ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২

চলন্ত বাসে ডাকাতি

প্রকাশিত: ২০:৫২, ১৫ এপ্রিল ২০২৫

চলন্ত বাসে ডাকাতি

.

সাভারে গত ২ মাসে তৃতীয়বারের মতো একই দিনে (১১ এপ্রিল, শুক্রবার) সিঅ্যান্ডবি এবং ব্যাংক টাউন এলাকায় দিনে দুপুরে দুটি চলন্ত বাসে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ব্যাংক টাউন এলাকায় ডাকাতি হওয়া বাসের যাত্রীদের ভাষ্য মতে, শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ব্যাংক টাউন এলাকায় সাভার পরিবহন (ঢাকা মেট্রো-১৩-০৭০৬) নামের একটি চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে কয়েকজন ডাকাত ধারালো ছুরি দেখিয়ে যাত্রীদের কাছ থেকে সর্বস্ব কেড়ে নেয়। যাত্রীরা জানান, ডাকাতি শেষে ডাকাতরা এবং বাসের লোকজন নম্বর প্লেট খুলে যাত্রীদের নামিয়ে বাসটি রাজধানীর কল্যাণপুরে ফেলে চলে যায়। সহজেই অনুমেয়, বাসটির চালক ও সহকারীও ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। একই দিন বেলা সাড়ে ১১টায় সিঅ্যান্ডবি এলাকায় চলন্ত যাত্রীবাহী বাসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ডাকাতদের কবলে পড়েন। মহিলারদের স্বর্ণালংকার লুটে নেওয়া হয়। একজনের পকেট থেকে ২০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এ সময় ডাকাতদের মুখ খোলা ছিল। 
ডাকাতদের ধরে আইনের আওতায় আনা হলে তথ্য পাওয়া খুব সহজ হবে। পুলিশ বলছে, তাদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এসব ঘটনা রুখতে কয়েকটি অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। সিভিল পোশাকে মোতায়েন করা হয়েছে ডিবি পুলিশ। অন্যদিকে ঢাকা জেলা পুলিশ বলছে এটা পুলিশের ব্যর্থতা নয়, বরং অস্থিরতা তৈরির জন্য পরিকল্পিতভাবে চলন্ত বাসে এসব ঘটানো হচ্ছে। বিগত সরকারের যারা এখন ভারতে পালিয়ে আছে, তারা সেখান থেকে প্রচুর টাকা খরচ করে এসব করাচ্ছে। এমন তথ্য আমাদের কাছে আছে। বাসগুলো চেক করতে পুলিশ লাইনের ১০ জন সদস্য ও থানার একটি টিম কাজ করছে। উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত শুধু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে সাভারসহ বিভিন্ন স্থানে কিছু চলন্ত বাসে অন্তত ছয়টি ছিনতাই-ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে দুটি ঘটনায় যাত্রীদের ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন, ‘একই জায়গায় বারবার ছিনতাই, ডাকাতি হচ্ছে, অথচ পুলিশ নির্বিকার।’ শ্রমিকদের এ অভিযোগ আমলে নিতে হবে। যাত্রীদের জানমালের নিরাপত্তা বিধান রাষ্টীয় দায়িত্ব। 
সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন মহাসড়ক যেমনÑ ঢাকা-টাঙ্গাইল, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-রাজশাহী-রংপুর, ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট রুটে প্রায়ই ডাকাতির ঘটনা ঘটছে। ঘটছে ধর্ষণের ঘটনাও। কয়েকটি ডাকাত চক্র এই রুটগুলোত পণ্যবাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে ডাকাতি করে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বলেছে, প্রায় ১ হাজার ৪০০ ডাকাতের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ বলছে, তালিকা ধরে প্রত্যেকের বাড়ি গিয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হবে। গত ২০ বছরে (২০০৫-২০২৫) মহাসড়কে ডাকাতির বিভিন্ন ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিরা এ তালিকায় রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে চলছে অভিযান। দেশে এখন কোনো রাজনৈতিক সরকার নেই। পুলিশের ওপর রাজনৈতিক কোনো চাপও নেই। ড. ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকারের সময় পুলিশ স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারছে। এরপরও যদি জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে পুলিশ যদি অতন্দ্র ভূমিকা রাখতে না পারে, তবে দেশের জনগণ তা সহজে মেনে নেবে না। 

প্যানেল

×