
বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের জীবনে যে প্রভাব ফেলেছে, তা শুধু অর্থনৈতিক নয়- একটি বড় সামাজিক সংকটের জন্ম দিচ্ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম এমনভাবে বেড়েছে যে, মধ্যবিত্ত তো বটেই, নিম্নবিত্ত শ্রেণিও চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে।
প্রশ্ন হলো- এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে বা কারা? সরকারের পক্ষ থেকে মাঝে মধ্যেই শোনা যায় আন্তর্জাতিক বাজারে দামের ঊর্ধ্বগতি, ডলার সংকট, কিংবা বৈশ্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির কথা। কিন্তু বাস্তবতা হলো, দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা, বাজার মনিটরিংয়ের অভাব এবং সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্য এই সংকটকে আরও ঘনীভূত করেছে।
মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে প্রয়োজন কথামালা নয়, বাস্তবমুখী কার্যকর উদ্যোগ। যেমন-
১. বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা। যাতে প্রতিদিনের পণ্যের দর যাচাই ও নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয়।
২. সরকারি ভর্তুকির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করা। যেন প্রকৃত ভোক্তা সেই সুবিধা পায়।
৩. মধ্যস্বত্বভোগীদের দৌরাত্ম্য কমানো। যারা উৎপাদক ও ভোক্তার মাঝখানে অযৌক্তিকভাবে লাভ তুলে নিচ্ছে।
৪. কৃষকদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করা। যাতে উৎপাদন বাড়ে এবং সরবরাহ নিশ্চিত হয়।
৫. স্বচ্ছ তথ্যভিত্তিক বাজার বিশ্লেষণ করে পূর্বাভাস ও প্রস্তুতি গ্রহণ করা। যেন হঠাৎ করে পণ্যের ঘাটতি বা দামের উল্লম্ফন রোধ করা যায়।
মানুষ এখন আর আশার গল্প শুনতে চায় না। চায় বাস্তব সমাধান। কারণ, পেটের ক্ষুধা কোনো ভাষণ বোঝে না। সময় এসেছে চোখ-কান খোলা রেখে সুনির্দিষ্ট, বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নেওয়ার। অন্যথায়, মূল্যবৃদ্ধির ধাক্কা শুধু পরিবারকেই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এবং দেশের স্থিতিশীল অর্থনীতিকেও বিপর্যস্ত করে তুলতে পারে।
আনিকা ইসলাম
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
প্যানেল