ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২

তৃষ্ণায় বিষ পান

প্রকাশিত: ২০:১৫, ১১ এপ্রিল ২০২৫

তৃষ্ণায় বিষ পান

গ্রীষ্মকালে আখের রস জনসাধারণের কাছে এক আশীর্বাদ। প্রচণ্ড রোদে হাঁপিয়ে ওঠা পথচারী কিংবা ক্লান্ত কর্মব্যস্ত মানুষ এক গ্লাস ঠান্ডা আখের রসে যেন শরীরে ফিরে আসে তাৎক্ষণিক প্রশান্তি। সহজলভ্য, সস্তা ও তাজা  পানীয়টি শহর ও গ্রাম উভয় অঞ্চলেই জনপ্রিয়। বিশেষ করে গরমের সময় রাজধানীর অলিগলি, রেলস্টেশন, বাসস্ট্যান্ড কিংবা গ্রামীণ হাট-বাজারে আখের রস বিক্রির হিড়িক পরে যায়। কিন্তু এই আরামদায়ক পানীয়ই যখন অস্বাস্থ্যকর ও বিষাক্ত উপায়ে প্রস্তুত হয়, তখন সেটি প্রশান্তির বদলে ডেকে আনতে পারে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। অধিকাংশ আখের রসই তৈরি হয় ধুলাবালিমাখা রাস্তার পাশে, যেখানে নেই ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি। আখ থেকে রস বের করার মেশিনগুলোও দীর্ঘদিন পরিষ্কার না করেই ব্যবহার করা হয়। এতে জমে থাকা জীবাণু ও পুরনো রসের গন্ধে তৈরি হয় ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার অভয়ারণ্য। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপকৌশল। অধিক লাভের আশায় অনেকে আখকে রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো পানিতে ভিজিয়ে রাখেন, যাতে রস বেশি বের হয়। আবার দীর্ঘক্ষণ রস টাটকা রাখতে অনেকে মেশান ক্ষতিকর কীটনাশক বা কৃত্রিম রং। এসব রাসায়নিক ও জীবাণুসমৃদ্ধ আখের রস পান করলে ডায়রিয়া, টাইফয়েড, হেপাটাইটিস এমনকি ক্যান্সারের ঝুঁকি পর্যন্ত তৈরি হতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি এখনই নিয়ন্ত্রণে না আনলে একটি পুরো প্রজন্ম স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পরবে। তাই এই অসাধু কার্যক্রম বন্ধ করতে এবং সচেতনতা কার্যক্রম জোরদার করতে অবিলম্বে খাদ্যনিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ, সিটি করপোরেশন এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

প্রজ্ঞা দাস
ইডেন মহিলা কলেজ

×