
বর্তমানে দেশে এক শ্রেণির মানুষ দাবি আদায়ের নামে সহিংস পন্থা বেছে নিচ্ছে, যা স্পষ্টতই বেআইনি এবং অনাকাক্সিক্ষত। দেখা যাচ্ছে, আন্দোলনের আড়ালে চলছে ব্যক্তিগত বিদ্বেষ চরিতার্থ করতে হামলা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও লুটপাট। আবার এমনটিও দেখা যাচ্ছে কিছু বিক্ষোভ বা রাজনৈতিক কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে, নির্দিষ্ট কিছু গোষ্ঠী ইচ্ছাকৃতভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, যানবাহন কিংবা জনজীবনের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানে হামলা চালাচ্ছে। এতে শুধু ব্যক্তিগত বা গোষ্ঠীগত ক্ষোভই নয়, বরং একটি পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টাও লক্ষ্য করা যায়।এই প্রবণতা শুধু নাগরিক জীবনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে না, বরং এই ধরনের কার্যকলাপ ভুক্তভোগীদের জন্য যেমন ক্ষতিকর তেমনি সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি স্বরূপ এবং তা দেশের আইনশৃঙ্খলার পরিপন্থী।একটি সভ্য ও গণতান্ত্রিক সমাজে আইনের শাসনই সর্বোচ্চ। নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া একটি মারাত্মক অপরাধতবেআশার কথা এই যে, প্রশাসন ইতিমধ্যেই এসব বেআইনি তৎপরতার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছেএবং জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চালানো হচ্ছে। এটি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমেই এই ধরনের অপকর্ম কঠোর হস্তে দমন করা সম্ভব।তবে, কেবল প্রশাসনিক পদক্ষেপই যথেষ্ট নয়। সামাজিক সুস্থিরতা বজায় রাখার জন্য এই ধরনের হামলা, লুটপাট ও ভাঙচুরের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা অপরিহার্য। সমাজের সকল স্তরের মানুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হবে। গণমাধ্যমে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এবং ব্যক্তিগত পরিসরে এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে, যাতে কোনো দুষ্কৃতকারী ভবিষ্যতে এই ধরনের গর্হিত কাজ করার সাহস না পায়।আমাদের মনে রাখতে হবেনিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া একটি মারাত্মক অপরাধ। এটি যেমন ব্যক্তির নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে, তেমনি সামগ্রিকভাবে দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকেও বিপন্ন করে তোলে। আইনের শাসন কেবল প্রশাসনের দায়িত্ব নয়এর রক্ষক আমরা সকলে। একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলোএসব সহিংসতা, লুটপাট এবং ভাঙচুরের বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, গণমাধ্যম কিংবা স্থানীয় কমিউনিটিতে, সকল ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতেওএসব বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। দেশের প্রতিটা ব্যক্তির মনে রাখতে হবে নিজের সম্পদ রক্ষায় যেমন ভালোবাসা মায়া মহাব্বত আছে ঠিক তেমনিভাবে অন্যের সম্পদ রক্ষায় একই মায়া মহব্বত ভালোবাসা থাকা উচিত,আইন প্রয়োগকারী সংস্থার প্রতিটি ব্যক্তিকে এবং দেশের প্রতিটি নাগরিক কে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা,সচেতনতা দায়িত্বশীলতাএবং প্রয়োগের প্রতি শ্রদ্ধাবোধথাকতে হবে,আসুন, আমরা সকলে মিলে আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই এবং যেকোনো প্রকার সহিংসতা ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই। সামাজিক সম্প্রীতি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করাই এখন সময়ের দাবি। দাবি থাকুক, আন্দোলন হোকতবে তা হোক ভাঙচুর, লুটপাট ও আইনবহির্ভূত আচরণ দিয?েনয় বরংশান্তিপূর্ণ আন্দোলন, গণতান্ত্রিক চর্চা ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধাই হোক পথ।
বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা থেকে