ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৪ বৈশাখ ১৪৩২

নেদারল্যান্ডস ভ্রমণের অনন্য অভিজ্ঞতা

ড. আলা উদ্দিন

প্রকাশিত: ২০:০৫, ২৭ এপ্রিল ২০২৫

নেদারল্যান্ডস ভ্রমণের অনন্য অভিজ্ঞতা

নিচু ভূমির দেশ নেদারল্যান্ডস, যেখানে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, অসাধারণ কৌশলী প্রযুক্তি এবং অতুলনীয় জীবনযাত্রার সংমিশ্রণ এক অভূতপূর্ব সভ্যতা নির্মাণ করেছে। সম্প্রতি (এপ্রিল ২০২৫) একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণের সুবাদে আমার এই দেশ ভ্রমণের সুযোগ হয়েছিল। ২০১৮ সালের পর এটাই ছিল দ্বিতীয় নেদারল্যান্ডস ভ্রমণ। প্রথমবার রাজধানী আমস্টারডাম ও পার্শ্ববর্তী ইউত্রেত ঘুরেছিলাম। এবার আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বন্ধুর  (Bram Mellink) সুবাদে নেদারল্যান্ডসের ১২টি প্রদেশের মধ্যে ৫টি প্রদেশ পরিদর্শন করার সৌভাগ্য হয়েছে।
নেদারল্যান্ডসের অন্যতম আকর্ষণীয় দিক হলো বাইসাইকেল সংস্কৃতি। বিশ্বে সর্বাধিক বাইসাইকেল ব্যবহারের জন্য এই দেশ বিখ্যাত। সকাল-বিকাল কিংবা সন্ধ্যায় শহরের রাস্তাগুলোতে সাইকেল চালকদের ভিড় চোখে পড়ার মতো। মাত্র কয়েক ঘণ্টার অবস্থানেই বোঝা যায়, এখানে বাইসাইকেল শুধু পরিবহন নয়, বরং জীবনযাত্রার অবিচ্ছেদ্য অংশ। আশ্চর্যজনকভাবে, এখানে প্রধানমন্ত্রীকেও বাইসাইকেলে চড়ে অফিসে যেতে দেখা গেছে নিকট অতীতেও। প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, আইনজীবী, শিক্ষার্থী-সমাজের সব স্তরের মানুষই দৈনন্দিন যাতায়াতের জন্য বাইসাইকেলকে বেছে নেন। শহরের পরিকল্পনাও এমনভাবে করা হয়েছে যাতে সাইকেল চালকরা সহজেই চলাচল করতে পারেন। আলাদা লেন, বিশেষ সিগন্যাল, পার্কিং সুবিধা- সবকিছুই সাইকেল চালকদের জন্য অনুকূল। গণপরিবহনেও বাইসাইকেলের অবাধ প্রবেশাধিকার লক্ষণীয়। ট্রেন বা মেট্রোতেও বাইসাইকেল নিয়ে যাতায়াত করা যায়। একটি বগিতেই তিনটি বাইসাইকেল দেখেছি একসঙ্গে, সেগুলো বিশেষভাবে রাখার ব্যবস্থাও রয়েছে। অন্য যাত্রীদের বিরক্ত বা অবাক হতে দেখা যায় না। এই ব্যবস্থা দূরবর্তী এলাকায় যাতায়াতকারী সাইকেল চালকদের জন্য খুবই সুবিধাজনক।
আমস্টারডাম শহরের সর্বত্র চোখে পড়ে অসংখ্য খাল এবং নৌকা। শহরের মধ্যে বিচ্ছিন্ন জলপথগুলো একে অন্যের সঙ্গে যুক্ত হয়ে একটি জটিল জলপথ নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করেছে। এই খালগুলোর ওপর দিয়ে নির্মিত ছোট-বড় সেতুগুলো শহরকে এক অনন্য সৌন্দর্য দিয়েছে। বহু বাসিন্দা জলপথে চলাচলকারী নৌকাকেই বাড়ি হিসেবে ব্যবহার করেন। এগুলো ‘হাউসবোট’ নামে পরিচিত। খালের পাড়ে ভাসমান এসব ঘরবাড়ি আমস্টারডামসহ বিভিন্ন শহরের অন্যতম আকর্ষণ। অনেকেই পর্যটকদের জন্য এই হাউসবোটগুলো ভাড়া দেন, যা বিদেশী পর্যটকদের জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। সন্ধ্যাবেলা এই খালগুলোর পাড় ধরে হাঁটতে হাঁটতে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়। অনেক রেস্তোরাঁ, কাফে এবং বার খালের পাড়ে অবস্থিত, যেখানে বসে খালের শান্ত পানিতে নৌকাগুলোর চলাচল দেখা যায়।
কান্ট্রিসাইডের দিকে ঘুরলে চোখে পড়ে উইন্ডমিলের সারি। ডাচ সংস্কৃতির এই ঐতিহাসিক প্রতীক এখন আধুনিক বায়ু শক্তি উৎপাদন কেন্দ্রে রূপান্তরিত হয়েছে। উইন্ডমিল দিয়ে শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদনই নয়, এটি পরিবেশের জন্যও অত্যন্ত সহায়ক। নেদারল্যান্ডস এমন একটি দেশ যেখানে পরিবেশ সচেতনতা সর্বত্র। বাইসাইকেল ও উইন্ডমিল ছাড়াও, সবুজ শক্তির অন্যান্য উৎসও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। অনেক জায়গায় দেখা যায় সোলার প্যানেল। রাজধানী আমস্টারডাম ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন-নিরপেক্ষ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে।
নেদারল্যান্ডসে ব্যক্তি স্বাধীনতা সম্পর্কে একটি উদার দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এদেশে এমন অনেক বিষয় আইনসিদ্ধ, যা বিশ্বের অন্যান্য দেশে নিষিদ্ধ। শহরের মধ্যে ঘুরলে মারিজুয়ানার গন্ধ নাকে আসা অস্বাভাবিক নয়। কেননা এখানে এর ব্যবহারে কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। নেদারল্যান্ডসে ‘কফি শপ’ শব্দটি ভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হয়। এগুলো আসলে কফি খাওয়ার জায়গা নয়, বরং মারিজুয়ানা বিক্রয় ও সেবনের স্থান। আসল কফির জন্য নিয়মিত ক্যাফেতে যেতে হয়, কফি শপে নয়। নেদারল্যান্ডসে ব্যক্তিগত পছন্দের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। বিবিধ লিঙ্গ, মত ও পছন্দের জনগোষ্ঠীর সহাবস্থানের জন্যও এই দেশ বিখ্যাত।
নেদারল্যান্ডস বিশ্বের অন্যতম ধনী দেশ। এখানে শিক্ষক, চিকিৎসক, ইঞ্জিনিয়ারসহ সকল পেশার মানুষের আয় অনেক বেশি। তবে, জীবনযাপনের ব্যয়ও অনেক বেশি। ঘরভাড়া, পাবলিক ট্রান্সপোর্ট এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম তুলনামূলকভাবে উচ্চ। আমস্টারডামের মতো শহরে একটি ছোট অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়া প্রায় ১,৫০০ ইউরো থেকে শুরু, যা বাংলাদেশের মতো দেশের তুলনায় অনেক বেশি। অবশ্য, বেতন কাঠামোও সেই অনুযায়ী উচ্চ। একজন নবীন শিক্ষকের মাসিক বেতন প্রায় ৩,০০০-৪,০০০ ইউরো। ডাচ সরকার নাগরিকদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য উচ্চ হারে করারোপ করা হয়। এই টাকায় দেশের পরিকাঠামো, গণপরিবহন এবং অন্যান্য জনসেবা উন্নত রাখা হয়।
আমার ভ্রমণের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক ছিল, নেদারল্যান্ডসের অসাধারণ পানি ব্যবস্থাপনা। দেশটির প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে অবস্থিত ছিল আট-নয় দশক আগেও। এই নিচু ভূমিকে বাসযোগ্য করার জন্য দশকের পর দশক ডাচরা অসাধারণ কৌশল অবলম্বন করেছে। ফ্লেভল্যান্ড (Flevoland)  প্রদেশের অবস্থিত প্রধানতম কেন্দ্র  ‘ওয়াটারলুপবোস’  (Waterloopbos) নামক পানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাটি দেখে মুগ্ধ হয়েছি- যা বর্তমানে পানি ব্যবস্থাপনা পার্ক হিসেবে সমধিক পরিচিত। এখানে পানির গতি নিয়ন্ত্রণ ও সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অনেক মডেল দেখা যায়। এগুলোর পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে শুধু পানি প্রতিরোধই করা হয়নি, বরং সমুদ্র থেকে জমি পুনরুদ্ধার করে তাকে বসবাসযোগ্য করে তোলার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। এভাবে পুনরুদ্ধারকৃত ভূমিকে ‘পোল্ডার’ বলা হয়, যা এখন দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে বিস্তৃত। আরও আশ্চর্যের বিষয় হলো, দেশের জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই এই পুনরুদ্ধারকৃত ভূমিতে বসবাস করে! আগে যেসব এলাকা সমুদ্রসীমার নিচে ছিল, সে এলাকাগুলোতে তারা এমন প্রজাতির গাছ ও ফুল লাগায়, যেগুলো প্রকারান্তরে পানি শোষক এবং প্রকৃতির জন্য সহায়ক।
শকল্যান্ড (Schokland) মিউজিয়াম ভ্রমণও ছিল এক অভাবনীয় অভিজ্ঞতা। একসময় এটি ছিল পানির মধ্যে অবস্থিত একটি দ্বীপ। কিন্তু এখন এটি স্থলভাগে দাঁড়িয়ে আছে! নেদারল্যান্ডসের অসাধারণ পানি ব্যবস্থাপনার কারণে এমনটা সম্ভব হয়েছে। এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ এবং ডাচদের পানির সঙ্গে লড়াইয়ের ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। বন্যার সাম্প্রতিক ঝুঁকি মোকাবিলায় ডাচরা ‘রুম ফর দ্য রিভার’ প্রকল্প চালু করেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে নদীগুলোকে আরও বেশি জায়গা দেওয়া হচ্ছে, যাতে বন্যার সময় পানি বিস্তৃত হওয়ার জায়গা পায়। এটি পরিবেশের জন্যও উপকারী। কারণ, এতে করে প্রাকৃতিক আবাসস্থল পুনরুদ্ধার হয়।  দুপাশের ভূমিতে অবস্থান এমন, বন্যা পরিস্থিতিতে এক পাশ প্লাবিত হলেও, অন্য পাশের জন্য ঝুঁকি কম। বা প্রস্তুতির জন্য পর্যাপ্ত সময় থাকবে।
নেদারল্যান্ডসের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সমৃদ্ধ ও বৈচিত্র্যময়। রেমব্রান্ট, ভান গঘ, ভারমেয়ার- এমন মহান শিল্পীদের দেশ হিসেবে সারা দেশে বিশ্বমানের মিউজিয়াম ছড়িয়ে আছে। আমস্টারডামের রাইকসমিউজিয়াম  (Rijksmuseum) এবং ভ্যান গঘ মিউজিয়াম এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। রাইকসমিউজিয়ামে রেমব্রান্টের বিখ্যাত ‘দ্য নাইট ওয়াচ’ ছবি দেখার অভিজ্ঞতা অবর্ণনীয়। ভ্যান গঘ মিউজিয়ামে শিল্পীর জীবন ও কর্মের এক চমৎকার প্রদর্শনী রয়েছে। ডাচ খাবারের স্বাদও বিশ্বে অনন্য। ‘স্ট্রপওয়াফেল’ (Stroopwafel) নামক মিষ্টি, যা দুই পাতলা ওয়াফেলের মাঝে ক্যারামেল সিরাপ দিয়ে তৈরি, কফির সঙ্গে বিশেষ উপভোগ্য। ‘বিটারবোলেন’ (Bitterballen) নামক মাংসের স্ন্যাকস এবং ‘হারিং’ (ঐবৎৎরহম) মাছও ডাচ ঐতিহ্যের অংশ। ডাচ প্যানকেক, পিজ্জা ও পাস্তার স্বাদ অসাধারণ।
নেদারল্যান্ডস টিউলিপ ও অন্যান্য ফুলের জন্য বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত। বসন্তের শুরুতে, দেশের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে টিউলিপের রঙিন মাঠ দেখা যায়। ফুলের বিশাল ক্ষেতগুলো হেলিকপ্টার থেকে দেখলে তা রঙের প্যাচওয়ার্ক কুইল্টের মতো মনে হয়। কিউকেনহফ (Keukenhof) উদ্যানে ৭০০ প্রজাতির টিউলিপসহ প্রায় ৭ মিলিয়ন ফুলের বাল্ব রোপণ করা হয়। এর সৌন্দর্য বর্ণনাতীত। প্রতিবছর এই উদ্যান লাখ লাখ পর্যটক আকর্ষণ করে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় ফুল নিলাম কেন্দ্র ‘আলসমেয়ার ফ্লাওয়ার অকশন’ (Aalsmeer) মুগ্ধ করে ভ্রমণকারীদের।
আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আমার শিক্ষক বন্ধুর সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করার সুযোগ পেয়েছি। নেদারল্যান্ডসের শিক্ষাব্যবস্থা বিশ্বের অন্যতম সেরা। দেশটিতে বেশ কয়েকটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেমন- আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়, লাইডেন বিশ্ববিদ্যালয়, ইউত্রেত বিশ্ববিদ্যালয় ইত্যাদি। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করে। পড়াশোনার প্রধান মাধ্যম ইংরেজি হওয়ায় আন্তর্জাতিকভাবে পড়াশোনার স্বীকৃতিও রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কার্যক্রমও বিশ্বমানের। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কৃষি, জলবায়ু পরিবর্তন- এমন বিভিন্ন ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা হয়ে থাকে। প্রাসঙ্গিকভাবে উল্লেখ করা যায়, বাংলাদেশে নৃবিজ্ঞান বা এথনোগ্রাফিক গবেষণার সূত্রপাত ডাচ দম্পতি আরেন্স ও বার্ডেনের মাধ্যমে। তাদের রচিত ঝগড়াপুর এথনোগ্রাফি বাংলাদেশের নারী সমাজের ওপর প্রথমদিককার অন্যতম একটি গবেষণা, যা ১৯৬০ এর দশকে সম্পাদিত হয়েছিল। তাছাড়া আমস্টারডাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক উইলেম ভ্যান সেন্ডেলের বাংলাদেশের ওপর গবেষণা সর্বজনবিদিত। তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে ‘কৃষক সমাজের গতিশীলতা’, ‘লিভিং ইন এ বর্ডারলান্ড’ ও ‘এ হিস্ট্রি অব বাংলাদেশ’ অন্যতম গবেষণামূলক কাজ।   
ডাচদের জীবনযাত্রা মুগ্ধ হওয়ার মতো। তারা জীবনে ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়ে খুব সচেতন। কাজের সময়সীমা কঠোরভাবে মেনে চলা হয় এবং পারিবারিক সময় অত্যন্ত মূল্যবান বলে বিবেচিত। অফিসে ‘নাইন-টু-ফাইভ’ কাজ অনেক সাধারণ। ‘হাইগি’ (hygge) ধারণাটি ডাচ জীবনে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এর অর্থ আরামদায়ক ও উষ্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করা এবং নিজের মতো করে থাকা। ঠান্ডা শীতের সন্ধ্যায় লোকেরা ঘরের ভিতরে মোমবাতি জ্বালিয়ে, গরম চকোলেট নিয়ে আরামদায়ক সময় কাটায়। ডাচ মানুষেরা খুব সরল ও প্রাঞ্জল। তারা যা ভাবে, তা-ই বলে। এই সরলতা কখনো কখনো বিদেশীদের কাছে রূঢ় মনে হতে পারে, কিন্তু এটি তাদের সংস্কৃতির অংশ। তাদের এই সততা ও স্পষ্টবাদিতা অনেক ক্ষেত্রে কার্যকর ও ফলপ্রসূ।
নেদারল্যান্ডস ভ্রমণ আমার জন্য এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এই দেশটির অসাধারণ পানি ব্যবস্থাপনা, বাইসাইকেল সংস্কৃতি, উন্নত জীবনমান, ঐতিহাসিক স্থাপত্য, এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আমাকে মুগ্ধ করেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে অবস্থিত একটি দেশ কীভাবে প্রাকৃতিক বাধা অতিক্রম করে একটি সমৃদ্ধ, আধুনিক এবং টেকসই সমাজ গড়ে তুলেছে, তা নেদারল্যান্ডস ভ্রমণে স্পষ্টভাবে দেখা যায়। প্রকৃতির সঙ্গে লড়াই করে বেঁচে থাকার এই অসাধারণ উদাহরণ থেকে আমাদের দেশও অনেক কিছু শিখতে পারে। আশা করি, আমাদের দেশের মানুষও ভবিষ্যতে নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলো ভ্রমণ করে তাদের অভিজ্ঞতা থেকে জ্ঞান আহরণ করবে এবং দেশের উন্নয়নে তা কাজে লাগাবে।

লেখক : অধ্যাপক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

প্যানেল

×