
বাংলাদেশের সমাজ ব্যবস্থা মূলত গ্রামকেন্দ্রিক। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। সুবিধাবঞ্চিত অসহায় গরিব মানুষের দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তারা বহুমুখী কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে জনগণের দোরগোড়ায় তাদের সেবাধর্মী কার্যক্রম পৌঁছে দিচ্ছে। সর্বোপরি পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র জনগণের জীবনযাত্রার মানেন্নয়নের লক্ষ্যে ক্ষুদ্রঋণ যে একটি কার্যকর পদক্ষেপ, এ বিষয়টি এখন আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তারা শুধু দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিয়েই কাজ করছে না, নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্য নিয়েও কাজ করছে। টার্গেটভুক্ত জনগোষ্ঠীর অধিকাংশই হচ্ছে গ্রামীণ দরিদ্র নারী। তৃণমূল পর্যায়ে নারীদের সুসংগঠিত করে দল গঠনের মাধ্যমে জীবনমুখী খাতে জামানতবিহীন পরিশোধযোগ্য স্বল্প পরিমাণ অর্থ প্রদান করে তাদের আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। অর্থাৎ আয় বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রামীণ দরিদ্র নারীদের ক্ষমতায়নের বিষয়টি নিশ্চিত করা হচ্ছে।
এই আদর্শ-উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তৃণমূল পর্যায়ের সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন তথা দরিদ্র অসহায় নারীদের ক্ষমতায়নের কথা বিবেচনা করে ক্ষুদ্র অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান ব্যুরো টাঙ্গাইল প্রাথমিক পর্যায়ে নব্বই সালে মাত্র ৫টি শাখা নিয়ে যাত্রা শুরু করে। হাঁটিহাঁটি পা পা করে ব্যুরো টাঙ্গাইল আজ দেশজুড়ে ‘ব্যুরো বাংলাদেশ’ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। ৩০ লক্ষাধিক গ্রাহক এবং ১২ হাজার কর্মীর সমন্বয়ে এক শক্তিশালী পরিবার এটি। মূলধন পর্যাপ্ততা, আয় সক্ষমতা, ঋণের গুণগতমান, ব্যবস্থাপনা দক্ষতা এবং সর্বোপরি সুশাসনের দিক থেকে বিচার করলে বুরো বাংলাদেশ এখন দেশের শীর্ষ স্থানীয় ৩টি ক্ষুদ্র অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে অন্যতম।
সংস্থাটি ইতোমধ্যে নব্বই থেকে ২০২৪ পর্যন্ত অনেকটা পথ পাড়ি দিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তার ব্যালেন্সশিট সাইজও বড় হয়েছে। এই ব্যালেন্সশিট (ঋরহধহপরধষ ংঃধঃবসবহঃ) এর অন্যতম দুটি খাত হলো- লোন পোর্ট ফোলিও এবং সঞ্চয় পোর্ট ফোলিও। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ ক্ষুদ্র অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানটির সঞ্চয় পোর্ট ফোলিও আজ অনেক বড় হয়েছে। বর্তমানে ৩০ লক্ষাধিক গ্রাহকের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা সঞ্চয় স্থিতি রয়েছে। ব্যুরো বাংলাদেশ মনে করে, এই সঞ্চয় একদিকে যেমন গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর সামাজিক দুর্যোগ মোকাবিলা করার সক্ষমতা বাড়ায়, অন্যদিকে সংস্থার তহবিলের জোগান দেয়। আর এ জন্যই সংস্থাটি তার সদস্যদের আরও বেশি করে সঞ্চয়মুখী হওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করে থাকে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, কোনো মাইক্রোফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সঞ্চয় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
ব্যুরো বাংলাদেশ গ্রামীণ জনগোষ্ঠী তথা সদস্যদের মধ্যে সঞ্চয়ী অভ্যাস গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যে কতটা আন্তরিক ও নিবেদিত, তা এবার টাঙ্গাইলে গিয়ে বুঝতে পেরেছি। প্রতিষ্ঠানটির গভর্নিং বডির চেয়ারপারসন হিসেবে সম্প্রতি টাঙ্গাইলে যাওয়ার সুযোগ হয় আমার। আর তখনই তৃণমূল পর্যায়ে অবস্থিত তাদের শাখাগুলোর সঞ্চয় স্থিতি দেখে মুগ্ধ হই। একসময় ব্যাংকের গ্রামীণ শাখায় কাজ করার সুবাদে ক্ষুদ্র সঞ্চয়ের গুরুত্বটা নিজের চোখে দেখেছি। এবার টাঙ্গাইল গিয়ে সুবিধাবঞ্চিত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা বৃদ্ধি করার ব্যাপারে ব্যুরো বাংলাদেশের কর্মতৎপরতা দেখে মুগ্ধ না হয়ে পারিনি।
প্রত্যন্ত অঞ্চলে অবস্থিত সংস্থার শাখাগুলো পরিদর্শনের সময় যে জিনিসটি আমাকে সবচেয়ে বেশি আকৃষ্ট করেছে তাহলো- তৃণমূল পর্যায়ে দরিদ্র অসহায় নারীদের যেভাবে সুসংগঠিত করে দল গঠনের মাধ্যমে উৎপাদনমুখী খাতে পরিমাণ অর্থ প্রদান করে তাদের আত্মনির্ভরশীল ও স্বাবলম্বী হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে। আমাদের দেশের গ্রামীণ এলাকায় নারীদের পিছিয়ে পড়ার মূল কারণ হচ্ছে, তারা সন্তান লালন-পালনসহ গৃহকর্মের যে সকল কাজ করে থাকে, তা উৎপাদন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃত নয়। যৌতুক, তালাক, নারী পাচার, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ ইত্যাদি ঘটনাসমূহ নারীদের নিরাপত্তাহীনতার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এ উপলব্ধি থেকেই ব্যুরো বাংলাদেশ গত দুই দশক ধরে পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র নারী জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তথা নারী-পুরুষের অসমতা দূরীকরণের লক্ষ্যে ব্যাপক তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ পারিবারিক, সামাজিক ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে যেন নারীর মৌলিক অধিকার ‘নারীর ক্ষমতায়ন’ বিষয়টির নিশ্চয়তা বিধান করা সম্ভব হয়- এ লক্ষ্যকে সামনে রেখে ব্যুরো বাংলাদেশ তার ক্ষুদ্র ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। গ্রামীণ শাখাগুলো পরিদর্শন করার সময় আরেকটি বিষয় দেখে অভিভূত হয়েছি। তাহলো- ব্যুরো বাংলাদেশ একদিকে নতুন নতুন ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি করছে, অন্যদিকে পুরুষের পাশাপাশি নারীদেরও উৎসাহ যুগিয়ে যাচ্ছে। এর ফলশ্রুতিতে প্রতিদিন যুক্ত হচ্ছে অসংখ্য নারী-পুরুষ সমন্বয়ে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা। পল্লী অঞ্চলে সৃষ্টি হচ্ছে নতুন নতুন কর্মসংস্থান। এতে একদিকে যেমন গ্রমীণ জনগোষ্ঠীর শহর অভিমুখী হওয়ার প্রবণতা কমে যাচ্ছে, অন্যদিকে মহাজনী সুদ থেকে তারা মুক্তি পাচ্ছে।
টাঙ্গাইল যাওয়ার মূলত দুটি উদ্দেশ্য ছিল। এক- ৫টি মডেল শাখার নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন। দুই- শাখাগুলো প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে শাখার সম্মানিত গ্রাহক যারা শাখার সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছেন এবং সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাদের অবদানকে সম্মাননা জানানো। একইভাবে শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে যে সকল কর্মী সততার সঙ্গে মন প্রাণ ঢেলে কাজ করেছেন, শ্রম দিয়েছেন তাদের অবদানকে সম্মাননা জানানো। সেই সঙ্গে ছিল টাঙ্গাইল আঞ্চলিক কার্যালয়ের নবনির্মিত ভবন উদ্বোধন ও ব্যুরো হাসপাতাল নির্মাণ কাজের শুভসূচনা।
ব্যুরো বাংলাদেশ তার অতীতকে কখনোই ভোলে না, বরং কৃতজ্ঞতাভরে স্মরণ করে। শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ের গ্রাহক ও কর্মীদের সম্মাননা কার্যক্রম এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। সত্যি কথা বলতে কি, এটি শুধু তাদের ব্যতিক্রমী উদ্যোগই নয় যুগান্তকারী পদক্ষেপও বটে, যা প্রশংসার দাবি রাখে। এ ব্যাপারে সংস্থার প্রাণপুরুষ জাকির হোসেনের রয়েছে সফল নেতৃত্ব, যিনি সাদা মনের একজন স্বপ্নবাজ মানুষ ও শুদ্ধতার আয়োজক। আমরা স্বজনরা তাকে নিয়ে গর্ববোধ করি।
ক্ষুদ্র অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যুরো বাংলাদেশ যে কতটা গ্রাহকবান্ধব, এর ছোট্ট একটি নমুনা তুলে ধরছি। সম্প্রতি রংপুরে পদোন্নতিপ্রাপ্ত শাখা ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত থাকার সুযোগ হয় আমার। তখনই ওই অঞ্চলের একজন শাখা ব্যবস্থাপক আবু রায়হান খান তার অভিমত ব্যক্ত করতে গিয়ে একজন সঞ্চয়ী সদস্যের অনুভূতির কথা তুলে ধরেন। একদিন ভোর ৫টায় উক্ত সঞ্চয়ী সদস্য শাখা ব্যবস্থাপককে ঘুম থেকে ডেকে তুলে বললেন, তার খুব বিপদ, এই মুহূর্তে ৩ শত টাকা দরকার। গ্রাহক আরও জানান যে, তিনি একজন ঋণী সদস্যও বটে। শখা ব্যবস্থাপক কোনো রকম বিরক্তি প্রকাশ না করে বললেন, ঋণের হিসাব-নিকাশ আলাদা, সঞ্চয়ের হিসাব-নিকাশ আলাদা। পাশ বই এনেছেন? গ্রাহক বললেন, সঙ্গেই আছে। শাখা ব্যবস্থাপক পাশবই চেক করে বললেন, মোট ৪৫০ টাকা ব্যালেন্স আছে। ২০ টাকা রেখে বাকি টাকা উত্তোলন করতে পারে। কিন্তু গ্রাহক ৩০০ টাকা উত্তোলন করে বললেন, এই টাকাটাই আমার প্রয়োজন, যা এই মুহূর্তে বিপদের বন্ধু। আজকে বিকেলের মধ্যে মেয়ের পরীক্ষার ফি দিতে হবে, যেখানে ৩০০ টাকা শর্ট পড়েছে। পাড়া-প্রতিবেশী তো দূরের কথা আত্মীয়স্বজনদের কাছেও ধার চেয়ে তিনি বিফল হয়েছেন। আর এজন্য ব্যুরো বাংলাদেশের প্রতি তার কৃতজ্ঞতার যেন শেষ নেই। পরিশেষে, উক্ত গ্রাহক শাখা ব্যবস্থাপককে অনুরোধ করে বললেন, সে যেন তার সঞ্চয় কার্যক্রম ভবিষ্যতেও নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারেন। একজন সঞ্চয়ী হিসাবধারীর এমন আন্তরিকতাপূর্ণ উক্তি সত্যি অসাধারণ। মাঠপর্যায়ে সদস্যদের আস্থা অর্জন সংস্থার কর্মীদের জন্য যে কতটা স্বস্তিদায়ক তা বলে বোঝানো যাবে না। আর এজন্যই ব্যুরো বাংলাদেশ শুধু গ্রাহকবান্ধবই নয়, কর্মীবান্ধবও বটে।
সঞ্চয়ের গুরুত্ব যে কত অপরিসীম তা আর্থিক খাতের ব্যাংকগুলো এখন হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। বেশকিছু দিন হলো ব্যাংক খাতে তারল্য সংকট বিরাজ করছে। ফলে চাহিদা অনুযায়ী তারা উদ্যোক্তাদের ঋণের জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এতে পরিস্থিতি উদ্বেগজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে সংকুচিত হয়ে পড়ছে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড। বিপর্যয় দেখা দিয়েছে উৎপাদন খাতে। সৃষ্টি হচ্ছে না তেমন কোনো নতুন কর্মসংস্থান। মাইক্রো ফাইন্যান্স প্রতিষ্ঠানগুলোর অবস্থাও প্রায় অনুরূপ। তবে সেক্ষেত্রে ব্যুরো বাংলাদেশ তার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনাকে কাজে লাগিয়ে তহবিল ব্যবস্থাপনায় অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। সঞ্চয় যে কোনো আর্থিক প্রতিষ্ঠানের হৃৎপিণ্ড হিসেবে বিবেচিত। এ লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ব্যুরো বাংলাদেশ তার সঞ্চয় সেবা কার্যক্রমকে সম্পূর্ণভাবে গ্রাহকমুখী করে গড়ে তুলেছে। গ্রাহকদের চাহিদা মোতাবেক যে কোনো সময় তাদের সঞ্চয়কৃত অর্থ উত্তোলন করার সুযোগ রয়েছে। শুধু তাই নয়, শাখার ঋণী সদস্য হলেও সঞ্চয় উত্তোলনে কোনো বাধা নেই। ব্যুরো বাংলাদেশের গ্রাহকগণ সাধারণত দুই ধরনের সঞ্চয় সেবা পেয়ে থাকেন। এক হলো সাধারণ সঞ্চয়। আরেকটি মেয়াদি সঞ্চয়। ক্ষুদ্র সঞ্চয়কারীরা সহজ নিয়ম কানুনের জন্য সাধারণ সঞ্চয় সেবার প্রতিই বেশি আকৃষ্ট হয়ে থাকেন।
ক্ষুদ্র ঋণ অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানটির সেবাসমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সেবা হলো মেয়াদি সঞ্চয় স্কিম। মেয়াদি সঞ্চয় হচ্ছে দীর্ঘমেয়াদে পরিচালিত একটি সঞ্চয়ী হিসাব, যা থেকে প্রত্যেক হিসাবধারী গ্রাহক মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর লাভসহ জমাকৃত অর্থ এককালীন পেয়ে থাকেন। প্রতিটি পরিবারেরই অনেক স্বপ্ন থাকে, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকে, যেখানে স্বপ্ন পূরণে অনেক টাকার প্রায়োজন হয়। যেমন- সন্তানের উচ্চ শিক্ষা, বিয়ে-শাদি, জমিজমা ক্রয়, বিভিন্ন ঝুঁকি বা বিপদ মোকাবিলা, গৃহনির্মাণ বা মেরামত, পরিবারের কোনো সদস্যকে বিদেশে পাঠানো, কিংবা পরিবারের কোনো সদস্যকে জরুরি চিকিৎসা সেবা প্রদান ইত্যাদি।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালুকণা বিন্দু বিন্দু জল, গড়ে তোলে মহাদেশ সাগর অতল। সঞ্চয়ের ক্ষেত্রেও এ কথাটি চরম সত্য। আয়-ব্যয়-সঞ্চয় শব্দগুলো অর্থনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত হলেও এগুলো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমরা যে আয় করি, পাশাপাশি তা খরচও করি। আমাদের চাহিদার শেষ নেই। এক প্রয়োজন পূরণ হতেই নতুন আরও অনেক প্রয়োজন জীবনে এসে হাজির হয়। ফলে প্রতিনিয়তই ব্যয় হচ্ছে, কিন্তু আমরা অনেকেই সঞ্চয় করি না কিংবা সঞ্চয় করার কোনো পরিকল্পনাও হাতে রাখি না। অথচ সঞ্চয় হচ্ছে ভবিষ্যতের মাপকাঠি, স্বপ্নের সিঁড়ি ও চরম বিপদের বন্ধু।
বর্তমানে শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও মানুষের মধ্যে সঞ্চয় প্রবণতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। সঞ্চয় করার জন্য প্রয়োজন সুপ্ত আগ্রহ বা ইচ্ছা যা গ্রামীণ এলাকায় অনেকের মধ্যেই রয়েছে। এ অবস্থায় তাদের সঞ্চয়ে উদ্বুদ্ধ করা, সঞ্চয়ের প্রয়োজনীয়তা ও গুরুত্ব তুলে ধরা- তৃণমূল পর্যায়ে এ কাজটি ব্যুরো বাংলাদেশের কর্মীরা আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিপালন করছে।
ভবিষ্যতে স্বপ্নের সিঁড়ি বাস্তবায়নের জন্য সঞ্চয়ের কোনো বিকল্প নেই। সঞ্চয় ও ঋণদান কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে এক নিবিড় সম্পর্ক। সঞ্চয় সবসময় সংস্থার তহবিলের জোগান দেয়। সঞ্চয়ে বিনিয়োগের মতো কোনো ঝুঁকি নেই। এজন্য সঞ্চয়কে বলা হয় ভবিষ্যতের সবচেয়ে ভালো বন্ধু ও উত্তম বিনিয়োগ। দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্যুরো বাংলাদেশের এ অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
লেখক : সাহিত্যিক, গবেষক ও উন্নয়ন কর্মী
প্যানেল