
‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটকদের অধিকাংশই ভারতীয় মুসলমান
ইয়েমেনে হামলা চালিয়েই সাগরে ডুবে গেল মার্কিন সর্বাধুনিক যুদ্ধবিমান
জামিন পেলেননা তারেক রহমানের খালাতো ভাই তুহিন
লন্ডনে আজ আর্সেনাল পিএসজি মহারণ
১৭ অভিনয়শিল্পীর নামে মামলা, তালিকায় আছেন নুসরাত ফারিয়া-অপু বিশ্বাস-ভাবনাসহ অনেকেই
১০০ টাকা মূল্যমানের প্রাইজবন্ডের ১১৯তম ড্র অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল
স্বর্ণের দাম, রেকর্ড উচ্চতা থেকে পতনের পথে
কুমিল্লায় পুলিশ-সেনাবাহিনীর চাকরির নামে প্রতারণা: দালালসহ ১৩ জন গ্রেফতার
১২ বছর বয়সী ছেলে শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের অভিযোগে ৩ মাদ্রাসা শিক্ষক গ্রেফতার