ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি

প্রকাশিত: ২০:০৫, ২০ এপ্রিল ২০২৫; আপডেট: ২০:০৬, ২০ এপ্রিল ২০২৫

নিত্যপণ্যের বাজারে অস্বস্তি

বিগত পবিত্র রমজান ও ঈদ উপলক্ষে সরকার গৃহীত নানা পদক্ষেপ যেমনÑ চালসহ বিভিন্ন পণ্যে শুল্ককর হ্রাস ও ভ্যাট প্রত্যাহার, পর্যাপ্ত পণ্য আমদানি, নিম্নবিত্তদের ভর্তুকি মূল্যে পণ্য সহায়তা, নিয়মিত বাজার মনিটরিং ইত্যাদি কারণে নিত্যপণ্যের বাজারে স্বস্তি বিরাজ করলেও এখন আবার অস্বস্তি ফিরে আসতে শুরু করেছে বাজারে। এর প্রধান কারণ রাজস্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারের শুল্ককর ও ভ্যাট প্রত্যাহার। সে কারণে বাজারে ইতোমধ্যে প্রতি লিটার ভোজ্যতেলের দাম বেড়েছে ১৪ টাকা। অনুরূপ চালের বাজারেও বিরাজ করছে অস্থিরতা। বিদেশ থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে শুল্কমুক্ত চাল আমদানি হলেও বাজারে এর তেমন প্রভাব পড়েনি। বরং প্রতি কেজি চালের দাম বেড়েছে ৮-১০ টাকা। বেড়েছে ডাল ও আটার দামও।
খরা মৌসুম চলতে থাকায় বাজারে মাছের সরবরাহ কম। তদুপরি সাগরে আপাতত মাছ ধরায় রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। ফলে দাম বেড়েছে মাছের। বেড়েছে দুধ ও মাংসের দাম। এর পাশাপাশি শীত মৌসুমের সবজির সরবরাহ না থাকায় শাকসবজির দামও বাড়তির দিকে। রমজানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি সীমিত থাকলেও এখন তা আবার ঊর্ধ্বমুখী। তবে সরকার সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন বলেই প্রতীয়মান হয়। যে কারণে আগামীতে যাতে দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে থাকে এবং সারা বছরই তা ধরে রাখা যায়, সেজন্য আসন্ন বাজেটে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে সরকার। যেমনÑ ১৭টি অত্যাবশ্যকীয় ভোগ্যপণ্য প্রতিবছর পর্যান্ত পরিমাণে আমদানি এবং সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে কর ২শতাংশ হারে কর্তন করার বিধান বাতিলের প্রস্তাব রয়েছে। এর ফলে বাজেট ঘোষণার পরেও নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে বলেই মনে করছে এফবিসিসিআই।
কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ক্যাবের মতে, বাজারে আমদানিকারক যখন গুটিকতক, তখন আমদানি ও নিত্যপণ্যের দাম তাদের মর্জির ওপর নির্ভরশীল। সেক্ষেত্রে বাজারে পণ্য সরবরাহ বৃদ্ধির জন্য আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার জরুরি হয়ে পড়েছে। এর পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারের নানামুখী উদ্যোগেও কমেনি সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজি। বরং আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে এসব চক্র। যে কারণে আবারও বেড়েছে চাল ও ভোজ্যতেলের দাম। প্রায় সব ধরনের খাদ্যপণ্যই বিক্রি হচ্ছে বাড়তি দামে। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকার শুল্ক ও কর ছাড়ের মতো অনেক পদক্ষেপ নিলেও সেই সুবিধা লুফে নিয়েছে ব্যবসায়ীরা। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, চাঁদাবাজ ও সিন্ডিকেট চক্রে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর হাতবদল হয়েছে। রমজান ও ঈদে নিত্যপণ্যের দাম কমতে শুরু করলেও কিছুদিনের মধ্যে আবার বাড়তে থাকে বলে জানিয়েছেন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব)। যেভাবেই হোক এই অপসংস্কৃতি থেকে দেশকে বেরিয়ে আসতে হবে। বাজারে অস্থিরতা কমাতে প্রয়োজনে সমবায় পদ্ধতি চালু করা যেতে পারে এবং সক্রিয় করতে হবে টাস্কফোর্স। সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সারা বছর ধরে যেন নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য, কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথভাবে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

প্যানেল

×