ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২

ঢাকার দিনরাত

মারুফ রায়হান

প্রকাশিত: ২০:০৬, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকার দিনরাত

এপ্রিল শেষে আসছে নির্মম মাস মে, অসহনীয় গরম পড়ার মাস। গরমে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি কষ্ট পায়, তবে সবচেয়ে বেশি যন্ত্রণা ভোগ করেন শ্রমজীবী মানুষ। তাদের জন্য মে মাসটি নিমর্মতমই হয়ে ওঠে। তাই শ্রমজীবী মানুষের সেবা যারা নেন, তারা এ মাসে বাড়তি বিনিময়মূল্য দিতেই পারেন। তাতে ওদের অনেকটাই উপকার হবে।    

ব্যাটারি-রিক্সার নৈরাজ্যে
আশাপ্রদ সংবাদ

রিক্সার শহর ঢাকার মানুষের এই যানের কারণেই জান লবেজান হয়ে উঠছে। বিশেষ করে ব্যাটারিচালিত রিক্সার কারণে রাজধানীর ট্রাফিকব্যবস্থা বিশৃঙ্খল হয়ে পড়েছে। এমনিতেই ঢাকায় রিক্সার সংখ্যা অনেক বেশি। তার ওপর অবৈজ্ঞানিকভাবে তৈরি হওয়া এ রিক্সা সড়কে দুর্ঘটনারও বড় কারণ। সম্প্রতি গুলশান-বনানীর সড়কে এ রিকশা বন্ধ করতে গেলে চালকেরা রীতিমতো নৈরাজ্য সৃষ্টি করেন, এতে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। সড়কের শৃঙ্খলা, দুর্ঘটনার ঝুঁকি ও জীবিকা- এই তিনটি বিষয় মাথায় রেখে সরকারকে ব্যাটারিচালিত রিক্সার ব্যাপারে কঠোর ও বাস্তবসম্মত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিকল্প নেই। কেননা বহু মানুষের উপার্জনের পথই হচ্ছে রিক্সা।
এরই মধ্যে বিজ্ঞানসম্মত নিরাপদ রিক্সার মডেল উদ্ভাবনের সংবাদ গণমাধ্যমে এসেছে। প্রথম আলোর সৈয়দ রিফাত মোসলেমের প্রতিবেদন থেকে তুলে দিচ্ছি পাঠকদের জানানোর অভিপ্রায় থেকে। তিনি লিখেছেন : এই রিক্সার রিক্সা হবে সাধারণ রিক্সার চেয়ে অনেক নিরাপদ। অবশ্য এটি তৈরিতে বর্তমান ব্যাটারিচালিত রিক্সার সমান খরচ পড়বে। এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) জানিয়েছে, তারা নতুন নক্সা বা মডেলের রিক্সা ঢাকার রাস্তায় চলাচলের অনুমতি দেবে। পুরানো রিক্সা পর্যায়ক্রমে সড়ক থেকে তুলে নেওয়া হবে। নতুন রিক্সার নকশা করেছে বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক মো. এহসানের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের গবেষক দল। অধ্যাপক এহসান পত্রিকাটিকে বলেন, ২০২২ সাল থেকে তিনি বাড়তি নিরাপত্তাযুক্ত রিক্সার নক্সা করা নিয়ে কাজ করছেন। অতীতে তিনি সরকারের সঙ্গে এ বিষয়ে যোগাযোগ করেছেন। তবে কাজ হয়নি।
ঢাকায় এখন দুই ধরনের রিক্সা চলে- পায়েচালিত বা প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত। সাম্প্রতিককালে ব্যাটারিচালিত রিক্সার সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এসব রিক্সা নিবন্ধনহীন। চালকের প্রশিক্ষণ নেই। তবে গতি সাধারণ রিক্সার চেয়ে বেশি। নিরাপত্তা দুর্বল। ঝুঁকিপূর্ণ এই বাহন ঠেকাতে বিভিন্ন সময়ে উদ্যোগ নেওয়া হলেও তাতে কাজের কাজ কিছুই হয়নি; বরং ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় ব্যাটারিচালিত রিক্সা একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বেল পাকিলে কাকের কি- প্রবচনটিকে নিয়ে নান্দনিক ক্যালিগ্রাফি
বুয়েটের দলটির নক্সা করা রিক্সা মূলত রাস্তায় চলাচলকারী ইজিবাইকের মতো। দলের সদস্যরা জানিয়েছেন, রিক্সায় ১৬টি বৈশিষ্ট্য যোগ করেছেন। এ ক্ষেত্রে তারা দেশে প্রচলিত ১২ ধরনের ব্যাটারিচালিত রিক্সার নিরাপত্তা ত্রুটিগুলো খুঁজে বের করেছেন।
বুয়েটের দলটির সঙ্গে কথা বলে নতুন নক্সার রিক্সার বৈশিষ্ট্যগুলো জানা যায়। তাঁরা জানান, রিক্সার আকার হবে এখনকার রিক্সার মতোই। রিক্সাটি ৩২৫ থেকে ৪২৫ কেজি পর্যন্ত ওজন সহজেই বহন করতে পারবে। ফলে দুজন যাত্রী নিয়ে চালক সহজেই রিক্সাটি চালাতে পারবেন। এর তিনটি চাকায় ‘হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক’ ও বিকল্প ‘পার্কিং ব্রেক’ সংযোজন করা হয়েছে। ফলে রিক্সা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। সাধারণ রিক্সায় ‘লুকিং গ্লাস’ থাকে না। ফলে রিক্সাচালককে পেছনে তাকিয়ে দেখতে হয় কোনো যান আসছে কি-না। আবার সাধারণ রিক্সায় ‘ইন্ডিকেটর’ নেই। ফলে রিক্সা ডানে অথবা বাঁয়ে মোড় নিলে পেছনের যানবাহনের চালকেরা তা বুঝতে পারেন না, যা দুর্ঘটনার ঝুঁকি তৈরি করে। নতুন রিক্সায় ‘লুকিং গ্লাস’ ও ‘ইন্ডিকেটর’ থাকবে।

ছবি ও প্রবচনের মেলবন্ধন

আরহাম উল হক চৌধুরী একজন ব্যতিক্রমী শিল্পী। প্রতিবারই তিনি চমক দেন। এবার প্রাচীন দলিলের ওপর বাংলা ক্যালিগ্রাফি করেছেন তিনি। দলিলের পাতা ক্যানভাস হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে, কখনো দলিলের রেখা, লেখা ও ছাপ হয়ে উঠেছে টেক্সচার। বাংলার বাগধারা ও প্রবচন এবং প্রাসঙ্গিক রঙিন ছবির মেলবন্ধন হয়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন। এটি শিল্পীর ২০তম একক প্রদর্শনী ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে আয়োজিত প্রদর্শনী, যার শিরোনাম ‘দলিলে দৃশ্যপট’। শিল্পী তাঁর শিল্পভাবনা প্রকাশ করেছেন এভাবে : ‘ছোট্ট একটি বাক্য দিয়ে অনেক কথা বুঝিয়ে দেওয়া যায় বাগধারা কিংবা প্রবাদ প্রবচনের মধ্য দিয়ে।
আমার পথচলায় শিল্প-সংস্কৃতি জ্ঞানের বিভিন্ন মাধ্যমের সংমিশ্রণে হেঁটে বাংলা ক্যালিগ্রাফি শুরু করি। সেই ধারায় এগোতে গিয়ে এর মধ্যে বিভিন্ন মাত্রার যোগ হতে থাকে। এ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আমি সবসময় প্রাচীন বাংলা বচন, প্রবচন ও ধাঁধা খোঁজ করি। যেগুলোর অন্তর্নিহিত অর্থ বাক্যের সীমা ছাড়িয়ে বহু ব্যাখ্যার প্রতিধ্বনি তোলে। এবার আমি তাতে আরও এক নতুন মাত্রা যোগ করে এ প্রাচীন বচনগুলোকে ভিন্ন আঙ্গিকে দৃশ্যমান করার চেষ্টা করেছি। বাংলা ক্যালিগ্রাফি করার সময় আমি সাধ্যমতো বচনের অন্তর্নিহিত শক্তি ও অর্থকে যথাসাধ্য নীতিমালার মধ্যে রাখার চেষ্টা করি। বচনে গবেষণা করা ছাড়াও আমি বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরি নানা মসৃণতা, নানা রঙের হাতে  তৈরি কাগজ ব্যবহার করেছি বচনের শক্তিকে প্রকাশ করার জন্য। সেই পথচলাকে আরও অর্থবহ করে তুলতে আমি যোগ করেছি পুরানো-প্রাচীন দলিল, ব্যাপারটি আমার কাছে বিশেষ। পুরানো দলিলে প্রাচীন বচন আমার কাছে একটি সময়ের প্রমাণপত্র আর সেই ধারায় এই ‘দলিলে দৃশ্যপট’।’

মেট্রোরেল বন্ধে ভোগান্তি

বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে শনিবার সন্ধ্যার আগে মেট্রোরেলের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। চালু হয় দেড় ঘণ্টা পরে। এতে ভোগান্তিতে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী। বাধাহীন গতিময় গণপরিবহন নির্ধারিত সময় থেকে পাঁচ মিনিট দেরিতে স্টেশনে এলেই যেখানে ভিড় বেড়ে যায় ও যাত্রীদের ভেতরে অস্বস্তি তৈরি হয়, সেখানে দেড় ঘণ্টা বন্ধ থাকা বিরাট ব্যাপার। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের সূত্র বলছে, বিজয় সরণি এলাকায় মেট্রোরেল বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন থেকে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে যায়।

বৈশাখে সংবাদপত্রের পাতায় জায়গা করে নিচ্ছে নয়নলোভন কৃষ্ণচূড়া
মেট্রোরেলে দুভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করা হয়। ডিএমটিসিএল সূত্র আরও জানায়, স্টেশনের বাতি, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য কাজ চালানো হয় অক্সিলারি বা সহযোগী বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার মাধ্যমে। আর বিশেষ ব্যবস্থার মাধ্যমে মেট্রো ট্রেন চালানোর বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। বিজয় সরণিতে মূল লাইনেই সমস্যা হয়েছে, যা দিয়ে ট্রেন চালানো হয়। মেট্রোরেল পরিচালনায় যুক্ত কর্মকর্তারা বলছেন, কোনো একটি সাবস্টেশন থেকে সাধারণ কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে অন্য সাবস্টেশন থেকে তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে সরবরাহ করা হয়। এতে মেট্রোরেলের চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটে না। কিন্তু কোনো অস্বাভাবিক কারণে, অর্থাৎ কারিগরি ত্রুটি কিংবা সার্কিট পুড়ে যাওয়ার মতো ঘটনা ঘটলে অন্য সাবস্টেশন থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় না। কারণ, এতে বড় দুর্ঘটনা বা অন্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এ জন্য অস্বাভাবিক কোনো কারণে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেলে তা স্বচক্ষে দেখে পুনরায় চালু করা হয়।

রেললাইনে ঝুঁকিপূর্ণ সেলফি

রেললাইনের ওপর সেলফি তুলতে গিয়ে আগেও দুর্ঘটনা ঘটেছে। তবু মানুষ সচেতন হতে পারছে না। কেউ কেউ জীবনের ঝুঁকি নিয়েই সেলফি তুলছে। কেউ আবার মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছে। উত্তরায় রেললাইনে সেলফি তোলার সময় ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন তরুণ ও তরুণী। মাসুম ও ইতি থাকতেন দক্ষিণখান এলাকায়। মাসুমের গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ আর ইতির নেত্রকোনায়। দুজনই পোশাক কারখানায় চাকরি করার জন্য সম্প্রতি গ্রাম থেকে ঢাকায় আসেন। আগে থেকে দুজন পূর্বপরিচিত। শনিবার সন্ধ্যায় তাঁরা উত্তরার আজমপুর এলাকায় ঘুরতে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় ঢাকার কমলাপুর থেকে ছেড়ে যাওয়া যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি যখন উত্তরার আজমপুর এলাকা অতিক্রম করে যাচ্ছিল, তখন মাসুম ও ইতি আক্তার রেললাইনের ওপর দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছিলেন। কিন্তু ট্রেন আসার আগে তাঁরা সরে যেতে পারেননি। এরই মধ্যে সেই ট্রেনের নিচেই দুজনে কাটা পড়েন। ঘটনাস্থলে মারা যান ইতি আক্তার। আর মাসুমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এই ঘটনা থেকে সেলফিপ্রিয়রা যদি শিক্ষা নেন, তবে উপকৃত হবেন। চলন্ত ট্রেন বা ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে সেলফি তোলার বেলায় নিরাপত্তার দিকটিই সবকিছুর আগে বিবেচনা করতে হবে।
ক্স বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে দেওয়া বক্তব্যে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ড. ইউনূসকে শ্রদ্ধা জানিয়ে বলতে চাই, কয়েকদিন আগে যে লোককে নিয়োগ করা হয়েছে, সুফিউর না কী নাম, এ তো আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট। আরও আওয়ামী লীগের প্রোডাক্ট আপনার ডানে-বায়ে আছে। দয়া করে এদের কাছ থেকে সাবধানে থাইকেন। এরা পাঁচজন (কয়েকজন সচিব) এবং আপনার উপদেষ্টা পরিষদের কিছু লোক আপনাকে সঠিক রাস্তায় চলতে দেবে না। আপনার সারা জীবনের অর্জন, আপনি নোবেল লরিয়েট...এরা শেষ করে দেবে।’
ক্স এনসিপি ও তার মিত্রদের চাপের মুখে অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ বা নির্বাচন থেকে দূরে রাখার পদক্ষেপ নিলে তা আইনগত ও রাজনৈতিকভাবে দেশের জন্য সমস্যা হতে পারে। আন্তর্জাতিকভাবেও এটি সমর্থন পাবে না, বিশেষ করে জাতিসংঘ থেকে। অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহান, প্রথম আলোর বিশেষ নিবন্ধে এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।
ক্স শনিবার ঢাকায় এক সভায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন: দেশে ‘মব ভায়োলেন্স’ বা দলবদ্ধ সহিংসতা বিভিন্ন মাত্রায় জারি আছে। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও দমন-পীড়নের ঘটনা ঘটছে। কৃষক-শ্রমিকের সঙ্গেও অন্তর্বর্তী সরকারের আচরণ বৈরী। জানা-অজানা বিভিন্ন ধরনের গোষ্ঠীর প্রভাব এখনো আদালত অঙ্গনে দেখা যাচ্ছে।
ক্স লেখক ও অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেছেন, ফ্যাসিস্ট সরকার পরিবর্তন হলেও ফ্যাসিস্ট ‘রেজিমের’ পরিবর্তন হয়নি। তিনি বলেন, গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে যে গুম, খুন এবং বিশেষ করে আন্দোলনের সময় যে হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেটির বিচার এখনো শুরু হয়নি। এটা বর্তমান সরকারের অযোগ্যতা ও অদূরদর্শিতা, অক্ষমতাও বলা যায়। শনিবার রাজধানীর গ্রিন রোডে ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের (ইউপিএল) কার্যালয়ে একটি বইয়ের প্রকাশনা উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সলিমুল্লাহ খান এসব কথা বলেন।

মহাব্যস্ত ঢাকাবাসীর কি আছে প্রকৃতির সৌন্দর্যের দিকে তাকানোর অবসর? আমরা না ফিরে চাইলেও প্রকৃতি আমাদের অনেক সময় বাধ্যও করে তার রূপ দর্শনে। আমরা অজান্তেই সেই রূপের জালে ধরা দেই। চলতি বৈশাখে সংবাদপত্রের প্রথম বা শেষ পাতায় জায়গা করে নিচ্ছে কৃষ্ণচূড়া। ‘কদর্য-চূড়ায় কৃষ্ণচূড়া’ কবিতা থেকে কয়েকটা লাইন তুলে দিলে কেমন হয়?
কদর্য পঙ্কিল কৃষ্ণ-নগরীর চূড়ায় চূড়ায়
আগুন জ্বালিয়ে দিলো ওই কৃষ্ণচূড়া
ছাড়িয়ে উদ্ধত মাথা উঁচু টাওয়ারের
বহুতল ভবনের দর্প দম্ভ নিঃশব্দে গুঁড়িয়ে
ঘুমতাড়ানিয়া প্রবল প্রলয় ঘূর্ণিনাচ তার
অনৈতিক সাম্রাজ্যের ’পরে সুন্দরের প্রতিবাদ
ওপরে প্রাঙ্গণ তার প্রসারিত, নীলিমা অসীম;
ভূমিলগ্নদের বলে, শোনো- আকাশের কাছে
জেনে নাও কাকে বলে ঈর্ষাহীন উদারতা;
রঙের উচ্ছ্বাস তীব্র তীক্ষè কড়া আনকোরা-
এও এক ধরনের সানন্দ সঘন আমন্ত্রণ
বিবর্ণ জীবন যতো রঙে সাজানোর আমন্ত্রণ...

ছবিটি যুগান্তরের ফটোসাংবাদিক তুলেছেন কুড়িলে গিয়ে। ক্যাপশনে সুন্দর কিছু কথা লেখা হয়েছে: ‘কুড়িলে ট্রেনের কুঁঝিকঝিক ভেঁপু, তার ওপরে ফ্লাইওভারের জট-জটিলতা। সবকিছুকে অস্বীকার করে সড়কের ধার ঘেঁষে এক চিলতে সবুজে যেন লেগেছে আগুন। কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম আভায় এ এক ভিন্ন প্রকৃতি।’

২৭ এপ্রিল ২০২৫
[email protected]

প্যানেল

×